ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল

রাজধানীর পানি প্রবাহের সমস্ত পথ বন্ধ হওয়ায় জলাবদ্ধতা

প্রকাশিত: ০৭:৫১, ১৬ জুন ২০১৫

রাজধানীর পানি প্রবাহের সমস্ত পথ বন্ধ হওয়ায় জলাবদ্ধতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ২ বছরের মধ্যে রাজধানীর ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রথম মেয়র আনিসুল হক। তিনি বলেন, রাজধানীতে জমে থাকা পানি প্রবাহের সব পথ বন্ধ হওয়ার কারণেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার বিকালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। জলাবদ্ধতার কারণ প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, গত দুই দিনে ডিএনসিসির আওতাধীন কিছু এলাকায় পরিদর্শন করেছি। রাজউক কর্তৃক কুড়িল ফ্লাইওভার নির্মাণ করার কারণে ড্রেনের আউটলেট বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। রাজউক কর্তৃক এই আউটলেট খুলে দিতে হবে। অপরদিকে কুড়াতলী এলাকার আগাখান হাউজিং সোসাইটি মাটি ভরাট করে ওই এলাকার আউটলেট বন্ধ করে দিয়েছে। আর যে খালগুলো আছে সেগুলোর মুখ বন্ধ করে বাড়ি তৈরি করছে এতে খাল সরু হয়ে যাচ্ছে বলেই জলাবন্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। কর্পোরেশনের একার পক্ষে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। তিনি রাজধানীর জলবদ্ধাতার নিরসনের বিষয়ে ডিএনসিসি, রাজউক, ওয়াসা, জেলা প্রশাসক ও বিহ্যাবের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান। মেয়র বলেন, স্বল্প সময়ে রাজধানীর এই সমস্যা নিরসনের জন্য আমরা কাজ করব। জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়ে নগরীর বিভিন্ন হাউজিংগুলোর সঙ্গে কথা বলব। রাজধানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম কাজ রাজধানীর বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনা, সড়ক বাতি স্থাপন, মশক নিধন, অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ এবং গ্রীন ঢাকা প্রতিষ্ঠা করা। এছাড়া রমজান উপলক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ফরমালিনমুক্ত খাদ্যদ্রব্য নিশ্চিত করতে বাজার তদারকির জন্য প্রতি এলাকায় ৩৬ কাউন্সিলার নিয়ে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই রমজানে রাজধানীর বাজারগুলোতে যদি ফরমালিনযুক্ত খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যায় তবে সেই বাজারের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের কোন নিস্তার মিলবে না বলে পুনরায় হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অবৈধ বিলবোর্ড প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, বিলবোর্ডের বিষয়ে আমরা জিহাদ ঘোষণা করেছি। রাজধানীর কোথাও কোন অবৈধ বিলবোর্ড থাকতে পারবে না। প্রগতী সরণি রাস্তায় অনেক বড় বড় বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে যা পড়ে গেলে মানুষের প্রাণ ঝুঁকিতে পড়বে। এগুলো অপসারণ করা হবে। ফুটপাথে হকারদের উচ্ছেদ করা হবে, তবে সেটা পর্যায়ক্রমে। রাজধানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপান সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২৬শ’ টন বর্জ্যরে ব্যবস্থাপনার কাজ করছি। আর কিছু বর্জ্য রাজধানীর কিছু জায়গাতে থেকেই যাচ্ছে। তিনি বলেন, আগামী ৬ মাসের এ বিষয়ে আমরা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারব। রাজধানী ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনা করব। আশা করি আগামী ২ বছর পরে রাজধানীতে কোথাও পরিত্যক্ত অবস্থায় কোন বর্জ্য পাওয়া যাবে না। এর আগে আনিসুল হক জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনে মিরপুর ১৮নং সেকশান থেকে, ১১নং সেকশান ও বাউনিয়া পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ওয়াসাকে সঙ্গে নিয়েই অতি দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু করবে ডিএনসিসি। এ সময় ওয়াসার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, জরাবদ্ধতা দূর করতে একার দ্বারা সম্ভব নয়। তাই ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতার নিজস্ব সমস্যা ও ওয়াসার পক্ষ থেকে তাদের সমস্যা দূর করবে। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম এনামুল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) এ কে এম মাসুদ আহমেদ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা, প্রকৌশলী গাজী ফিরোজ আহমেদ, সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।
×