ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মামলা করে খুন হয়েছেন হেডটিলা

বাঁশখালীতে চা-বাগান ॥ দখল করে স্থাপনা

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৭ জুন ২০১৫

বাঁশখালীতে চা-বাগান ॥ দখল করে স্থাপনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী, ১৫ জুন ॥ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পূর্বাঞ্চলের পাহাড় প্রতিদিন দখল করে নতুন নতুন বাড়িঘর তৈরি, প্রভাবশালী মহল বিশাল এলাকা দখল করে নতুন নতুন স্থাপনা তৈরি করলেও বনবিভাগ তাদের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছে না। চা-বাগানের ২০০ একর জমি দখল করে নতুন স্থাপনা নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউপি সদস্য আছহাব উদ্দিন। এ ঘটনায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় এজাহার দায়ের করেছে। অপরদিকে বাঁশখালীর চা-বাগানের ৩৪৭২.৫৩ একর জায়গা সরকারীভাবে লিজ গ্রহণ করলেও কতিপয় প্রভাবশালী এ জায়গা জোরপূর্বক দখলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চা-বাগানের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে বিগত দিনে মামলার প্রেক্ষিতে বাদী চা-বাগানের হেডটিলা সাধন মহাজনকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে। এরপর কিছুদিন চা-বাগানের জায়গা দখলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলেও পরবর্তীতে আবারো তা শুরু করেছে প্রভাবশালী মহল। স্থানীয় সূত্র ও সোমবার সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের চাঁদপুর বৈলগাঁও চা-বাগানটি সরকারীভাবে লিজ গ্রহণ করে ১৯৮৫ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে। তারা প্রথম পর্যায়ে যে পরিমাণ জায়গা লিজ গ্রহণ করে তার কিছু অংশের মাধ্যমে চা-বাগান কার্যক্রম শুরু করলেও পরবর্তীতে প্রতিবছর নতুন নতুন এলাকায় তাদের লিজ নেয়া জায়গায় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু চা-বাগানের চার পাশে বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের দখলে রেখেছেন লিজ নেয়া বেশ কিছু জায়গা। তা নিয়ে বিগত দিনে চা-বাগান কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা মামলার বাদী ছিলেন চা-বাগানের হেডটিলা সাধন মহাজন। মাসখানেক আগে দুর্বৃত্তরা তাকে তার নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় ২য় টিলা বাবু বাদী হয়ে মামলা করলে বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত তথ্য জানা যায়। এদিকে চা-বাগানের লিজ নেয়া জায়গায় এক দিকে প্রতিদিন গড়ে উঠছে নতুন নতুন বাড়িঘর। অপরদিকে বিশাল এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দখল করে গাছপালা উপড়ে ফেলে তৈরি করছে নিজেদের মতো করে নানা স্থাপনা। চা-বাগান কর্তৃপক্ষ যেসব জায়গায় বর্তমানে প্রভাবশালী মহল নিজেদের স্থাপনা করছে তা তাদের লিজ নেয়া জায়গা হিসাবে চিহ্নিত করলেও প্রভাবশালীদের চাপের মুখে ও হুমকি ধমকির মুখে বর্তমানে চা-বাগান সম্প্রসারণ করতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। লটহল ও লট চাঁনপুর পাহাড়ে দেখা যায়, পাহাড়ের অভ্যন্তরে অসংখ্য বাড়িঘর। তার ওপর স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি বিশাল এলাকা দখল করে পাহাড়ী সব ধরনের গাছ উপড়ে ফেলে সেখানে নতুন স্থাপনা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ব্যাপারে চা-বাগানের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, চা-বাগানের ৩৪৭২.৫৩ একর জায়গা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লিজ নেয়া হয়েছে। এদিকে চা-বাগানের পাশেই বিশাল এলাকা জুড়ে গরু ও মুরগি খামারের মালিক ইউপি সদস্য বিএনপি নেতা আছহাব উদ্দিন বলেন, সরকারীভাবে ১০ একর জায়গা ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়ে তাতে এ ধরনের কার্যক্রম করছি। আমরা কোন অবৈধ দখলদার নই। তিনি বর্তমানে যে জায়গা দখলে রেখেছেন এবং যে জায়গায় গাছ উপড়ে ফেলেছেন সেখানে কি করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেখানে নতুন করে গাছ লাগানো হবে।
×