পুরো বছরের হিসাবেই গত সপ্তাহটি ছিল একেবারে ভিন্নতর। এক সপ্তাহে প্রস্তুতি, প্রতীক্ষা আর অর্জন ও আনন্দ একসঙ্গে জীবনের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে যা চুপ করে বসে ভাবলে অন্যতর এক অনুভূতি হয়। প্রথমে পবিত্র রমজান মাসের কথা বলতেই হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বছরভর প্রতীক্ষায় থাকেন এই মাসটির। ভোরে সেহরি খেতে ওঠা, দিনের প্রথম প্রার্থনা, দিনভর পানাহার থেকে বিরত থাকা, সন্ধ্যার আগে ইফতারির জন্য প্রস্তুতি, রাতে মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ আদায়- মোটামুটি এই হলো অধিকাংশ মুসলমানের রমজানের রুটিন। ফলে বছরের এই মাসটি সম্পূর্ণরূপে আলাদা। রমজানের শেষে আসে ঈদের দিনটি। সব শ্রেণীর সব বয়স আর পেশার মানুষের জন্য মন প্রসন্ন করা এক মাহেন্দ্রক্ষণ।
ঈদের আগেই ঈদের আনন্দের মতোই আরেকটি আনন্দ এসেছে গত সপ্তাহে জাতির জীবনে। প্রথমবারের মতো ক্রিকেটের পরাশক্তি ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এটি যে তরুণদের মনে কত বড় সাহস ও প্রেরণা জোগাল তা সহজেই অনুমান করা যায়। রবিবার রাতে ম্যাচ শেষ হওয়ার বহু আগেই মোটামুটি সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। আর এই জয় মানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণও নিশ্চিত হয়ে যাওয়া- এটাও সবার আগে তরুণ প্রজন্মই জেনে গেছেন। খেলা শেষ হওয়ার পরেও টিভিপর্দা থেকে চোখ সরাতে পারছিলাম না। প্রেজেন্টেশন সিরেমনি কখন শেষ হয়ে গেছে। ভারতের চ্যানেলে চলছে ভারত হারের পোস্ট মর্টেম। পর্দাজুড়ে ভারতীয় অধিনায়ক ধোনির উপস্থিতি। প্রশ্নকারীদের বিচিত্র সব জিজ্ঞাসার উত্তর দিয়ে চলেছেন তিনি শান্ত ভঙ্গিতে কখনো হিন্দিতে কখনো ইংরেজীতে। এত বড় ধাক্কা খাওয়ার পর কিভাবে যে মানুষ এমন মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারেন- সত্যিই প্রশংসা করার মতো ব্যাপার। অথচ খেলার মাঠে আগের দিন এই লোকই মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন। বাংলাদেশের নতুন প্রতিভা ক্রিকেটের নতুন প্রাণ মুস্তাফিজের শক্তিমত্তার দিকটি এই ধোনি আগেভাগেই আঁচ করেছিলেন। কিশোরটিকে তার সহ্যই হচ্ছিল না। তাই প্রথম সুযোগেই মুস্তাফিজকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন তিনি। আমার এক মনোস্তাত্ত্বিক বন্ধুর এমনই মত। আমি তার সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশে মোটেও আগ্রহী নই। ভারতের অধিনায়ক প্রতিভাবান বোলার মুস্তাফিজকে ধাক্কা দেন কোটি দর্শকের সামনে। সেই ধাক্কা কিভাবে বুমেরাং হয়ে তার দলকে, বলা অসমীচীন হবে না, তার দেশের কোটি মানুষের মনে ধাক্কা দিল- এমন দৃষ্টান্ত কি খেলায় বার বার মেলে! নিজেকে সংযত রেখে একের পর একে ধোনির উত্তর প্রদানে বেশ বিনোদন পাচ্ছিলাম। উঠতে হলো। এই লেখার জন্য কম্পিউটারের সামনে এসে বসতে না বসতেই মিছিলের শব্দ। রমজান মাসে রাত বারোটায় মহল্লার ভেতর তরুণদের বিজয় মিছিল! ধারণা করি ঢাকার অনেক স্থানেই এমন মিছিল হচ্ছে। ভাবছি নিছক খেলার আনন্দ ও অর্জনের ভেতর দিয়ে মানুষের হৃদয়ে কত সহজেই না দেশপ্রেম জেগে ওঠে। পরিবারের সঙ্গে ইফতারি
বছরভরই ঢাকা শহরে যানজট লেগে থাকে, গণপরিবহনের স্বল্পতা মানুষকে ভোগায়- এ তো আমাদের জানা কথাই। কিন্তু রোজার সময়, আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা অবধি এ দুটি অসহনীয় সঙ্কট সকল সীমা অতিক্রম করে যায়। কর্মস্থল এবং দরকারি কাজে বেরুনো লাখ লাখ ঢাকাবাসীর সবচেয়ে বড় উৎকণ্ঠা হয়ে দাঁড়ায় সময়মতো বাসায় পৌঁছানো; পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ইফতারি করতে পারা বা না পারার বিষয়টি। রোজার সময় অফিসের সময়সূচী সংক্ষিপ্ত করা হয়। সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দুপুরের পর পরই ছুটি হয়ে যায়। সাড়ে তিনটা কিংবা চারটার সময় ঠিক বিকেলও নয়। এ বছর ইফতারির সময়টাও অনেক পিছিয়ে, প্রায় সন্ধে সাতটা। তবু বহু রোজাদার মানুষ সময়মতো ঘরে ফিরতে পারেন না, পথেই তাদের ইফতারি সেরে নিতে হয়। সাধারণত রোজার সময় কর্মজীবীরা কড়াকড়িভাবেই অনুসরণ করেন অফিসের ছুটির সময়টি। পারলে একটু আগেই বের হন। একই সময়ে প্রধান প্রধান সড়কের ওপর যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। একই হারে থাকে জনচাপ। ফলে যানজট নিত্যনৈমিত্তিক। যাত্রীর তুলনায় অনেক কম গণপরিবহন থাকায় যাত্রীদের হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কিও নিত্যনৈমিত্তিক। ওই সময়টায় প্রতিটি বাস স্টপ ছাড়াও রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিপুল সংখ্যক যাত্রী অপেক্ষায় থাকে বাস-মিনিবাসের। অথচ গাড়ি যে স্টপেজ থেকে যাত্রা শুরু করে সেখান থেকেই তা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। তাহলে পরবর্তী স্টপেজ থেকে নতুন যাত্রী উঠবে কিভাবে। ফলে গেটে ও বাম্পারে বাদুড়ঝোলা হয়েই অবস্থান নিতে হয় যাত্রীদের। বিআরটিসির দোতলা বাসগুলোর পেছনের বাম্পারে আট-দশজন যাত্রীর দাঁড়িয়ে থাকার বিপজ্জনক দৃশ্য শুধু রোজার মাসেই দেখা যায়। মিরপুর- মোহাম্মদপুর এবং উত্তরার যাত্রীদের জন্য ফার্মগেট একটি সেন্টার প্লাস। সেখানে হাজারো যাত্রীর ভিড় লেগেই থাকে। উত্তরাগামী বাসের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। দ্বিতীয় রোজার দিন পড়েছিল শনিবার, সরকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠানেরই সেদিন ছুটি থাকে। বিকেল পাঁচটায় উত্তরাগামী একমাত্র এসি বাসের জন্য প্রতীক্ষায় থাকা যাত্রীদের লাইন ছিল এতটাই দীর্ঘ যে সব যাত্রীকে তুলতে হলে দুটো পুরো খালি বাসের প্রয়োজন। অথচ মতিঝিল থেকে ছেড়ে আসা এসি বাসগুলো সেখান থেকেই ভরে আসে। মাঝখানে শাহবাগ পয়েন্টেও বহু নিয়মিত যাত্রী অবস্থান করে। তাহলে ফার্মগেটের যাত্রীদের কী উপায় হবে! গাদাগাদি ঠাসাঠাসি করে তবু পাঁচ-সাতজন করে যাত্রী উঠে যান একেকটা বাসে। আমরা রাস্তা তেমন বাড়াতে পারছি না, তবে চাইলে রোজার মাসে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়তি কিছু বাস বরাদ্দ করা তো অসম্ভব নয়। রুটিন যানজটের ভেতর সেই বাসগুলো আরো খানিকটা জট লাগাবে সন্দেহ নেই, পড়ন্ত বিকেলে শুকনো মুখে রোজাদারদের তবু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষার কষ্টের কিছুটা লাঘব নিশ্চয়ই হবে।
ইফতারির আইটেম
প্রতিবছর রমজান শুরু হওয়ার আগে থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে কী করে! তবে রাতারাতি সবজির দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ইফতারিতে যেসব সবজি লাগে- শসা ও বেগুনের দাম এক লাফে অনেকটা বেড়ে গেছে। পিঁয়াজ আর ছোলার দামও বাড়তির দিকে। কিছুটা অবিশ্বাস্য শোনাবে যদি বলি আমাদের এলাকার সকল মিষ্টির দোকানের সব দই প্রথম রোজায় দিনেই শেষ হয়ে যায়। সাদা ও মাটি রঙের প্লাস্টিকের বাটিতে প্যাক করে দুটো প্রতিষ্ঠান দই সরবরাহ করে থাকে। সেসব প্রতিষ্ঠানের দইও পয়লা রমজানেই ফুরিয়ে যায়। এমনকি কয়েকটি গলির ভেতরের দোকানে খুঁজেও সেই দই পাওয়া যায়নি বলে জানান এক পরিচিত ব্যক্তি। স্ত্রীর কাছে তার মুখ রক্ষা হয়নি। তার এ কথাটিও প্রথমে শুনে বিশ্বাস করে উঠতে পারিনি। তিনি জানান, ইফতারির এক ঘণ্টা আগে তিনি এলাকার নামী দুটি রেস্টুরেন্টের ইফতারি-বাজারে গিয়ে দেখেন বেশিরভাগ আইটেমই শেষ হয়ে গেছে।
জিলাপির প্যাঁচ মানুষের চারিত্র্যিক বৈশিষ্ট্য বোঝাতেও অনেক সময় ব্যবহৃত হয়। রমজানে জিলাপির গল্প অল্প করে বলি। লাগাতার জিলাপি ভাজা চলছে। ক্রেতার চাহিদা মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিক্রেতারা। ভদ্রলোক বললেন, জিলাপি কেনার আশায় তিনি একটি দোকানে জিলাপির পাত্রের সামনে দাঁড়ানোর সুযোগই পাননি। অন্তত আটজন ছিলেন সেই পাত্রটি ঘিরে। বিক্রেতা চেয়েছিলেন যে কয়জন ক্রেতা রয়েছে সবাইকে কিছু কিছু জিলাপির ভাগ দিতে। তার সদিচ্ছাটি মাঠে মারা গেল। কেউ কেউ রীতিমতো অভদ্রের মতো পরিমাপক যন্ত্র থেকেই থাবা দিয়ে জিলাপির প্যাকেট নিজের কব্জায় নিয়ে নেন। সত্যিই অবিশ্বাস্য! ত্যাগ ও সংযমের মাসে কোন কোন মানুষ এমন পরিচয়ও রাখছেন?
ফেসবুকে ঢাকার কড়চা
ঢাকার দিনরাতের অভিজ্ঞতা নিয়ে নানাজনে বিচিত্র পোস্ট দেন ফেসবুকে। এই কলামে কখনও কখনও আমরা সেখান থেকে চয়ন করে পাঠকদের সামনে পরিবেশন করে থাকি। আমার সাবেক সহকর্মী, বর্তমানে এটিএন নিউজের সাংবাদিক ইশরাত জাহান ঊর্মি রমজানে ঢাকার চিত্র নিয়ে যে পোস্ট দিয়েছেন সেখান থেকে অংশবিশেষ তুলে দিচ্ছি। তিনি লিখেছেন : ‘রোজা আসিচ্ছে...’
একটা ভোগবাদী, আনকালচার্ড এবং আদাখলেপনার সোসাইটির চেহারা কি হতে পারে তা এদেশে বিশেষত: রমজান মাস এলে ঢাকা শহরে খুব ভাল করে বোঝা যায়। মাসটা আসার আগে গত কয়েকটা দিন পত্রিকাগুলো ভরা একই ধরনের খবরে। সবজির দাম বাড়ছে, বেগুনের দাম বাড়ছে, কাঁচা মরিচের পাল্লা ৩০০ টাকা। তারপর রোজা আসার পরে ইফতারের আয়োজন। টেলিভিশনগুলোয় লাইভ দেখাচ্ছে ইফতারের বাজার। এর ফাঁক-ফোকর দিয়ে অতিকষ্টে রোজার ফজিলত, রোজার সংযম... ইত্যাদি জায়গা করে নিলেও সেসব দ্রষ্টব্য আকারে ছাপাও হয় না বা প্রচার হয় না আবার আমরাও অসব অতটা দেখতে আগ্রহী না। তার চেয়ে বেইলী রোডের নতুন আইটেম কি অথবা স্টার কাবাবের- সেসব জানলে সময় আর পকেটের রেস্ত হিসাব করা যায়।
...আপনারা আধুনিক হয়েছেন একটু মোডিফায়েড খাবার খাবেন। একটু হোটেল-রেস্টুরেন্ট। কিন্তু তাই বলে ইফতারের চারঘণ্টা আগে থেকে বেইলী রোড আর ধানম-ির দোকানগুলোর সামনে গাড়ির লম্বা লাইন লাগাতে হবে? এইসব দোকানে গেলে যে কোন মানুষ, যার একটু স্বাভাবিক জ্ঞান-বুদ্ধি আছে, বুঝবেন যে, যত ঘুষখোর অফিসারগুলো আছে, গায়ে সফেদ পাঞ্জাবি আর মুখে সারাদিন না খাওয়াজনিত দুর্গন্ধ নিয়ে হামলে পড়ছেন ইফতার সামগ্রীর ওপর। তাদের কাছে রোজা মানে ভালো খাওয়া-দাওয়া।...
বাবা দিবসে
আমরা এমন কিছু দিবস মহাসমারোহে উদযাপন করি যে দিবসগুলো এক-দুই দশক আগেও পালিত হতো না এমন ঘটা করে। যেমন ধরুন ভালোবাসা দিবস, মা দিবস। এই প্রতিযোগিতায় পেছনে পড়ে থাকলেও বাবা দিবস আস্তে আস্তে বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বহু বাবার মনে এই দিবসটি আলাদা এক গর্ব ও সুখ বয়ে আনে। আর কোন বাবার বিবাহিত কন্যা যদি স্বামী-সন্তানসহ বাবা দিবস পালনে উদ্যোগী হয় তবে তো কথাই নেই। বুড়ো বাবা নাতির সঙ্গে নিজ কন্যার শিশুকালের গল্প করেও আশ্চর্য এক ভালোলাগায় সিক্ত হন। আমার এক বন্ধুর তিন কন্যা। কন্যারা এখনও শ্বশুরবাড়ি যাননি। তিন বোনের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে রীতিমতো কে বাবাকে কতটা ইমপ্রেস করতে পারে এই দিনে। তবে বাবা দিবসে আমরা যদি নিজ বাবার প্রতি কী কর্তব্য পালন করছি এমন একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারি তাহলে সেটাই হবে অর্থপূর্ণ।
স্মার্ট কার্ডে স্মার্ট চুরি
ইউরোপে গণপরিবহনে এমন ব্যবস্থা রয়েছে। পরিবহন কার্ড সংগ্রহ করে তাতে রিচার্জ করতে হয়। বাসে ওঠা ও নামার সময় সেই কার্ড পাঞ্চ করে যাত্রার ব্যয় মিটাতে হয়। কার্ডে অর্থ না থাকলে তাকে গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে কার্ড রিচার্জ করে নিয়ে আসতে হয়। যিনি যতটুকু ভ্রমণ করবেন তাকে ঠিক ততটাই অর্থ প্রদান করতে হয়। ঢাকায় ‘স্মার্ট ক্যাশ পেমেন্ট কার্ড’ অনেক আগে চালু হলেও এটির বিশেষ প্রচারণায় নেমেছে বিআরটিসির এসি বাসের পরিচালনা কর্তৃপক্ষ। অথচ তাদের সিস্টেমে কিছু গলদ দূরই হচ্ছে না। ইউরোপের মতো ঢাকার বাসের সঙ্গে আটকানো থাকে না কার্ড পাঞ্চের যন্ত্র, এটি থাকে আলগা। ফলে এই মিনি যন্ত্র গলায় ঝুলিয়ে বাসের ভেতর হেঁটে বেড়ান সুপারভাইজার। যন্ত্রটি আকস্মিকভাবে বিকল হয়ে গেছে বলে ঘোষণা দিয়ে যাত্রীদের কাছে নগদ ভাড়ার টাকা চাওয়া হলো সেদিন। যাত্রীরা বুঝলেন পুরো টাকাটা মেরে দেয়ার তাল করছেন ওই লোক। মেশিন নষ্ট তার একটি অজুহাত। এ তো গেল কর্মচারীদের দুর্নীতি। এরপর আছে মেশিনের ভীমরতি। আবদুল্লাহপুর টু মতিঝিলের এসি বাসে উঠেছি সেদিন সূচনা স্টপেজ থেকেই। গাড়ি ছাড়ার দুই মিনিটের মধ্যে দেখা গেল এক পাশের কোন এসি কাজ করছে না। রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চালক ফোনে আরেকটি খালি গাড়ি পাঠানোর অনুরোধ করলেন। গাড়ি এলে যাত্রীরা আবার কার্ড পাঞ্চ করলেন। এক ভদ্রমহিলা এরপরই রাগারাগি শুরু করলেন। তিনি জানালেন, আগে ও পরের দুটি বাসের মেশিনই দু’দুবার তার টাকা কেটে রেখেছে। কার্ড পাঞ্চ করলেই টাকা কাটার নিয়ম নেই। যাত্রী গাড়িতে উঠে কার্ড পাঞ্চ করবেন, এরপর তার গন্তব্যে পৌঁছে আবার কার্ড পাঞ্চ করলেই নির্ধারিত অর্থ কার্ড থেকে কেটে রাখা হবে। অথচ এক্ষেত্রে চরম অনিয়ম হলো। ভদ্রমহিলার চেঁচামেচি শুনে আমার কার্ডটি সুপার ভাইজারের হাতে দিয়ে বললাম, দেখুন কার্ডে কত টাকা আছে। তিনি পাঞ্চ করলেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার কার্ড থেকে আবারও টাকা কেটে নেয়া হলো। অর্থাৎ এক যাত্রায় আমাকে তিন দফা টাকা গুনতে হলো। ভদ্রমহিলা চেক না করলে এই অব্যবস্থাপনা, বলা ভাল এই চুরি ধরা পড়ত না। স্মার্ট কার্ড দিয়ে এই স্মার্ট চুরি বন্ধ না হলে কর্তৃপক্ষ আগামীতে বড় বিপদে পড়বেন, এটুকু সতর্ক করা যেতে পারে বোধহয়। কথা হচ্ছে এদের কর্মকাণ্ড মনিটরিংয়ের জন্য সরকারের তরফ থেকে কেউ নিয়োজিত নেই?
২২ জুন ২০১৫
[email protected]
শীর্ষ সংবাদ: