ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

ক্রান্তির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সম্মাননা পেলেন গোলাম কুদ্দুছ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৬ জুন ২০১৫

ক্রান্তির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সম্মাননা পেলেন গোলাম কুদ্দুছ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ১৯৬৭ সালের কথা। বৈরী পরিবেশে সংস্কৃতি হোক সমাজ বদলের হাতিয়ার স্লোগানে যাত্রা শুরু করেছিল ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী। নিছক বিনোদন নয়, সংস্কৃতিকে হাতিয়ার করে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে দীর্ঘকাল ধরে কাজ করছে সংগঠনটি। সময়ের বহমানতায় অতিবাহিত হয়েছে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছর। সংগ্রামমুখর সাংস্কৃতিক পথচলায় পদার্পণ করেছে ৪৮তম বর্ষে। সোমবার বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্্যাপনের আয়োজন করা হয়। সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের ওসমান মিলনায়তনে সংগঠনের কর্মীসহ সংস্কৃতি অঙ্গনের নানা শাখার মানুষের সরব উপস্থিতিতে আনন্দমুখর পরিবেশে উদ্্যাপন করা হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় বিশেষ অবদানের জন্য এ বছরের ক্রান্তি পদক সম্মাননায় ভূষিত করা হয় বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও লেখক গোলাম কুদ্দুছকে। দুই পর্বে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। প্রথম পর্বে আলোচনা ও সম্মাননা প্রদান শেষে দ্বিতীয় পর্বে ছিল নাচ-গান ও কবিতার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আয়োজনের শুরুতেই উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা। সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশিত হয় নতুন দিনের বার্তাবহ সুধীন দাশগুপ্ত রচিত সঙ্গীত ‘ওই উজ্জ্বল দিন ডাকে স্বপ্ন রঙিন...’। এরপর গাওয়া হওয়া ‘এই পৃথিবীর বুকে’ শিরোনামের গানটি। গান শেষে মঞ্চে অতিথিদের ডেকে নেয়া হয় মঞ্চে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি আকতারুজ্জামান ও আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাকশিল্পী মোঃ আহ্্কাম উল্লাহ্্। সংগঠনের সভাপতি নিলুফার চিনুর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্রান্তির সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা আলমগীর। গোলাম কুদ্দুছের হাতে ক্রান্তি পদক তুলে দেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সম্মাননা প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় গোলাম কুদ্দুছ বলেন, সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে আমরা সবাই সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধ। মানুষের মৌলিক প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে রক্ষা করতে হবে মানবাধিকার। গড়তে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনালালিত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। একটি সুখী ও সুন্দর রাষ্ট্র গড়ার সেই সংগ্রাম এখনও অব্যাহত রয়েছে। আর সেই সংগ্রামের পথচলায় আমার জন্য অনুপ্রেরণার উৎসব হয়ে থাকবে সম্মাননা। সরদার ফজলুল করিমের প্রয়াণবার্ষিকীর আলোচনা ॥ প্রখ্যাত দার্শনিক-শিক্ষাবিদ জাতীয় অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি সোমবার বিকেলে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আলোচনাসভার আয়োজন করে। সভায় স্বাগত ভাষণ দেন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন। সরদার ফজলুল করিমের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ। এছাড়াও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী এবং সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানের শুরুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে সরদার ফজলুল করিমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা গান পরিবেশন করে সরদার ফজলুল করিমকে শ্রদ্ধা জানান। অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, সরদার ফজলুল করিম ছিলেন একাধারে বামপন্থী, দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবী। তিনি শিল্পসাহিত্যের দিকে বেশি না ঝুঁকে দর্শন ও রাজনীতির দিকেই তাঁর মনোযোগ নিবিষ্ট করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন কেউ সক্রিয়ভাবে বাম দল না করেও বামপন্থী হতে পারে। তিনি সর্বদা সাধারণ মানুষের জীবন ঘনিষ্ট থাকতে চেয়েছেন। সাধারণ জনগণ ও দুর্বলের প্রতি ছিল তাঁর পক্ষপাতিত্ব। অপরিমেয় মানবিক ভালবাসার জন্য তাঁকে সবাই মনে রাখবে। তাঁর লেখাগুলো চলমান জীবন প্রবাহের ফটোগ্রাফ হিসেবে টিকে থাকবে। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরদার ফজলুল করিম সমস্ত জীবন কাজ করেছেন। তাঁর কাজের ক্ষেত্র ছিল অনেক ব্যাপক। তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমি কৃষকের সন্তান’। তাঁর মধ্যে যেসব গুণ ছিল তা একজন কৃষকের মধ্যেও বিদ্যমান। কৃষকের মুক্তির কথা তিনি ভাবতেন। বিদ্যা-বুদ্ধি-জ্ঞান কোন কিছু নিয়েই তাঁর কোন অহমিকা ছিল না। কামাল লোহানী বলেন, রাজনীতির ক্ষেত্রে সরদার ফজলুল করিমের যে প্রজ্ঞা তা আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি আমাদের বিশ্বাস করতে শিখিয়েছিলেন যে স্ফূলিঙ্গ একদিন দাবানল হয়ে জ্বলে উঠবেই। তিনি আমাদের যে জ্ঞান দিয়ে গেছেন তা অনুসরণ করেই আমরা বর্তমান বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। সভাপতির বক্তব্যে এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, সরদার ফজলুল করিম সামান্য অবস্থা থেকে নিজ প্রতিভা বলে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলেন। বিদ্যার সাথে আন্তরিক অনুভূতির সংযোগে তিনি জীবন বিনির্মাণ করেছিলেন এবং সমাজ পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। জ্ঞানতাত্ত্বিক জগতে তাঁর যে বিচরণ তা কেবল মার্কসবাদী চিন্তাধারার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি সারাজীবন মানবিক মূল্যবোধকে সবার উপরে স্থান দিয়েছেন। এ্যাথেনা গ্যালারিতে চিত্রপ্রদর্শনী দ্য বিউটি অব ড্রইং ॥ এথেনা গ্যালারি অব ফাইন আর্টসের সোমবার থেকে শুরু হলো ১৩ শিল্পীর যৌথ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। প্রগতি সরণির প্রদর্শনালয়টিতে আষাঢ়ের প্রথম সন্ধ্যায় দ্য বিউটি অব ড্রইং বা অঙ্কন সৌন্দর্য শিরোনামের প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। প্রখ্যাত শিল্পী জামাল আহমেদের পরিচালনায় প্রদর্শনালয়টির উদ্যোগে গত ৯ জুন থেকে ৩ দিনের একটি চিত্রাঙ্কন কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এই কর্মশালায় আঁকা চিত্রকর্ম নিয়ে এথেনা গ্যালারি অব ফাইন আর্টসের এই প্রদর্শনী। প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন দেশের প্রতিথযশা শিল্পী জামাল আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এ্যাথেনা গ্যালারির চেয়ারপার্সন নীলু রওশন মোরশেদ। আজ দেশবরেণ্য কবিদের কণ্ঠে কবিতাপাঠ ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে প্রতি মাসের নিয়মিত অনুষ্ঠানমালার ধারাবাহিকাতায় আজ মঙ্গলবার একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বিকেলে দেশবরেণ্য কবিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ। কবিতার সঙ্গে থাকে সঙ্গীতানুষ্ঠান।
×