ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিনারে অভিমত

‘দারিদ্র্য হ্রাস বাজেটের মূল্য লক্ষ্য’

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১৭ জুন ২০১৫

‘দারিদ্র্য হ্রাস বাজেটের মূল্য লক্ষ্য’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাজেটের মূল লক্ষ্য হলো দারিদ্র্য হ্রাস ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা। যেন সবাই সুযোগ সুবিধা পায়, আইনের শাসন নিশ্চিত হয় বলে জানিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। মঙ্গলবার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাজেট ২০১৫-১৬ ব্যবসায়ীদের মতামত’ শীর্ষক বােেজট পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে পৃথক দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর এবং আদিব এইচ খান, এফসিএ। এমসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট আনিস এ খানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ও পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার প্রমুখ। অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এক সময় আমাদের সরকারের বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বলা হতো, এখন আর এটা বলা হয় না। কারণ আমরা দেশের প্রয়োজনেই বড় বাজেট করছি। এখন সমালোচকরা বলেন, বাজেট বাস্তবায়িত হবে না। অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, অতীতে আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। রাজস্ব আদায়, এডিপি বাস্তবায়নসহ সব ক্ষেত্রেই আমরা সফলতার স্বাক্ষর রেখেছি। দেশের রিজার্ভ বেড়েছে। রফতানি বেড়েছে, পদ্মার মতো বড় সেতুর কাজ চলছে, চট্টগ্রামে কর্ণফুলি ট্যানেল করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মহাসড়কগুলো চারলেন করা হচ্ছে। সুতরাং এবারও বাজেট বাস্তবায়ন হবে। বিশেষ অথিতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান বলেন, এবারের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে বড় লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে এটা বাস্তবায়নযোগ্য। এজন্য কাজ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেট পরিবেশবান্ধব। তাছাড়া ব্যবসায়ীসহ সশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। সুতরাং সবার আশাই প্রতিফলিত হয়েছে। ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এবারের বাজেটে যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে তা অর্জনের জন্য জিডিপিতে বিনিয়োগের অবদান বাড়াতে হবে প্রায় ৪ শতাংশ। যা ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে কখনই হয়নি। এর ধারে কাছেও হয়নি। সুতরাং এ ধরনের প্রবৃদ্ধি অর্জন করা কঠিন। এছাড়া বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সেটিও কঠিন। কারণ এর আগের বছরগুলোতে বড় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করা যাচ্ছে না। ড. মির্জ্জা আজিজ আরও বলেন, এডিপি বাস্তবায়নে আমাদের দুর্বলতা দীর্ঘদিনের। বছরের শেষ দিকে বেশিরভাগ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় কাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। তাই এ বিষয়ে নজর দেয়া প্রয়োজন। ড. জায়েদি সাত্তার বলেন, একই সঙ্গে দেশীয় শিল্প সংরক্ষণ ও রফতানিমুখী নীতি গতিশীল হয় না। তাই এক্ষেত্রে একটি নীতিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে রফতানিমুখী নীতিকেই প্রাধান্য দেয়া উচিত। কারণ এ ধরনের শিল্পে অধিক জনবলের কর্মসংস্থান হয়, পাশাপাশি প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত হয়। ড. জায়েদি সাত্তার আরও বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধিকে ৬ শতাংশের ফাঁদ থেকে বের হতে হলে কৃষি ও সেবা খাতের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে না। বরং শিল্প খাতকেই গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে রফতানিমুখী শিল্পকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
×