ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে সড়ক ও ট্রেন দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৭ জুন ২০১৫

রাজধানীতে সড়ক ও ট্রেন দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে পৃথক সড়ক ও ট্রেন দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছে। নীলক্ষেত এলাকায় এক পুলিশ কর্মকর্তার গাড়ির ধাক্কায় তিনজন আহত হয়েছে। এদিকে পল্টনের র‌্যাংগস টাওয়ারে আটতলা ছাদ থেকে ওই ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড ও খিলক্ষেত কাওলা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাতনামা এক নারীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পরে ঢাকা রেলওয়ে থানার পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ জানান, মঙ্গলবার ভোরে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত (৬৫) এক বৃদ্ধ গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ৮টায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে একইদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খিলক্ষেত কাওলা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত (৩৫) এক নারীর মৃত্যু হয়। অন্যদিকে মঙ্গলবার সকালে খিলগাঁওয়ের খিদমা হাসপাতালের সামনের সড়ক দুর্ঘটনায় সজল মিয়া (৩২) নামে এক বাসচালকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের বাবার নাম আব্দুল শেখের। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার পল্লীপাড়া গ্রামে। তিনি মিরপুর এলাকায় থাকতেন। নিহতের সহকর্মী শরীফুল ইসলাম জানান, সকাল সোয়া ৭টার দিকে খিলগাঁওয়ের খিদমা হাসপাতালের সামনে সজল সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খিদমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে আনেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে ওই সময় সজল নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন, নাকি অন্য কোন গাড়ির ধাক্কা বা নিচে পড়েছিলেন। তা তিনি জানাতে পারেননি। অপরদিকে এদিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার মোড়ে বাসের ধাক্কায় মোঃ ফয়েজ আহমেদ (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভারে কর্মরত ছিলেন। নিহতের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার থানার কদুয়া গ্রামে। এ ঘটনায় পুলিশ বাসের চালকের সহকারী জহিরুল ইসলাম সুমনকে (২৮) আটক করেছে। চালক পালিয়ে যায়। যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফয়েজ আহমেদ চৌরাস্তা মোড়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় তুরাগ জিএম পরিবহনের একটি বাস তাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, এ সময় বাস হেলপার সুমনকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতের বাবার নাম রমজান আলী। গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল রাগুনিয়া থানার এলাকায়। এছাড়া সোমবার গভীররাতে ধানম-ি এলাকায় যাত্রীবাহী একটি লেগুনার ধাক্কায় মোঃ তারেক (১২) নামে দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়। তার বাবার নাম আবুল কালাম। পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১২টার দিকে ধানম-ি উৎসব কাবাব এ্যান্ড রেস্টুরেন্টে কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন তারেক। রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুতগতির একটি যাত্রীবাহী লেগুনা তাকে ধাক্কা দেয়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন পথচারী আবু হানিফ। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। অপরদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকায় এক পুলিশ কর্মকর্তার গাড়ির ধাক্কায় তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরা হচ্ছেন, হোসেন হাওলাদার (৫০), মোস্তাফিজ (৩২) ও মাসুম (৩৬)। এদের মধ্যে হোসেন রিক্সাচালক। মোস্তাফিজ ও মাসুম হোসেনের রিক্সার যাত্রী ছিলেন। তারা স্টার কাবাব রেস্টুরেন্টে চাকরি করেন। আহতরা জানান, ইসলামপুর থেকে মালামাল নিয়ে মোস্তাফিজ ও মাসুম ধানম-ি যাওয়ার জন্য রিক্সায় উঠেন। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে নীলক্ষেত থেকে কাঁটাবন যাওয়ার রাস্তায় এক পুলিশ কর্মকর্তার গাড়ি তাদের রিক্সাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রিক্সাচালকসহ তারা রিক্সা থেকে ছিটকে পড়ে যান। পরে তাদের মাথায় ফেটে রক্তাক্ত হয়। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তাই তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। নিরাপত্তাকর্মীর আত্মহত্যা ॥ মঙ্গলবার সকালে পুলিশ পল্টনের র‌্যাংগস টাওয়ার ভবনে ছাদের ওপর মোবাইল টাওয়ার থেকে রেজাউল করিম (২৫) নামে এক নিরাপত্তকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে পাঠায়। পল্টন থানার এসআই আবদুল মোমিন জানান, তারা খবর শুনে গিয়ে সকাল ১০টার দিকে ওই ভবনের আট তলায় ওপরে মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারের সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, রেজাউল আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে করেছে তা জানা যায়নি। তদন্ত চলছে।
×