ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্স গার্মেন্টসের গলার ফাঁস ॥ মুহিত

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৬ জুন ২০১৫

এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্স গার্মেন্টসের গলার ফাঁস ॥ মুহিত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্স দেশের পোশাক শিল্পের গতি দাবিয়ে রাখতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এ শিল্পের জন্য এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্স এখন গলার ফাঁস হয়ে গেছে। সোমবার সচিবালয়ে দেশের বস্ত্র খাতের তিনটি সংগঠনের (বিজিএমইএ-বিকেএমইএ-বিটিএমএ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাজেট-পরবর্তী এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ক্রেতাদের আস্থা অর্জনের জন্য বাংলাদেশে তাদের (এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্স) স্বাগত জানানো হয়েছিল, কিন্তু তাদের কর্মকা- এখন তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ বেশ অনেকটা এগিয়ে গেছে, হতে পারে এ কারণে তারা এ শিল্পকে একটু দাবিয়ে রাখতে চাইছে। এ সময় এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্সের কর্মকা-কে দুর্ভাগ্যজনক হিসেবেও মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে, মতবিনিময় সভার শুরুতে বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ আতিকুল ইসলাম এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্সের কড়া সমালোচনা করে বলেন, তারা যেভাবে প্রতিটি কারখানা পরিদর্শন করছে, অন্য কোন দেশে এর নজির নেই। প্রতিটি কারখানা মালিককে তাদের ইচ্ছামাফিক শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে। আর এজন্য প্রতিটি কারখানায় ব্যয় বাড়ছে ৫ কোটি টাকা থেকে ২০ কোটি টাকা। ফলে তৈরি পোশাকের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে যেসব কারখানা তাদের শর্ত পূরণ করতে পারছে না, তাদের কাছ থেকে পোশাক না কেনার জন্য ওয়েবসাইটে ক্রেতাদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বিজিএমইএ সভাপতির এসব কথার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, তাদের (এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্সের) কর্মকা-ের বিষয়ে সরকার অবগত রয়েছে। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ বাণিজ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এ্যাকোর্ড-এ্যালায়েন্সের সঙ্গেও আলোচনার পাশাপাশি প্রয়োজনে ইউরোপের দেশগুলো সফর করা হবে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে কারখানার কাঠামো, শ্রমিক নিরাপত্তা ও অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়ে কাজ করছে ইউরোপিয়ান ক্রেতাদের সংগঠন এ্যাকোর্ড) এবং উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের সংগঠন (এ্যালায়েন্স)। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে সংগঠন দুটি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ নিয়ে কাজ করছে। এদিকে, বাজেট-পরবর্তী আলোচনায় তিন সংগঠনের পক্ষ থেকে উৎসে কর হার বিদ্যমান দশমিক ৩ শতাংশ বহাল রাখা, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে প্রস্তাবিত ১ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার এবং বস্ত্র ও পোশাক শিল্পের জন্য ১০ শতাংশ হ্রাসকৃত হারে করারোপের মেয়াদ বাড়ানোসহ ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এসব প্রস্তাবের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ভূমিকার কারণে পোশাক শিল্পের প্রতি সরকারের এক ধরনের সফট কর্নার রয়েছে। এ প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করা হবে এবং আলোচনার মাধ্যমে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে একই সঙ্গে গার্মেন্টস কারখানাগুলো যতদ্রুত সম্ভব মুন্সীগঞ্জের বাউশিয়ায় স্থানান্তরের জন্য আহ্বান জানান তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহসভাপতি মোঃ সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান, বিজিএমইএ’র প্রথম সহসভাপতি এসএম মান্নান কচি প্রমুখ। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহালের দাবি ৫ সংগঠনের ॥ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঘোষিত নতুন পে-স্কেলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে সচিবালয়ে কর্মরত সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাঁচটি সংগঠন। সংগঠনগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ, বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা সমিতি, বাংলাদেশ সচিবালয় চতুর্থ শ্রেণীর সরকারী কর্মচারী সমিতি ও বাংলাদেশ সচিবালয় গ্রন্থাগার পেশাজীবী সমিতি। সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে তাঁর দফতরে সাক্ষাত করে পৃথক পৃথকভাবে এ পাঁচ সংগঠনের নেতারা তাদের দাবি জানান। অন্যদের মধ্যে ২০টি গ্রেডের মধ্যে বৈষম্য কমিয়ে আনা, ২০ শতাংশ সচিবালয় ভাতা প্রদান এবং পে-স্কেল প্রদানের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পারিবারিক সদস্য সংখ্যা প্রচলিত চার সদস্যের পরিবর্তে ছয় সদস্য গণনার দাবি জানান সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত শেষে পাঁচ সংগঠনের নেতারা পৃথকভাবে সাংবাদিকদের জানান, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহাল রাখার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। আর অন্যান্য দাবিগুলোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আশাপ্রকাশ করছেন যে, পে-স্কেল প্রদানের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পারিবারিক সদস্য সংখ্যার বিষয়টি বিবেচিত হলে সর্বনিম্ন গ্রেডের ভাতা আরও বাড়বে।
×