ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসীদের ॥ খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৭ জুন ২০১৫

কুড়িগ্রামে দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসীদের ॥ খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ গাইবান্ধায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে নদীভাঙন অব্যাহত আছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা কমলেও তা এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। তবে বেড়েছে বানভাসীদের দুর্ভোগ। ত্রাণের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। গাইবান্ধায় মঙ্গলবার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কিছুটা কমলেও তা বিপদসীমার ১৯.৮২ সেন্টিমিটার (সেমি) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ঘাঘট নদীর পানি ২১.৭০ সেমি, করতোয়ার পানি ২০.১৫ সেমি এবং তিস্তার পানি ২৫.১৩ সেমি বেড়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এদিকে ফজলুপুর ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারী গ্রামের ৩৬৫ পরিবারের বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় পানিবন্দী মানুষের মাঝে খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ গো-খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ধানের বীজতলা, পাট ও শাকসবজির ক্ষেত। পানির প্রবল চাপে ফুলছড়ি উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ফজলুপুর ইউনিয়নের চন্দনস্বর, উত্তর খাটিয়ামারী, পূর্ব খাটিয়ামারী, পশ্চিম খাটিয়ামারী, কুচখালী, কাউয়াবাঁধার ৭২ পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে কাউয়াবাঁধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া উদাখালী ইউনিয়নের সিংড়িয়া, উড়িয়ার রতনপুর, কালাসোনা, গজারিয়ার কামারপাড়া, জিয়াডাঙ্গা, কঞ্চিপাড়ার রসুলপুর, পূর্ব কঞ্চিপাড়া, জোড়াবাড়ি, সাতারকান্দি, ফজলুপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর ও খাটিয়ামারী এলাকায় নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গৃহহীন পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিংড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে ইতোমধ্যে ১৮ হাজার বালিভর্তি জিওব্যাগ ফেলেছে। গত দুইদিন বৃষ্টি কম থাকায় কাজের অগ্রগতি হওয়ায় সিংড়িয়া রতনপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কিছুটা ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দু’ঘণ্টার ভারি বর্ষণে শহুরে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে আসে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক এবং গাইবান্ধা পৌর এলাকায় ড্রেনগুলো উপচে পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পথচারী এবং মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা লোকজন বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়ে। অনেকে কাজ কর্ম ফেলে দোকানপাট বন্ধ করে রাখতে বাধ্য হয়। কুড়িগ্রাম ॥ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সবকটি নদীর পানি কমতে শুরু করায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এখনও বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। সাতদিন ধরে তারা বন্যার পানির সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সাত উপজেলায় ৫০ মে. টন খয়রাতির চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও তা মঙ্গলবার পর্যন্ত বিতরণ শুরু হয়নি। বানভাসি এসব মানুষ ত্রাণের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সঙ্কট। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মঙ্গলবার সকালে তিস্তায় ৫৭ সেমি, দুধকুমারে ৩২ সেমি, ব্রহ্মপুত্রে ৩১ সেমি ও ধরলায় ১১ সেমি পানি কমছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদীভাঙ্গন। চলতি বন্যায় নদীভাঙ্গনের শিকার হয়েছে এক হাজার ৭১৬ পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ হাজার পরিবার। কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, ভুরুঙ্গামারী, নাগেশ^রী ও রাজীবপুর উপজেলায় বন্যার্তদের জন্য ৫০ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
×