ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রাণিকুলের বিলুপ্তির নবপর্ব শুরু

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২১ জুন ২০১৫

প্রাণিকুলের বিলুপ্তির নবপর্ব শুরু

পৃথিবীতে ষষ্ঠবারের মতো প্রাণিকুলের বিলুপ্তির পর্যায় শুরু হয়েছে এবং প্রাণিকুল আগের চাইতে প্রায় একশ’গুণ বেশি দ্রুততার সঙ্গে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এর মধ্যে মানুষই প্রথম বলি হতে পারে। স্ট্যানফোর্ড, প্রিসটন এবং বার্কলির ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে পরিচালিত এক সমীক্ষায় বলা হয়, সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে ডায়নোসরদের অবলুপ্তির ঘটনার পর থেকে এত দ্রুত হারে আর প্রজাতিগুলো হারিয়ে যায়নি। প্রাণী প্রজাতির অবলুপ্তির কারণগুলোর মধ্যে আছে জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ, বন উজার। খবর এএফপি ও বিবিসির। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ব বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক ও সমীক্ষার যুগ্ম-প্রণেতা পল এহরলিচ বলেন, সমীক্ষায় ‘সন্দেহাতীতভাবে দেখা যায়, আমরা এখন ষষ্ঠ বিশাল প্রাণী, বিলুপ্তির পর্বে প্রবেশ করেছি। সায়েন্স এ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষায় প্রধান লেখক জেরার্ডো সেবালস বলেন, ‘বিলুপ্তির এই ধারা অব্যাহত থাকলে প্রাণসত্তাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে লাখ লাখ বছর লেগে যাবে এবং আমাদের প্রজাতি এর অনেক আগেই বিলীন হয়ে যাবে।’ এই বিশ্লেষণ ফসিল রেকর্ড এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক তথ্য উপাত্ত থেকে মেরুদ-ী প্রাণী অথবা ব্যাঙ, সীরসৃপ অথবা বাঘের মতো দেহাভ্যন্তরের কঙ্কালযুক্ত প্রাণীর তথ্যভিত্তিক বিলুপ্তিকে ভিত্তি করে করা হয়েছে। প্রজাতিগুলোর বিলীন হওয়ার আধুনিক হারকে মানবজাতির তৎপরতার প্রাধান্য বিস্তারের আগে প্রজাতি বিলীন হওয়ার প্রাকৃতিক হারের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এই হার, যা পশ্চাদপর্ব হার বলেও পরিচিত-সেটি হিসাব করা কঠিন হতে পারে, কারণ মানুষ সঠিকভাবে জানে না পৃথিবীর সাড়ে চার শ’ কোটি বছরের ইতিহাসে কি ঘটেছিল। সমীক্ষায় বলা হয়, যদি অতীতের হার হয় প্রতি এক শ’ বছরে প্রতি ১০ হাজার প্রজাতির মধ্যে দুটি স্তন্যপ্রায়ী প্রাণীর বিলুপ্তি, তবে গত একশ’ বছরে মানুষের সক্রিয়তা ছাড়াই মেরুদ-ী প্রাণী প্রজাতির গড়পড়তা হারানোর হার হবে ১১৪ গুণ বেশি। আমরা জোর দেই যে, আমাদের হিসাব খুব সম্ভবত বিলুপ্তি সঙ্কটের তীব্রতাকে কম করে দেখাবে কারণ আমাদের লক্ষ্য জীববৈচিত্র্যের ওপর মানবজাতির প্রভাবকে বাস্তবসম্মত নিম্ন পর্যায়ে সীমিত রাখা। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের মতে সকল উভচর প্রজাতির প্রায় ৪১ শতাংশ এবং সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীর ২৬ শতাংশ বিলুপ্তির হুমকির মুখে দাঁড়িয়েছে। এহরলিচ বলেন, বিশ্বের সর্বত্র অনেক প্রজাতির দৃষ্টান্ত আছে যারা মূলত জীবন্মৃত।’ সমীক্ষায় ইতিমধ্যে বিপন্ন হয়ে পড়া প্রজাতিগুলো সংরক্ষণ এবং তাদের ওপর চাপ হ্রাস করার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। এতে বিশেষ করে তাদের স্বাভাবিক আবাসস্থল রক্ষা করা আর্থিক লাভের জন্য অতিরিক্ত সংখ্যায় তাদের নিধন বন্ধ করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
×