ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৩ জুন ২০১৫

আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ

সম্প্রতি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার ) সংক্ষেপে আরপিও সংশোধনের যে উদ্যোগ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গ্রহণ করেছে তা ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কেননা এবার নির্বাচন কমিশনের পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে তাদের প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে। ইসি সচিবালয় ও মাঠ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো এ সংক্রান্ত চিঠিতে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে, ‘আইনটি যুগোপযোগী করার জন্য বাস্তবতার নিরিখে কোন অনুচ্ছেদ সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন করা প্রয়োজন কিনা-যাচাই করে মতামত দেয়ার জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হলো।’ উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর জাতীয় সংসদে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারায় সংশোধনী এনে উপস্থাপিত গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধনী) আদেশ-২০১৩’ পাস করা হয়। এর আগে আইনে বলা ছিল, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন থেকে পূর্ববর্তী তিন বছরে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলে নিরবচ্ছিন্ন সদস্যপদ না থাকলে কোন ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। এটি কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়। বলা দরকার, দল পরিবর্তন করে কিংবা হঠাৎ দলে যোগ দিয়ে প্রার্থী হওয়ার সুযোগটি বাতিল করা হয় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি নিয়েই এ বিধান সংযুক্ত করা হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৩ সালে প্রণীত আইনে আরও যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছিল তার মধ্যে আছে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ৭৩’-এর অধীনে সংঘটিত অপরাধে দ-িত ব্যক্তিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, নির্বাচনে জামানতের টাকা ১০ হাজার থেকে ২০ হাজারে উন্নীত করা, প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ১৫ লাখ থেকে ২৫ লাখে উন্নীত করা, রাজনৈতিক দলের তহবিলে কোন ব্যক্তির অনুদানের পরিমাণ ১০ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা, কোন কোম্পানির অনুদান ২৫ লাখ থেকে ৫০ লাখে উন্নীত করা। আইনে যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্যতার বিষয়টি প্রশংসিত হলেও কিছু বিষয় নিয়ে সে সময় কোন কোন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। আইন পাসের আগে আরও চিন্তা-ভাবনা প্রয়োজন ছিল বলেও মত আসে। বিশেষ করে নতুন আইনের মধ্য দিয়ে সরকারের আমলাদের অবসর গ্রহণের পরপরই নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার পথ প্রশস্ত হলো কিনা এমন জিজ্ঞাসাই সে সময় বড় হয়ে উঠেছিল। আরপিও সংশোধনে বিভিন্ন মহলের অনেক গঠনমূলক প্রস্তাব থাকতে পারে। রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ আসতে পারে। এ সব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হলে সেগুলো থেকে উত্তম প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করায় সুবিধা হবে নির্বাচন কমিশনের। রাজনীতি পরিচালিত হবে রাজনীতিকদের মাধ্যমেইÑ এটাই প্রত্যাশিত। তাই আরপিও সংশোধনের নতুন উদ্যোগ থেকে ইতিবাচক কিছু বেরিয়ে আসলে তা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য ইতিবাচক হবে বলেই আমরা আশা করতে পারি।
×