ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের নার্সকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৩ জুন ২০১৫

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের নার্সকে শ্বাসরোধে  হত্যার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মিরপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নার্সকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম সোমা আক্তার (২৩)। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী আমিনুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে। হাসপাতালে স্ত্রী সোমার লাশ রেখে পালানোর সময় তাকে আটক করে পুলিশ। এদিকে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দু’জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে কলাবাগানে গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবক মারা গেছে। শুক্রবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার গভীররাতে রাজধানীর কালবাগানের গ্রীনরোডের কমফোর্ট হাসপাতালে স্ত্রী সোমা আক্তারের লাশ রেখে পালানোর সময় স্বামী আমিনুল ইসলামকে পুলিশ আটক করে। বেরিয়ে আসে নির্যাতনের পর সোমার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের গলায় দাগ রয়েছে। পুলিশ জানায়, সোমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে। এ জন্য নিহতের স্বামী আমিনুলকে আটক করা হয়েছে। তিনি তার স্ত্রীর লাশ রেখে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। মিরপুর থানার উপ-পরিদর্শক শাজাহান আলী জানান, খবর পেয়ে ধানম-ি থেকে তার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, আটককৃত আমিনুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি জানান, নিহত সোমা তার স্বামী আমিনুলকে নিয়ে মিরপুর থানাধীন কল্যাণপুরের ১১ নম্বর রোডের ৪৪ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। নিহতের চাচা নুরুল ইসলাম জানান, ভাতিজি সোমা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নার্সিংয়ে ইন্টার্নি করছিল। তার বাবার নাম তমিজ উদ্দিন মাস্টার। গ্রামের বাড়ি ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার গোপিনপুর গ্রামে। নিহতের চাচা নূরুল ইসলাম আরও জানান, প্রায় ৬ মাস আগে আমিনুল ইসলামের সঙ্গে সোমার বিয়ে হয়। বিয়ের আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরপরেও বেশ কিছু যৌতুক নিয়ে সোমাকে বিয়ে করে আমিনুল। তারপরেও আরও টাকার জন্য সোমার ওপর নির্যাতন চালাত আমিনুল। শেষে সোমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিজেই কালবাগান গ্রীনরোডের কমফোর্ট হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোমাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর হাসপাতালে ভাতিজি সোমার লাশ রেখে পালানোর সময় পুলিশ আমিনুলকে আটক করে। আমিনুল ইসলাম সরকারী চাকরিজীবী। সড়ক দুঘর্টনায় ২ জন নিহত ॥ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর গোলচত্বর এলাকায় সড়ক দুঘর্টনায় অজ্ঞাত (৩৫) এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক শফিউল আলম জানান, সকাল ৮টার দিকে বিমানবন্দর গোলচত্বরের সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় কোন একটি গাড়ি তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। এদিকে একইদিন সকালে যাত্রাবাড়ীর সাদ্দাম মার্কেটের সামনে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় সজীব (১৯) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে সজীবকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনদের বরাত দিয়ে মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক সেন্টু চন্দ্র দাস জানান, সজীব স্থানীয় একটি কারখানার শ্রমিক। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচরে। পরে পৃথক স্থান থেকে দুটি লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণে দগ্ধ আরেক নারীর মৃত্যু ॥ রাজধানীর কলাবাগানে গ্যাস লাইনের বিস্ফোরণে দগ্ধ রোজিনা বেগমের (৩৫) মৃত্যু হয়েছে। ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ড. পার্থশঙ্কর পাল জানান, রোজিনা বেগমের শরীরের ৩৯ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। নিহতের বাবার নাম ইয়াসিন মাঝি। গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার তালিখোলা গ্রামে। উল্লেখ্য, গত ৩০ মে সকালে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় একটি টিনশেড ভাড়া বাসায় গ্যাস লাইনে ছিদ্র থেকে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতে রোজিনাসহ তার পরিবারের সাতজন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে তার মা মমতাজ বেগম (৬০) গত ৪ জুন রাতে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। একই ঘটনায় মমতাজের ছেলে মোঃ সুমন ও তার স্ত্রী রেশমা আক্তার, নাতি রাব্বি, অয়ন (২০) ও বিথীও (১৪) ওই ঘটনায় দগ্ধ হন। বর্তমানে তিনি বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু ॥ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে পারভেজ (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের দুলাভাই জানান, নিজ বাসায় মোবাইলে চার্জ দিতে গেলে শ্যালক পারভেজ বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক পারভেজকে মৃত ঘোষণা করেন।
×