ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে ৬০ গ্রাম প্লাবিত, লাখো মানুষ পানিবন্দী

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৮ জুন ২০১৫

শেরপুরে ৬০ গ্রাম প্লাবিত, লাখো মানুষ পানিবন্দী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ অতি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে দ্রুত পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলসহ ৬০ গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। দেখা দিয়েছে নদীভাঙ্গন। সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী, বলাইয়েরচর, কামারেরচর ও চরমোচারিয়া ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দী। গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে ব্যাপক নদীভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। পানি কমতে থাকায় বানভাসি মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার ৩০ গ্রাম গত তিন দিন যাবত পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বুধবারও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে পানিবন্দী মানুষের। প্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছে। বাড়িঘরে পানি ওঠায় রান্না করতে পারছে না অধিবাসীরা। গবাদিপশু নিয়ে কৃষকরা পড়েছে মহাবিপাকে। মহারশি, কালাঘোষা, সোমেশ্বরী ও মালিঝি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টানা ভারি বর্ষণ এবং উজানের ঢলে নালিতাবাড়ীর খালভাঙ্গা এলাকায় ভোগাই নদীর দু’ শ মিটার বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে নালিতাবাড়ী, মরিচপূরাণ, যোগানিয়া, কলসপাড়সহ চার ইউনিয়নের ২০ গ্রাম। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। গাইবান্ধা ॥ তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করায় বুধবার গাইবান্ধার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে পানির প্রবল চাপে ফুলছড়ির বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদীভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। বন্যার পানি নামতে শুরু করায় নদীগুলোর স্রোতের তীব্রতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের চন্দনস্বর, উত্তর খাটিয়ামারী, পূর্ব খাটিয়ামারী, পশ্চিম খাটিয়ামারী, কুচখালী, কাউয়াবাঁধা গ্রামজুড়েই ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। একই উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের সিংড়িয়া, উড়িয়ার রতনপুর, কালাসোনা, গজারিয়ার কামারপাড়া, জিয়াডাঙ্গা, কঞ্চিপাড়ার রসুলপুর, পূর্ব কঞ্চিপাড়া, জোড়াবাড়ি, সাতারকান্দি, ফজলুপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর ও খাটিয়ামারী গ্রামেও নদীভাঙ্গন চলছে। এছাড়া তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদী তীরবর্তী সুন্দরগঞ্জের হরিপুরসহ ছয় ইউনিয়নের নিজামখাঁ, খোঁদ্দারচর, চরচরিতাবাড়ি, কানিচরিতাবাড়ি, রিয়াজ মিয়ারচর, উজান বুড়াইল, ভাটি বুড়াইল, কেরানির চর, কালাইসোতার চর, চরবিরহীম, ভোরের পাখি, কালিরখামার চর এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদীভাঙ্গনে গৃহহীন পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত সব নদীর পানি কমতে শুরু করায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদীভাঙ্গন। সাত উপজেলায় ত্রাণের জন্য বরাদ্দ ৫০ মে. টন চাল বুধবার থেকে বিতরণ শুরু হয়েছে। বানভাসি এসব মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব জানান, বন্যায় নদীভাঙ্গনের শিকার এক হাজার ৭১৬ পরিবারের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। নদীভাঙ্গনের শিকার মানুষের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
×