ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সমাজ ভাবনা

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১৮ জুন ২০১৫

সমাজ ভাবনা

রোজা আসলে দাম কেন বাড়বে এস এম মুকুল পবিত্র রমজান মাস। সংযমের এই রোজার মাসটিকে কেন্দ্র করে ইসলামী ভাবগাম্ভীর্যে ধর্ম-কর্ম নিয়ে মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। রোজা পালনের সঙ্গে খাবারের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ইফতারি, রাতের খাবার এবং সেহ্রিতে রসনাবিলাসী বাঙালীদের খাবারের মেন্যুতে আসে বৈচিত্র্য। অনেক ক্ষেত্রে বিলাসিতার বহুল আয়োজন থাকে নিত্যদিন। সংযম পালনকারী রোজাদার মানুষদের খাবারের এই বিশেষ আগ্রহ ও আয়োজনকে পুঁজি করে আরেক শ্রেণীর মানুষ চরম অসংযমী হয়ে ওঠেন। আমাদের বণিক সমাজের পুঁজিপতিরা এই রোজার মাসটিকে অতিরিক্ত আয়ের মাস হিসেবে ক্যালেন্ডারের পাতায় চিহ্নিত করে রেখেছেন। অসাধু শ্রেণীর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রোজার আগেই পর্যায়ক্রমে দাম বাড়াতে থাকেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। রোজায় কিছু পণ্যের আবশ্যকতা বেড়ে যায়। কেন বাড়ে এর মানে বুঝে পাই না। অবস্থাদৃষ্টে প্রমাণ হয় রোযা উপলক্ষে আমরা বোধহয় খাওয়ার মাত্রা বাড়িয়ে দিই। অস্বাভাবিক চাহিদা বৃদ্ধির কারণে কিছু কিছু পণ্যকে রোজার পণ্য হিসেবে ধরে নেয়া যায়। যেমনÑ ছোলাবুট, পিঁয়াজু, বেগুনি, শসা, কাঁচামরিচ, খেজুর, মুড়ি, চিনি, মাংস, দুধ, ডিম প্রভৃতি। রোযাদার মানুষেরা এগুলোর ভক্ষণমাত্রা এতটা বাড়িয়ে দেন যেন এসব খাবার না খেলে সম্ভবত রোযা পূর্ণ হবে না। আর এই সুযোগটাকে ভাল মতো কাজে লাগান অসংযমী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। কাজেই এসবের দাম বাড়বেই। আমরা যদি এসব খাবার না খাই তাহলে কী কোন সমস্যা আছে? বেগুনি না খেলে, বেগুনে আগুন লাগবে না। পিঁয়াজু ছাড়াও ইফতারি করা যায়। আলুর চপ না হয় না-ই খেলাম। সমস্যা কি? রোযা তো হবে। সংযমও হবে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) কি পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ খেয়ে ইফতার করতেন? ইসলাম ধর্মে কি কোথাও এসব খাবারের আবশ্যকতার কথা বলা আছে? নেই। তাহলে এসব পরিহার করতে সমস্যা নেই। বরং পরিহার করাটাই সংযমের আওতায় পড়বে। ভাত বা খিচুড়ি খেয়ে, পিঠা-পায়েশ খেয়ে, চিড়া-মুড়ি খেয়ে ইফতার করে নেয়া যায়। রোযাকে কেন্দ্র করে যেসব জিনিসের দাম বাড়ে তার জন্য আমরাই দায়ী। এসব খাবার না খেয়ে বা কম খেয়ে আমরা এসবের চাহিদা কমাতে পারি। চাহিদা কম থাকলে দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা কমবে। আমরা খাবার তালিকায় নতুন কিছু নিয়ে আসতে পারি। যাদের প্রচুর টাকা বৈধ-অবৈধ টাকা আছে তারা যদি অন্যায্য দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও টাকার জোরে এসব কিনে খান তা অসংযমের আওতায় পড়বে। টাকাওয়ালারা এসব বেশি বেশি কিনলে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও গরিব মানুষ মনে কষ্ট পায়। কারণ তারা ইচ্ছে থাকলেও শখ মিটাতেও কিছু কিনে খেতে পারেন না। এতে আল্লাহতায়ালাও অসন্তুষ্ট হবেন। দাম বেড়েছে। দাম বাড়ছে। দাম বাড়বে। এসব বিষয়কে এখন আর নতুন কিছু মনে হয় না। দিন আয় করে দিনে খায় শ্রেণীর মানুষদের কী যে অবস্থা। মধ্যবিত্তরা চতুর্মুখী সঙ্কটে। বলছিলাম রমজানের সংযমের কথা। আসুন আমরা সবাই রমজানের সংযমতা রক্ষা করি। আসুন আমরা রোযা থেকে দোয়া করি- মুনাফালোভী অসংযমী ব্যবসায়ী ভাইয়েরা যেন সংযমী হন। যারা দ্র্রব্যমূল্য বাড়ায়, যারা জিনিস ছোট করে দাম বড় করে, যারা ভেজাল জিনিস তৈরি ও বিক্রয় করে আল্লাহ যেন তাদের সংযমী শিক্ষা দেন। তাদের অসংযমী জিহ্বা যেন ছোট হয়। ঢাকা থেকে পাগলা ঘোড়া ক্ষেপেছে ম্যাক্সওয়েল রিবেরু রমজান মাস, পবিত্র থাকার মাস। এ মাসে আমরা মুসলমান জাতি আল্লাহ্ পাকের কাছে বিশেষ মোনাজাত করে থাকি। সারাদিন রোজা রেখে কষ্ট করি। আমরা বুঝতে চেষ্টা করি গরিবের না খেয়ে থাকা কত কষ্টকর। কিন্তু রমজান মাস আসলেই সবার মনে ধাক্কা লাগে যে, এই মাসে দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। তাই অনেকে চিন্তায় পড়ে যায় কিভাবে এই পবিত্র মাসকে উদ্যাপন করবে। তবে ধনী পরিবারের বা ব্যক্তিদের তেমন চিন্তা থাকে না। গরিবের হচ্ছে যত চিন্তা। আবার এও দেখা যায়, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আগে থেকেই খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করে রাখে। আর রমজান মাসে বেশি বেশি দামে বিক্রি করে। তাদের উদ্দেশ্য একটাই, সারা বছরের ক্ষতি রমজান মাসে পুষিয়ে নেবে। এতে করে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। আমাদের দেশে রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য এতই বেশি যে চিন্তাই করা যায় না যে একটু সঞ্চয় করব। আমরা দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে পাগলা ঘোড়ার দৌড়ের মতো তুলনা করতে পারি। পাগলা ঘোড়া যেমন কোন কিছু চিন্তা না করেই দৌড় দেয়, তেমনি আমাদের দেশের অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশের মানুষের কথা চিন্তা না করেই, কে বাঁচবে কে মরবে সে সব চিন্তা না করেই খাদ্য মূল্য থেকে শুরু করে সব জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এর সমাধান কী? কে এ সমস্যার সমাধান দিতে পারে? সরকার অবশ্যই এ বিষয়ে সমাধান দেয়ার জন্য কাজ করবে, তবে কতটুকু কার্যকর হবে তা ভেবে দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে আমরা সাধারণ জনগণও ভূমিকা রাখতে পারি। অন্যান্য দেশে লক্ষ্য করা যায়, দ্রব্যমূল্য কিঞ্চিৎ পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে দেশের জনগণ বিক্ষোভ-মিছিল বা সমাবেশ করে। ঘরে ঘরে সচেতনতা গড়ে তোলে। তেমনি আমরাও কি পারি না একটু সচেতন হতে? আমরা কি পারি না আমাদের বিবেককে জাগ্রত করতে। আমাদের দেশের সরকার কি পারে না এর একটা বিহিত করতে। অবশ্যই সব সম্ভব হবে যদি আমরা উদ্যোগ নেই। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলতে চাই, পবিত্র রমজান মাসে আমরা কেন দুই পয়সা বেশি লাভের জন্য নিজের আত্মাকে হারাব! কেন আমরা দুর্নীতির খাতায় নাম লেখাব? রমজান মাসে আমরা কি পারি না দেশের হতদরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রেখে নিজেকে পবিত্র রাখতে। অবশ্যই পারব যদি একটু চেষ্টা করি। আর বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, দেশের হতদরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে যেন দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন তৎপর থাকে সে দিকেও নজর রাখতে হবে। তবেই আমরা সকলে রমজান মাস ভালভাবে উদ্যাপন করতে পারব। লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা থেকে জনগণের ক্ষতি কাজল রোজারিও প্রতিটি ধর্মের মূল সুর হলো শান্তি, ভালবাসা, পবিত্রতা এবং ক্ষমা। নিহিত রয়েছে মানবতার কথা। বৌদ্ধ-ধর্ম বলে জীবে প্রেম, খ্রিস্ট ধর্মের মূলসুর ভালবাসা ও ক্ষমা এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে আসে শান্তি। রোজার অর্থ হলো ‘ত্যাগ স্বীকার’। শুধু না খেয়ে থাকার নাম রোজা নয়, বরং সেবাদান, ভালবাসা, গরিব দুঃখীদের সাহায্য, শরীর, মন ও আত্মাকে সংযত রাখাই হলো রোজার প্রকৃত অর্থ। রমজান মাস হলো পবিত্র মাস। কিন্তু এই পবিত্র মাসে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী উচ্চমূল্যে দ্রব্য বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি করছে নিজেদের নৈতিকতাকে। প্রশাসনের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ী ও খাদ্যে ভেজাল যুক্তকারীদের চিহ্নিত করে যোগ্য শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে। কাকরাইল, ঢাকা থেকে দোকানে চাই মূল্য তালিকা পিন্টু চন্দ্র সরকার রমজান এলে পেঁয়াজ, আলু, বেগুন, ডাল, ছোলা, কাঁচামরিচ, লেবু, চিনি, মুড়ি, খেজুর, বিভিন্ন ধরনের মসলা ও ফলের চাহিদা বাড়ে। আর তার সঙ্গে দাম বেড়ে যায়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম বাড়িয়ে বাজারকে অস্থিতিশীল করে দেয়। কিছু পণ্য আছে, যা সারাবছর বিক্রি হয় না। তাই ব্যবসায়ীরা রমজানের অপেক্ষায় থাকে। রমজান এলে সেগুলো দ্বিগুণ দামে বিক্রি করে। দেখা যায়, অনেক ব্যবসায়ী নিজেই বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টায় মগ্ন থাকে। তারা তাদের ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দেয় দ্রব্যমূল্যের। যাদের সামর্থ্য আছে তাদের হয়ত খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয় না। কিন্তু যারা দিন আনে দিন খায়, বাজারদর সম্পূর্ণ তাদের নাগালের বাইরে চলে যায়। কিন্তু কী আর করা? না খেয়ে তো আর বাঁচা যাবে না। তাই তো বাঁচার তাগিদে যার পাঁচ কেজি দরকার সে দুই কেজি দিয়ে কোনমতে চালিয়ে নেয়। প্রতিবার রমজানের পূর্বে সরকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে জনতাকে আশ্বাস দেয় যে, রমজানে দ্রব্যসামগ্রীর দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কিন্তু দেখা যায়, রোজার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই বেড়ে যায় জিনিসপত্রের দাম। প্রত্যেক দোকানে যদি মূল্য তালিকা ঝোলানো হয় তবে কেউ আর প্রতারিত হবে না। সবাই ন্যায্যদামে কিনে নিতে পারবে। কুমিল্লা থেকে চাই নজরদারি রণজিত মজুমদার পবিত্র রমজান মাস এলেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে। এটা পবিত্র রমজানে নিয়ম হয়ে গেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উৎসব পার্বণে জিনিসপত্রের মূল্য ছাড় দেয় এবং মূল্য কম রাখে। কিন্তু একমাত্র আমাদের দেশেই ব্যতিক্রম। অসাধু মানুষ বেশি মুনাফার লোভে জিনিসপত্রের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে। কাজেই সরকারী নজরদারির মাধ্যমে বাজার মনিটরিং করে জিনিসপত্র সহনীয় পর্যায়ে আনা উচিত। আশা করি পবিত্র রমজানে দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া নিয়ন্ত্রণে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ফেনীর সোনাগাজী থেকে সাদাপানি আর এক মুঠ মুড়ি বেনজির পায়েল রোজা এলেই বেড়ে চলে পণ্যের দাম। নিত্যপণ্য কিনতে হিমশিম খায় সাধারণ মানুষ। বেড়ে যায় সংসারের চাপ, ফলে মাথা গরম হয় সংসারের কর্তার। বেড়ে যায় অশান্তি, ঝগড়া বিবাদ, মনোমালিন্য ইত্যাদি। সীমিত আয়ের মধ্যে সীমাহীন খরচের টানাপড়েনের পর আসে ঈদ। হু হু করে বেড়ে যায় ঈদের বাজার। যারা উঁচু তলায় আছে, অবৈধ উপার্জন আছে তাদের চলে পোশাকের প্রতিযোগিতা। কার পরিবার কত লাখ টাকার শাড়ি সেলোয়ার কামিজ গহনা ইত্যাদি কিনতে পারে। এবারেও সরকার আশার বাণী শোনাচ্ছে পণ্যদ্রব্যের দাম কমানোর। কিন্তু শেষ রক্ষা কতটুকু হবে তা ভাবার বিষয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যে কোন উৎসবে মানুষ কত আনন্দ করে। কারণ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে থাকে ঐক্য। কত লোক আছে সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারি করে শুধুই সাদাপানি, এক মুঠ মুড়ি, বড়জোর সঙ্গে একটু পান্তাভাত একটা কাঁচামরিচ ও নুন। কারণ অন্যান্য বাজারের মতো ইফতারির বাজারেও জ্বলে দাউ দাউ আগুন। সর্বসাধারণ চায় সরকার তার কঠোর আইনপ্রয়োগের মধ্য দিয়ে কথা রাখুক। পুরো রমজান মাস হয়ে উঠুক আনন্দের মাস। সাধারণ মানুষ যেন ইফতারির টেবিলে পায় পান্তাভাতের বদলে সাভাবিক খাবারটুকু। কুড়িগ্রাম থেকে আত্মশুদ্ধিতেই মুক্তি ইসমত পারভীন রুনু আত্মোপলব্ধিই হচ্ছে একজন মানুষের মানবিক সত্তার সবচেয়ে বড় গুণ। এ উপলব্ধি থেকে আমরা ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছি। প্রত্যেক মহত কাজের সূচনাতে আত্মোপলব্ধি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে নিঃসন্দেহে। যার অল্প আছে, সে আসলে আদৌ দরিদ্র নয়, আর যে অনেক বেশি আশা করে মনের দিক থেকে সে-ই আসলে দরিদ্র। নিজের মধ্যে যত মানবিক গুণাবলীকে স্থান দেয়া যায়, ততই সে বড় হয়, প্রকৃত মানুষ হিসেবে বিবেচিত হয়। নিজেদের অপকর্ম দিয়ে অনেকেই সভ্যতাকে কলুষিত করে ফেলে, যা একেবারেই উচিত নয়। প্রতারক, লোভী ব্যক্তিরা সব সময়ই অকৃতজ্ঞ হয়। নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, ‘মানুষ মাত্রই সংযম শিক্ষা আবশ্যক।’ অল্পতে যারা সন্তুষ্ট, খুশি থাকেন, তাদের ধ্বংস নেই। আল্লাহ্পাক মানবজাতিকে সমগ্র সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তাছাড়া সবকিছু মানুষের কল্যাণের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু মানুষ ইচ্ছাতেই হোক আর অনিচ্ছাতেই হোক; প্রতারণা, অন্যায়, অপরাধ, সত্যকে আড়াল করা, মিথ্যার আশ্রয় নেয়া, মানুষকে ঠকানোর মাধ্যমে প্রতিনিয়তই নিজেকে নৈতিক অবক্ষয়ে নিমজ্জিত করে নিজের ও সমাজের ক্ষতি করছে। রোজাকে পুঁজি করে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে রোজার পবিত্রতা নষ্ট করেন অতি মুনাফার লোভে। কিন্তু নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষের স্বার্থ ও মানবিক দিক একেবারেই বিবেচনায় আনেন না। তাতে করে আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিত্যপণ্য ক্রয় করা সম্ভব হয় না। অনেকের পরিবারে সদস্য সংখ্যাও বেশি। তাই রোজার আগেই নিত্যপণ্যের বাজার হয়ে ওঠে অস্থির, লাগামহীন ঘোড়ার মতো। তাতে বাদসাধে, কার এমন সাধ্য? পৃথিবীর অনেক দেশেই উৎসব, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের কথা ভেবে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি না করে উল্টো হ্রাস করা হয়। এর একটাই কারণ, যাতে সবাই অনুষ্ঠানের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারে। যেহেতু রমজান সংযমের মাস, তাই আমরা যেন সীমিত আয়ের মানুষের কথা ভেবে, অতি মুনাফার চিন্তা বাদ দিয়ে দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখি। কিন্তু আমাদের দেশে দেখা যায় ঠিক এর উল্টো চিত্র। প্রথমে শব-ই-বরাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়, পরবর্তীকালে রোজায় তা অব্যাহত থাকে। সবশেষে ঈদে এতটাই বাড়তে থাকে যে, তখন নিত্যপণ্যের দাম হাতের নাগালেরই বাইরে চলে যায়। যা একেবারেই কাম্য নয়। নিম্নবিত্ত শ্রেণী তো বটেই, মধ্যবিত্তের ঈদের আনন্দও তখন মাটি হয়ে যায়। অথচ এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন- সিলেটের শাহী ঈদগাহ এলাকার একটি স্টোর রমজান ও ঈদ উপলক্ষে নিত্যপণ্যের ওপর মূল্যছাড় দিয়ে থাকে। এর পাশাপাশি সারাবছরও তারা নিত্যপণ্যের মূল্য ভোক্তাদের নাগালের মধ্যেই রাখার চেষ্টা করে। তাদের এ উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। তাদের এ উদ্যোগের ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সিয়াম পালন ও ঈদ উদ্যাপন সহজ ও আনন্দময় হয়ে ওঠে। তাদের এ উদ্যোগ সারাদেশে অনুকরণীয় হতে পারে। আসলে মানবতা, মহানুভবতা, সততা, মহত্ত্ব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এসব গুণের কোন বিকল্প নেই। টিবি গেট, সিলেট থেকে প্রাপ্তি স্বীকার সমাজ ভাবনার এ পর্বে আরও যাঁদের লেখা পেয়েছি: কাকরাইল ঢাকা থেকে উজ্জ্বল রিবেরু, রাজশাহী থেকে শারমিন সুলতানা মিম, চাটখিল নোয়াখালি থেকে সালাহউদ্দিন কাঞ্চন, ঘোপ যশোর থেকে ইসমাইল হোসেন তালুকদার ও দিনাজপুর থেকে মুনতাহিনা চৌধুরী
×