ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন সার্বিয়া

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২১ জুন ২০১৫

ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন সার্বিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনুর্ধ-২০ বিশ্বকাপে ফেবারিট হিসেবেই খেলতে নেমেছিল ব্রাজিল। টুর্নামেন্টজুড়ে দাপট দেখিয়েই ফাইনালে উঠে তারা। শনিবার ফাইনালে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল মুখোমুখি হয়েছিল সার্বিয়ার বিপক্ষে। কিন্তু তুলনামূলকভাবে খর্বশক্তির দল সার্বিয়ার বিপক্ষেই স্বপ্ন ভাঙল সেলেসাওদের। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে সার্বিয়া ২-১ গোলে রোমাঞ্চকরভাবে পরাজিত করে ব্রাজিলকে। সেইসঙ্গে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রথমবারের মতো অনুর্ধ-২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল সার্বিয়া। গতবার নিজেদের মাটিতে বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল ব্রাজিল। সিনিয়রদের সেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৭-১ গোলে হেরে ষষ্ঠবারের মতো শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় সেলেসাওদের। যে কারণে জুনিয়রদের বিশ্বকাপ জেতাটাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্নও ভেঙ্গে চুরমার করে দিল সার্বিয়া। শনিবার ফাইনালের মঞ্চে প্রথমে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। তবে সমতায় ফিরতে খুব বেশি সময় লাগেনি তাদের। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো খেলায় শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। আর তাতেই স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় ডুবে নেইমার-আলভেজদের উত্তরসূরিরা। অনুর্ধ-২০ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ষষ্ঠবারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। এবার তাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার সঙ্গে যৌথভাবে ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের হাতছানি ছিল তাদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসে সার্বিয়া। শনিবার প্রথমার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ আর পাল্টা-আক্রমণ করে খেলতে থাকে দুই দল। তবে প্রথমার্ধে কোন দলই গোলের দেখা পায়নি। ফলে গোলশূন্য অবস্থা থেকেই বিরতিতে যায় রোজারিও মাইকেলের ব্রাজিল আর পাউনোভিচের সার্বিয়া। বিরতির পরই যেন জ্বলে উঠে সার্বিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের ৭০ মিনিটেই লিড পায় তারা। সেলেসাওদের পেছনে ফেলে দলকে এগিয়ে নেয়ার কাজটা করেন সার্বিয়ান ফুটবলার স্টানিসা মানদিচ। তবে সমতায় ফিরতে খুব বেশি সময় নেননি পেলে-রোনাল্ডোদের জুনিয়ররা। গোল হজমের মাত্র তিন মিনিট পরই সমতায় ফেরে তারা। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান আন্দ্রেস পেরেইরা। নির্ধারিত সময় শেষে আর কোন গোল হয়নি। ফলে ১-১ ব্যবধানে সমতায় থেকেই শেষ হয় ম্যাচ। সমতায় থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো খেলায় ১১৮ মিনিটে সার্বিয়ার জার্সিতে গোল করেন নেমাঞ্জা মাকসিমোভিচ। পিছিয়ে পড়ে আপ্রাণ চেষ্টায় মাতে ব্রাজিল। কিন্তু এরপর অনেক চেষ্টা করেও আর সমতায় ফিরতে পারেনি তারা। যে কারণে ২-১ গোলের পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় যুব বিশ্বমঞ্চের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকা ব্রাজিলকে। অনুর্ধ-২০ বিশ্বকাপে এর আগেও শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল সার্বিয়া। ১৯৮৭ সালে প্রথমবারের মতো এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে তারা। কিন্তু স্বাধীন দেশ হিসেবে সার্বিয়ার এটাই প্রথম শিরোপা। যুব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই সার্বিয়া এখন উৎসবের নগরী। তবে ব্রাজিলের মতো সফল দলকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসটা যেন একটু বেশিই। তাই তো ম্যাচ শেষেই নিজেদের সৌভাগ্যবান হিসেবে দাবি করেন সার্বিয়ার কোচ ভেজকো পাওনোভিচ। আর এটা ফুটবলেরই অংশ। এ বিষয়ে ভেজকো পাওনোভিচ বলেন, ‘আমরা যে কি পরিমাণ সৌভাগ্যবান, তা আপনাদের বলে বুঝাতে পারব না। তবে এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে সৌভাগ্য জিনিসটা খেলারই অংশ। সৌভাগ্যবান হওয়ার কপালটাও তো আপনার থাকতে হবে। এটাই বড় বিষয় বিশ্বকাপ জিততে চেয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত তারা দেখাতে সক্ষম হয়েছে।’
×