ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিরিজ জয়ে দারুণ খুশি মরগান

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২২ জুন ২০১৫

সিরিজ জয়ে দারুণ খুশি মরগান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দারুণ খুশি তার হওয়ারই কথা। দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপ শেষে ওয়ানডে অধিনায়ক ইয়ন মরগানের এটি ছিল প্রথম সিরিজ। জো রুট-জনি বেয়ারস্টোর উদ্ভাসিত নৈপুণ্যের সৌজন্যে শেষ হাসি ইংলিশদের। পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে বিশ্বকাপ ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ডকে ৩ উইকেটে হারিয়ে ৩-২এ সিরিজ পকেটে পুড়ল বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড। ‘সিরিজজুড়ে যা ঘটল তা সত্যি ব্যতিক্রম, গত কয়েক বছর আামাদের এমনটা খুব কমই হয়েছে। মাঠে তারুণ্য নির্ভর দল খেলেছে বদলে যাওয়া ক্রিকেট। আমি দারুণ খুশি।’ বলেন মরগান। বাংলাদেশের কাছে হেরে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল কুলীন ইংলিশরা। এরপর ভেতরে-বাইরে ঘটে যায় নানান ঘটনা, দলে আনা হয় ব্যাপক পরিবর্তন। সিরিজ ২-২ থাকায় চেস্টার-লি-স্ট্রিটের শেষ ম্যাচটি হয়ে উঠেছিল অঘোষিত ফাইনাল। যা উত্তাপ ছড়িয়েছে যথেষ্ট। ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও তারকা ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসনের দুটি লড়াকু হাফ সেঞ্চুরির সৌজন্যে। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮৩ রান সংগ্রহ করে কিউইরা। ৭৩ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন কিউইদের বিশ্বকাপ-হিরো গাপটিল। উইলিয়ামসন ৬৫ বলে ৫০-এর সঙ্গে অভিজ্ঞ রস টেইলর ৬৩ বলে ৪৭ ও তরুণ বেন হুইলারের ২৮ বলে অপরাজিত ৩৯ রান উল্লেখ্য। এরপর বৃষ্টি এলে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে ২৬ ওভরে ১৯২ রানের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারিত হয়। এক পর্যায়ে ৪৫ রানে ৫ উইকেট হারানো ইংলিশদের দুরন্ত জয়ের নায়ক জনি বেয়ারস্টো। ছয় নম্বরে নেমে অপরাজিত ৮৩ রান জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। সিরিজে প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া ২৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের ইনিংসটি ১১ চার দিয়ে সাজানো। বেয়ারস্টোর প্রশংসা করে অধিনায়ক বলেন, ‘দিনটা ওর জন্য ব্যতিক্রম। সুযোগটাকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আসল কাজটা বেয়ারস্টোই করেছে।’ প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের আগ্রাসী ক্রিকেটের কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন ইংলিশ সেনাপতি। ‘কিউইরা লড়াকু দল। যে কোন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। বিশ্বকাপে সেটি দেখেছি। ম্যাককুলামরা আমাদের জন্য সিরিজ জেতাটা কঠিন করে তুলেছিল।’ আসলেই তাই। টেস্ট সিরিজ ১-১এ ড্র হওয়ার পর, ওয়ানডেটা আসলেই জমে উঠেছিল। লড়াই হয়েছে সেয়ানে-সেয়ানে। প্রথমে এগিয়ে গিয়েছিল স্বাগতিকরাই। এরপর টানা দুই জয়ে ঘুরে দাঁড়ায় কিউইরা। চতুর্থ ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ে সমতা ফেরায় ইংলিশরা। প্রথমটি বাদে প্রতি ম্যাচই ছিল আকর্ষণীয়। ব্যাটসম্যানদের দাপটে চিত্তাকর্ষক ক্রিকেটই দেখেছে বিশ্ব। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে বয়েছে রানের বন্যা। সিরিজে দু’দল মিলে তুলেছে ৩১৫১ রান, কোন দ্বিপক্ষীয় সিরিজে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড এটিই! আগেরটি ছিল ভারত-পাকিস্তান সিরিজের ২৯৬৩, (২০০৩-০৪)। ২ সেঞ্চুরি ও ১ সেঞ্চুরির সাহায্যে ৭৯ গড়ে ২৭৪ রান করে আলো ছড়িয়েছেন জো রুট। ফর্মের তুঙ্গে থাকা ইংলিশ উইলোবাজ আবারও বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন তাকে দেশটির ভবিষ্যতের কিংবদন্তি ভাবা হয়। ‘লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট’- সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মরগান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩২২ রান তার। সর্বোচ্চ রান অবশ্য সিরিজসেরা কেন উইলিয়ামসনের। ৭৯ গড়ে ৩৯৬ রান কিউই তারকার। ২ সেঞ্চুরিতে ফর্মে ফেরা অভিজ্ঞ রস টেইলর সংগ্রহ ৩৭৫। ৯ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ শিকারি স্বাগতিক পেসার বেন স্টোকস। ৮টি করে উইকেট অপর দুই ইংল্যান্ড বোলার স্টিভেন ফিন ও আদিল রশিদের। মঙ্গলবার ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত হবে একমাত্র টি২০। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড ইনিংস ২৮৩/১০ (৫০ ওভার; গাপটিল ৬৭, উইলিয়মসন ৫০, টেইলর ৪৭, ইলিয়ট ৩৫, হুইলার ৩৯*, সাউদি ১৮; স্টোকস ৩/৫২, রশিদ ২/৪৫, উইলি ২/৫২, ফিন ২/৭৩) ইংল্যান্ড ইনিংস ১৯২/৭ (২৫ ওভার; বেয়ারস্টো ৮৩*, বিলিংস ৪১, স্টোকস ১৭, রশিদ ১২*; স্যান্টনার ৩/৩১, হুইলার ২/৩৩, হেনরি ১/৩৭) ফল ॥ ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে জয়ী (বৃষ্টি আইনে)। ম্যাচসেরা ॥ বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড) সিরিজ ॥ পাঁচ ওয়ানডের সিরিজ ইংল্যান্ড ৩-২এ জয়ী সিরিজসেরা ॥ উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)
×