ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিস্ময়- দলে এবার চার পেসার

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১৯ জুন ২০১৫

বিস্ময়- দলে এবার চার পেসার

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন হয়ে গেছে পরীক্ষাকেন্দ্র। একের পর এক পরীক্ষ-নিরীক্ষা চলছেই এ দলটি নিয়ে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কান চান্দিকা হাতুরাসিংহে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে যেন তার বিস্ময়কর কিছু সিদ্ধান্ত দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের পিলে চমকে দিয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম সফরেই তিনি চার ওপেনার তত্ত্ব প্রয়োগ করেছিলেন। এবার সফরকারী ভারতের বিরুদ্ধে ফতুল্লা টেস্টে অবশ্য এক পেসার তত্ত্ব প্রয়োগের পর তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন এবং বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। সেই সমালোচনা ঢাকাতেই এবার সম্ভবত প্রথম ওয়ানডেতেই নতুন চমক উপহার দিলেন তিনি। এবার হাতুরাসিংহে দল গড়লেন চার স্বীকৃত পেসার নিয়ে। বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে ইতিহাসে যা সাম্প্রতিক সময়ে বিরল ঘটনা। যদিও অতীতে অনেকবারই চার স্বীকৃত পেসার নিয়ে বাংলাদেশ দল খেলেছে। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে অভিষিক্ত মুস্তাফিজর রহমান ছাড়া আরও তিন পেসার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদকে নিয়ে গড়া একাদশ মাঠে নামে ভারতের বিরুদ্ধে। আর ব্যাটিংয়ের সঙ্গে পেস বোলিংয়েও দক্ষ সৌম্য সরকারকে ধরলে ৫ পেসার নিয়েই ভারতের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। অবশ্য অনেকবারই স্বীকৃত পেসারসহ অনিয়মিত কয়েকজন পেসার দলে নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। এমনকি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই ছিলেন ৬ পেসার। ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ মোরাতুয়ায় নিজেদের অভিষেক ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অবশ্য চারজন বোলিং করেছিলেন। অনেক সময় একাদশে চারজন বা তারচেয়ে বেশি অধিকাংশ ক্ষেত্রে একাদশে থাকলেও বোলিং করেননি তারা। চারজন স্বীকৃত পেসার নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। বাঁহাতি স্পিনারের স্বর্গ হয়ে ওঠা বাংলাদেশ দল এদিন স্বীকৃত কোন স্পিনার ছাড়াই নেমেছে। এমন ঘটনা খুব কমই ঘটেছে। যদিও বিশ্বকাপে তরুণ সৌম্য সরকার একজন পেস অলরাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন। কিন্তু টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেই পরিচিতিটা বেশি তার। তাকে পেসার হিসেবে বিবেচনা করলে চলতি বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বশেষ চার পেসার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ দল। কারণ ওই ম্যাচে সৌম্য বোলিং করেছিলেন। আর ২০০৫-০৬ সালে আফতাব আহমেদ হয়ে উঠেছিলেন পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার। এই দুই বছর আফতাব নিয়মিত দলে থাকার কারণে প্রায়ই বাংলাদেশ দলে চার পেসার দেখা গেছে। সে সময় নিয়মিতই অনেক বোলিং করেছেন আফতাব। সে বিবেচনায় চার স্বীকৃত পেসার নিয়ে সর্বশেষ ২০০৭ সালের ২০ জুলাই কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলেছে বাংলাদেশ। চার পেসার নিয়ে খেলে জয়ের রেকর্ডও আছে বাংলাদেশের। এর আগে তিনবার চার পেসার নিয়ে খেলে জিতেছে টাইগাররা। সর্বপ্রথম ২০০৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ভারতের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রথম জয়ের ম্যাচেও খেলেছিলেন চার স্বীকৃত পেসারÑ মাশরাফি, নাজমুল হোসেন, তাপস বৈশ্য ও খালেদ মাহমুদ সুজন। এছাড়া ১৮ জুন ২০০৫ সালে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক বিজয় এবং ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বগুড়ায় ১৫ রানের দারুণ জয়ের পেছনে ছিলেন চার পেসার। হাতুরাসিংহে চার ওপেনার, আট ব্যাটসম্যান এবং এক পেসার তত্ত্ব দেখিয়েছেন। এবার নতুন করে তিনি চার পেসার তত্ত্বও দেখালেন। বাংলাদেশ দলকে নিয়ে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছেই। আর এসব তত্ত্বে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সফল এ লঙ্কান কোচ।
×