ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মানস ঘোষ

জঙ্গীদেশ গড়ার লক্ষ্যেই মামুনদের ওরা হত্যা করতে চায়

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২০ জুন ২০১৫

জঙ্গীদেশ গড়ার লক্ষ্যেই মামুনদের  ওরা হত্যা করতে চায়

আমার বিশিষ্ট বন্ধু মুনতাসীর মামুনকে ইসলামবিরোধী আখ্যায়িত করে বাংলাদেশের পাকপন্থী জিহাদী জামায়াতীরা হত্যা করার যুক্তি খাড়া করছে। তিনি বহু বছর ধরেই জিহাদীদের নিশানায় আছেন। বছর দশেক আগে তিনি যখন ঢাকার ইস্পাহানি কলোনির বাংলোবাড়িতে থাকতেন তখন কী ভাষায় হুমকি পেতেন তা শুনিয়েছিলেন তাঁর মোবাইল ফোনে। সেই কদর্য ভাষা শুনে আমি এতটাই হতবাক হয়ে যাই যে, তাঁকে সাহস যোগাবার কোন ভাষা খুঁজে পাইনি। তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন এই আশঙ্কার কথা আমি তাঁকে সামনাসামনি বা ফোনে বহুবার জানিয়েছি। সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বুদ্ধিজীবী হত্যার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলাম, ‘আপনাকে খুব সাবধানে থাকতে হবে। কেননা, দেশকে আপনার অনেক কিছু দেয়ার বাকি আছে।’ তিনি হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলতেন, ‘মানুষ জন্মায় একবার, মরে একবার।’ এখন মনে হচ্ছে আমার ভবিষ্যদ্বাণী ভুল ছিল না। মামুন ইসলামবিরোধী বলে ফেসবুক ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে জিহাদীরা পরিকল্পিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের মুসলিম জনমানসে এমন একটা ধারণা সৃষ্টি করা যাতে ভবিষ্যতে তাঁর ওপর প্রাণঘাতী হামলা হলে তাকে যুক্তিযুক্ত বলে প্রতিপন্ন করা যায়। কারণ মুক্তমনা লেখক অভিজিত রায়, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাশ ও রাজীব হায়দারের ক্ষেত্রে ঠিক এমনটাই ঘটেছিল। তাঁদেরও শিরñেদের আগে ফেসবুকে জিহাদীরা ঢেঁড়া পিটিয়ে ঘোষণা করেছিল যে, এরা সবাই ইসলামের শত্রু, যার জন্য এদের নাম খতম তালিকায় তোলা হয়েছে। আর পাকপন্থী জিহাদীরা তাদের সময়-সুযোগমতো সেই তালিকা ধরে তাদের হুমকি কার্যকর করেছে। সুতরাং মানুষকে দেয়া প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি কোন ফাঁকা আওয়াজ নয়। একে যথার্থ গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা বাংলা নামে দেশের বিরোধিতা করেছিল আজ তাদের অনেকেই দেশের জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে নস্যাৎ করতে অত্যন্ত সক্রিয়। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হলেও দেশের রাজনীতি, সামরিক বাহিনী ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদ এখন তাদের দখলে। বাংলাদেশের জিহাদীরা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় গত কয়েক বছর ধরে প্রচুর শক্তি সঞ্চয় করেছে এবং তাদের হালকাভাবে নেয়াটা মূর্খামির কাজ হবে। কারণ বাংলাদেশের এসব গোষ্ঠীর সদস্যরা আফগানিস্তান, চেচনিয়া, বসনিয়া ও ইরাকে ইসলামের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিয়ে জিহাদী কর্মকা-ের ব্যাপারে প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। মনে রাখতে হবে, একাত্তরে বাঙালী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা পাকিস্তান সেনাবাহিনী করেনি, করেছিল পাকপ্রেমী ভাবধারায় দীক্ষিত বাঙালী যুবকরা, যারা ঘাতক আলবদর, আলশামস বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিল। পাকিস্তানের ধর্মান্ধ রাজনীতিকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তারা পিন্ডির নির্দেশে বাঙালী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে, যাতে স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করে দেয়া যায় এবং দেশে উদারমনস্কতার অবসান ঘটে। সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশটি জঙ্গীকরণ করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। যাঁদের হত্যা করা হয় তাঁরা সবাই ছিলেন বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। মননে ও সৃজনশীলতায় তাঁরা ছিলেন একেকজন দিকপাল, যাঁদের শূন্যস্থান পূরণ আজ অবধি সম্ভব হয়নি। এঁদের মধ্যে যে আদর্শটি সমুজ্জ্বল ছিল তা হলোÑ মুক্তচিন্তা, বাঙালী জাতীয়তাবাদ এবং অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও সমাজনীতির প্রতি অবিচল আস্থা ও পাকিস্তানী শোষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা ও প্রতিবাদ। যার জন্য তাদের সবাইকে আলবদর, আলশামস বাহিনী নিশানা করে। অভাবনীয় ব্যাপার হলো, মুনতাসীরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ফেসবুকে ছড়ানোর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে জানা গেল যে, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে পাকপন্থী একটি জিহাদী গোষ্ঠী বাংলাদেশে বিশিষ্ট পঁচিশজনকে কতল করার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এঁদের অন্যতম হলেনÑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকসহ চার মুক্তমনা অধ্যাপক, প্রখ্যাত কল্পবিজ্ঞান লেখক ও প্রযুক্তিবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও সংগঠক শাহরিয়ার কবির এবং শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের প্রধান ও চিকিৎসক ইমরান এইচ সরকার। এঁদের যে কারণে হুমকি দেয়া হয়েছে তা হলো, বাংলাদেশকে জঙ্গীকরণের পথে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযুক্তিকরণের পথে এঁরা অন্তরায়। এঁরা সবাই একাত্তরের ঘাতকদের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করে চরম শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। মিরপুরের কসাই কাদের মোল্লাকে যুদ্ধাপরাধী ট্রাইবুন্যাল ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়ায় তাঁরা শাহবাগে এর বিরুদ্ধে এক গণআন্দোলন গড়ে তোলেন, যার চাপে বিচারের রায় পুনর্বিবেচনার পর তার মৃত্যুদ-ই বহাল হয়। যার ফলে তাঁরা পাকপন্থী জামায়াতীদের রোষানলে পড়েন। মামুন ও শাহরিয়ারের ব্যাপারে পাকপন্থীদের বৈরিতার মূল কারণ হলো, যখন বাংলাদেশের এক বিশাল জনসমষ্টি দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি প্রায় ভুলতে বসেছিল তখন এই দুই বুদ্ধিজীবী ২০০৮-এর সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের নিয়ে শেখ হাসিনার নির্বাচনী জোটের প্রচারে এই বিষয়টিকে মূল নির্বাচনী ইস্যু করে তোলেন এবং প্রচুর লেখালেখির মাধ্যমে এর সপক্ষে জনমত গঠনে এক সক্রিয় ভূমিকা নেন। ২০১৪ সংসদীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে খালেদা ও জামায়াতীরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। সেই সময় তারা ধর্মের নামে উন্মাদনা সৃষ্টি করে শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় ফেলে দেশে এক চরম অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে মুসলিম জনমানসকে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করলে মামুন, শাহরিয়ার, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ও স্বদেশ রায়ের মতো সাহসী বিশিষ্টজনেরা শেখ হাসিনার হয়ে কলম ধরেন। তখন দেখা গেল বাংলাদেশের সুশীল সমাজের তাবড় তাবড় নামকরা বিদ্বজ্জনেরা, যারা শেখ হাসিনার দ্বারা পুরস্কৃত হয়েছেন, তাঁরাও অবস্থা বেগতিক দেখে সিঁটিয়ে যে যার নিজের গর্তে ঢুকে পড়েছেন। খালেদা ও জামায়াতের পেট্রোলবোমার ভয়ে লেখালেখি তো দূরের কথা, তারা কেউ সাহস করে খালেদা-জামায়াতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোন বক্তব্যও রাখেননি। বরং বেশ কয়েকজন পক্ষ বদল করে খালেদা-জামায়াত জোটের দিকে চলে যাওয়ার প্রক্রিয়া পর্যন্ত শুরু করেছিলেন। মামুনের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো এবং পঁচিশজন বুদ্ধিজীবীকে হত্যার হুমকি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি মৌলবাদী জামায়াতীদের একটি সুপরিকল্পিত কৌশলের অংশ মাত্র। যেসব পাকপন্থী শক্তি বাংলাদেশকে পুরোপুরি একটি জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে রীতিমতো ছক কষে এগোচ্ছে তাদের বিশ্বাস, মামুন ও শাহরিয়ারের মতো বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করলে উদার ও প্রগতিশীল বাঙালীরা ভয়ে ও বাধ্য হয়ে তাদের চিন্তাভাবনায় রাশ টানবে এবং জঙ্গীদের কাতারে যোগ দেবে। এই হুমকি দিয়ে হত্যাকা-ের উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে ‘পলিটিক্যাল ইসলাম’ ও ‘মিলিট্যান্ট ইসলাম’-কে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পথকে সুগম করা। তাদের আরও একটি উদ্দেশ্য হলো বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পাশাপাশি দেশকে সংখ্যালঘুশূন্য করা। যে কারণে যখনই গণহত্যাকারীদের ফাঁসির দ-াদেশ কার্যকর করা হচ্ছে তখনই খালেদা ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের বাড়িঘর লুটপাট করে, আগুন ও গানপাউডার দিয়ে ধূলিসাৎ করছে এবং তাদের মহিলাদের ধর্ষণ করছে। তাদের আসল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের ৩৫টি সংসদীয় আসনে, যেখানে সংখ্যালঘুরাই নিয়ামক শক্তি, সেখানে সংখ্যালঘুদের হাসিনাকে জিতিয়ে ক্ষমতায় আনার ধারাকে অতিসত্বর সমাপ্ত করা। আর পাশাপাশি লাগোয়া ভারতীয় প্রদেশে জঙ্গীদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করে সেখানকার জনবিন্যাসের চরিত্র আমূল বদলে দিয়ে সেই রাজ্যেও কৌশলে ক্ষমতায় যাওয়া। যদিও সংসদীয় নির্বাচনে জামায়াতের প্রাপ্ত ভোট শতাংশের নিরিখে তিনের মধ্যেই সীমিত এবং দলটি কখনও সংসদে এককভাবে তিন থেকে চারটির বেশি আসন পায়নি। দলটির নেতৃত্বও বুঝতে পেরেছে সংসদীয় রাজনীতিতে সাফল্য পেতে হলে ধর্মকে ব্যবহার করে ‘পলিটিক্যাল ও মিলিট্যান্ট ইসলাম’-এর ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে আইএসের আগ্রাসন থেকে তারা অনুপ্রেরণা পাচ্ছে। সেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে দেখে আসছি বাংলাদেশের রাজনীতিক ও সেনাবাহিনীর অফিসারদের মধ্যে ভোলবদল ও পাল্টি খাওয়ার ধারা। এককালে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ধারক ও বাহক বলে পরিচিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তীকালে দেখা গেল তারা পাকপন্থীদের সঙ্গে শুধু ওঠাবসাই নয়, দহরম-মহরমও শুরু করেছেন। রাজনীতিকদের মধ্যে যে ‘বদলুর’ নাম প্রথমে আসে তিনি হচ্ছেন ড. কামাল হোসেন, যিনি এক সময় বঙ্গবন্ধুর হরিহর আত্মা ও ছায়াসঙ্গী ছিলেন। এখন তাঁর নাম শুনলে অনেকের করুণা হয়। স্বার্থ ও পদের লোভে তিনি নিজেকে আজ কোথায় নামিয়ে এনেছেন ভাবলে বিস্মিত হতে হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর অনেকের মতো এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট আইনবিদও ভেবেছিলেন তিনিই দলে ও সরকারে শেখ মুজিবের শূন্যস্থান পূরণ করবেন। কিন্তু শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব গ্রহণ করায় তিনি হতাশ হন। তবু তিনি ভেবেছিলেন অনভিজ্ঞ শেখ হাসিনাকে শিখ-ী করে পর্দার আড়াল থেকে তাকে চালনা করবেন। কিন্তু কর্মদক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় বলীয়ান শেখ হাসিনা কামাল হোসেনের প্রত্যাশায় জল ঢেলে দেন। আর তখনই শেখ হাসিনার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কামাল হোসেন। একাত্তরের স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের প্রাণপুরুষ এমআর আখতার মুকুল, যাঁর ‘চরমপত্র’ বেতার অনুষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় প্রবল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল, তিনি আমায় মৃত্যুর আগে বলেছিলেন, কামাল হোসেন জেনারেল জিয়াউর রহমান ও এরশাদের ক্ষমতায় আরোহণের প্রক্রিয়া দেখে নিশ্চিত হয়েছিলেন বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পথ পিন্ডি, ওয়াশিংটন হয়ে ঢাকায় আসে। দিল্লীকে তিনি কোন ধর্তব্যের মধ্যেই ধরতেন না। যদিও দিল্লীতে তার শুভানুধ্যায়ীর কোন অভাব ছিল না। আজ পরিস্থিতি এতটাই বদলে গেছে যে, তাঁর বিদেশী জামাতা এখন প্রকাশ্যেই বলে বেড়াচ্ছেন, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানীরা নাকি কোন গণহত্যা করেনি এবং তিরিশ লাখ লোক মুক্তিযুদ্ধে মারাও যায়নি। ঠিক একই কথা লিখেছেন সাংসদ সগত বসুর লন্ডনপ্রবাসী বোন শর্মিলা বসু, যা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবল বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এই সব কথার অবতারণা এই জন্য করলাম যে, মুনতাসীর ও শাহরিয়ার অর্থ ও পদের লোভে কামাল হোসেনের মতো হাওয়া মোরগ হয়ে যাননি। দৈনিক স্টেটসম্যান বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবীদের খতমের হুমকির খবর গুরুত্ব দিয়ে ছাপছে বলে বেশকিছু তৃণমূল নেতা তাদের উষ্মার কথা আমাকে জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, বাংলাদেশে জঙ্গীরা তাদের বুদ্ধিজীবীদের নিকাশ করতে চায়, তাতে ভারত বিশেষ করে এপার বাংলার কী আসে যায়? উত্তরে বললাম, পাশের দেশে জিহাদী জঙ্গীরা হিংসাত্মক সব কার্যকলাপের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে, যার আঁচ এপার বাংলাতেও এসে পড়ছে। পাশের বাড়ির আগুন যদি পড়শীরা না নেভায় সে আগুনে পড়শীরাও জ্বলে-পুড়ে মরবে। যার জাজ্জ্বল্য প্রমাণ খাগড়াগড় বিস্ফোরণকা-। এপার বাংলাতেও তো বাংলাদেশী জঙ্গীরা খাগড়াগড়কা-ের মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে। এর কি শেষ হবে উদার মুক্তমনাদের হত্যার মাধ্যমে? “আপনাদের মোল্লা তোষণ নীতি এপারে বাংলাদেশী জামায়াতীদের প্রচুর ‘সেফ হেভেন’ গড়তে সাহায্য করেছে। এসবই এনআইএ তদন্তে উঠে এসেছে। এর পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা কি আপনারা ভেবে দেখেছেন?” আমার এই সব প্রশ্নে নির্বাক থেকে তারা তাদের অসহায়তা বুঝিয়ে দিলেন। লেখক : ভারতীয় সাংবাদিক ও দৈনিক বাংলা স্টেটসম্যানের সম্পাদক
×