ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরের সাখাওয়াতসহ ১২ রাজাকারের বিরুদ্ধে হত্যা ধর্ষণের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৪ জুন ২০১৫

যশোরের সাখাওয়াতসহ ১২ রাজাকারের বিরুদ্ধে হত্যা ধর্ষণের অভিযোগ

বিকাশ দত্ত ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোরের রাজাকার কমান্ডার জামায়াতে ইসলামীর সাবেক এমপি মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ১২ রাজাকারের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের মতো পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ধানম-ির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১২ রাজাকারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করবেন। রাজাকার কমান্ডার সাখাওয়াত ছাড়াও অন্যান্য যে ১১ রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে তারা হলেনÑ মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, মোঃ বিল্লাল হোসেন, শেখ মোঃ মজিবুর রহমান, মোঃ আব্দুল আজিম সরদার, মোঃ আজিম সরদার, কাজী ওয়াহেদুল ইসলাম, মোঃ লুৎফর মোড়ল, মোঃ আব্দুল খালেক মোড়ল, মোঃ আকরাম হোসেন, ওজিয়ার মোড়ল এবং মশিয়ার রহমান। এর মধ্যে ৪ জন গ্রেফতার হয়েছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেনÑ মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন, মোঃ বিল্লাল হোসেন, মোঃ আকরাম হোসেন এবং ওজিয়ার মোড়ল। তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, যশোরের এই ১২ রাজাকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছেÑ মুক্তিযুদ্ধের সময় আষাঢ় মাসের ২৭ তারিখে এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আটকে রেখে মাওলানা সাখাওয়াত নিজে ধর্ষণ করে। ভিকটিম মুক্তিযোদ্ধাদের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। দ্বিতীয় অভিযোগে রয়েছেÑ চাঁদ তুল্যা গাজি তার শিশুসন্তানসহ ২ জনকে হত্যা। তৃতীয় অভিযোগে রয়েছেÑ নুরুল উদ্দিন মোড়লকে অপহরণ করে আটক করা হয়। এরপর রাজাকাররা তাকে নির্যাতন করে। চতুর্থ অভিযোগে রয়েছেÑ চিংড়া গ্রামে আব্দুল মালেক সরদারকে অপহরণ করে আটক করা হয়। এর পর তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করে রাজাকার বাহিনী। সর্বশেষ পঞ্চম অভিযোগে রয়েছেÑ মহাদেবপুর গ্রামের মিজান শেখকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। একই সঙ্গে ২০ থেকে ২৩টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক খান জনকণ্ঠকে বলেছেন, যশোরের এই ১২ রাজাকারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আজ সাংবাদিকদের মাঝে তুলে ধরা হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। মামলার স্বার্থে এ রিপোর্ট দেয়ার পরও তদন্ত চলবে। তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, আজকের সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার প্রধান এমএ হান্নান খান ও সমন্বয়ক সানাউল হকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। এদিকে চলতি বছরের ১২ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে জড়িত আরও ১১ রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল-১। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। এ সময় ট্রাইব্যুনালে গ্রেফতারি পরোয়ানার জন্য শুনানি করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল ও প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা বেগম চমন।
×