ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১২ জুন ২০১৫

উবাচ

মুখোশ খুলবেন মঈন খান স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির প্রবক্তাই বিএনপি। জামায়াত-হেফাজতের সঙ্গে এই সখ্য হালে নয়, বরং দেশে জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বিএনপি নামের এই দলটির প্রতিষ্ঠাতা। নিজের ক্ষমতার চেয়ারকে পোক্ত করতে জিয়াউর রহমান সব থেকে বেশি ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়েছেন। উদার সংস্কৃতিমনা বাঙালীর মনে নানাভাবে বক্ররেখা টেনে দিয়ে বাঙালী জাতিসত্তার বাইরে ওরা হিন্দু আমরা মুসলমান এমন ধর্মীয় বিভেদ ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই তো সে দিনের কথা, জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তারা। আবার এখন সেই জামায়াতের অর্থে এবং সাংগঠনিক শক্তির ওপর ভর করে সব আন্দোলন চলে। বিএনপি নেতারাই বলেন, বিএনপির দায়িত্ব আন্দলনের ডাক দেয়া আর আন্দোলন করে দেয়ার দায়িত্ব জামায়াত পালন করবে। সেই বিএনপির এক নেতাই বলছেন, এবার ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করলে মুখোশ খুলে দেয়া হবে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের সাম্প্রতিক এমন মন্তব্য হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। তাও স্বাধীন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গোড়াপত্তনকারী জিয়াউর রহমানের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান ফ্রন্ট আয়োজিত এক প্রার্থনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধারণ করতে না পারলে নতুন প্রজন্মকে নিয়ে সামনে চলা কঠিন হয়ে পড়বে। মঈন খান বলেন, বিএনপি ধর্মীয় মূলবোধে বিশ্বাসী, ধর্মহীনতায় নয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানও ধর্মহীনতায় বিশ্বাস করতেন না। তিনি বলেন, সরকারদলীয় লোকজন বলার চেষ্টা করছে, আমরা ইসলামী দল। কিন্তু পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা ইসলামী দল নই। তবে আমরা ধর্মহীন নই। ‘মোদির সঙ্গে খালেদার কী আলোচনা জাতি জানতে চায়’ স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে গণতন্ত্র নেই এমন নালিশ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে মোদির সঙ্গে বিস্তারিত কী আলোচনা হলো বিএনপি চেয়ারপার্সনের তা আর কেউ জানে না। জানার কথাও না। এমনকি দলটি মোদির সঙ্গে দেখা করে এসে এ বিষয়ে আর কোন আলোচনাও করেনি। তারা কোন মূল্যায়ন সভাও করেনি। শুধুমাত্র বিএনপি একটি সংবাদ সম্মেলন করে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। সরকারপক্ষও কম যায় না। তারাও বলছে, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির একান্তে কী আলোচনা হয়েছে, সেটাও জাতি জানতে চায়। ‘বিএনপি যে কোন ইস্যু নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত’Ñ বিএনপির এমন বক্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপি একটি গণধিকৃত রাজনৈতিক দল, যার নেত্রী ব্যর্থ। এই ব্যর্থ নেত্রীর সঙ্গে আলাপ করে দেশের কোন উপকার হবে না।’ তিস্তা চুক্তি না হওয়া সরকারের ব্যর্থতা- বিএনপির এমন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরে তিস্তা চুক্তি হবে না, সেটি সবাই জানে। অথচ বিএনপি বলছে, এ বিষয়ে জাতি হতাশ। নরেন্দ্র মোদির এই সফরে জাতি হতাশ নয়, উচ্ছ্বসিত। দু’দেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হয়েছে।’ আওয়ামী লীগ এই নেতা বলেন, বিএনপি নেত্রী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন গঙ্গার পানি চুক্তির এজেন্ডা নিয়ে ভারত সফর করেছিলেন। কিন্তু দেশে ফিরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়টি তাঁর নাকি মনেই ছিল না। ‘ভাল মানুষকে খালেদা চিনতেই চায় না’ স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমার মনে তোমরা যে আঘাতটা দিছো, এটাও তো কাবার ঘরে লাগছেরে ভাই! তুমি আবার প্রধানমন্ত্রী হইতে চাও, প্রধানমন্ত্রী হয়ে আবার আঘাত দিবা এটা তো আল্লাহ ্য করবে না। আমার মনে এত আঘাত আমি সহ্য করব না। আক্ষেপের এই সুর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমানের কণ্ঠ থেকে শোনা গেল। সাম্প্রতিক ফাঁস হয়ে যাওয়া এক টেলি আলাপ থেকে মাহবুবুর রহমানের এই আক্ষেপের কথা জানা যায়। দলের সংস্কারপন্থী নেতা হিসেবে ওয়ান ইলেভেনের সময় জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে গেলে ভিন্নমতালম্বীরা বিএনপির প্রভাবশালী এই নেতাকে জুতোপেটা করে। আর তাতেই তিনি মনের গভীরে ভীষণ আঘাত পান, যা এখনও পুষে রেখেছেন। হৃদয়ের সেই রক্তক্ষরণ এতটাই বেশি যে, খালেদা জিয়াকে তিনি আর প্রধানমন্ত্রীর আসনেও দেখতে চান না। পাছে খালেদা মাহবুবের হৃদয় আবার চিরে ফালাফালা করে দেন। তিনি ওই টেলি আলাপে বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন শুধু তাঁর একার মনেই নয়, দলের ত্যাগী নেতা সাবেক মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মনেও অনেক দুঃখ দিয়েছেন। খন্দকার দেলোয়ারের সঙ্গে কথোপকথনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, খন্দকার দেলোয়ারের মনেও দুঃখ ছিল খালেদা জিয়ার প্রতি। আমাকে বলেছেন, যাক শেষ সময়ে আমাকে মহাসচিব করে গেছেন আমি তার সঙ্গে বেইমানী করব না। ওই আমিও কিন্তু করিনি। অন্যপক্ষের কথার পিঠে মাহবুব বলেন, সংবিধানে কোথাও বলা আছে নাকি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে হবে? তাঁরও তো একটি ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে। এভাবে করতে হলে সংবিধানে সংযোজন করে নাও। অন্য পাশ থেকে তখন বলা হয়, ভাল মানুষকে খালেদা জিয়া চিনতেই চায় না। ওই খানে তেলবাজি, তেল পার্টি। পাখি-বায়ু-জলের ভিসা লাগে না... মোদি স্টাফ রিপোর্টার ॥ তিস্তা চুক্তি না করতে পারলেও বাংলাদেশের মানুষকে আশাহত করতে চাননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলে গেছেন আশা রাখতে বিশ্বাস না হারাতে। পাখি, বাতাস এবং জলের কোন ভিসার দরকার হয় না। একদিন নিশ্চয়ই আমরা তিস্তা সমস্যার সমাধান করতে পারব। দু’দিনের সফর শেষে বাংলাদেশ ত্যাগের প্রাক্কালে গত রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত প্রায় সোয়া ঘণ্টাব্যাপী বক্তৃতায় হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া অনেক কথাই বলে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশের জনগণকে আশ্বস্ত করে মোদি বলেন, আমি বাংলাদেশকে নিয়ে চলতে এসেছি, কিন্তু ভারতেও আমাকে সব রাজ্যেকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে হয়। যখন বাংলাদেশে এসেছি তখন তিস্তা নদীর চুক্তি নিয়ে চলতেই হবে। তবে আমি বিশ্বাস করি, পাখি-বাতাস-জলের কোন ভিসা চাইতে হয় না। আর পানি কোন রাজনৈতিক ইস্যুও হতে পারে না। মানবিক মূল্যবোধ থেকেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের বিশ্বাস হারালে চলবে না, সবাই একজোট হয়েই বিষয়টির সমাধান করব। তিনি বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতে পথচলার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেছেন, আমরা (ভারত) বাংলাদেশের সঙ্গে আছি, দু’দেশ একসঙ্গে থেকেই সামনের দিকে চলব, বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়েই চলব। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমার চিন্তাভাবনা এক ও অভিন্ন- তা হলো উন্নতি, উন্নতি আর উন্নতি। তাই আমরা দু’দেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামনের দিকে, উন্নতির দিকে এগিয়ে যাব। দু’দেশের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, একটি বাক্যে যদি আমাকে বলতে হয় তাহলে বলব, লোকেরা মনে করত আমরা খুব আশপাশে রয়েছি, এখন বিশ্ববাসীকে বিশ্বাস করতে হবে আমরা আশপাশে রয়েছি, একসঙ্গেও রয়েছি। বাংলাদেশ যেভাবে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এই অগ্রযাত্রা কখনও থমকে দাঁড়াবে না। আমরা দুটি দেশ সারাবিশ্বের সামনে এখন সম্পর্কের সেতু হিসেবে দাঁড়িয়েছি। এ প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদি বিশ্ববাসীর সামনে প্রশ্ন রেখে বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ গোটা বিশ্বকে কী দিয়েছে, সন্ত্রাসবাদীরাই বা কী পেয়েছে? এদের কোন আদর্শ, সংস্কৃতি বা ঐতিহ্য নেই, এদের একটাই লক্ষ্য- তা হলো মানুষ হত্যা! আসলে এরা মানবতার শত্রু। ভারত গত ৪০ বছর ধরেই এই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আমাদের কত শত মানুষকে সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়ে জীবন দিতে হয়েছে, কত রক্ত ঝরেছে। তাই যারা মানবতায় বিশ্বাস করে তাদের একজোট হয়ে এসব মানবতার শত্রু সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে, এদের নির্মূল করতে হবে। সাহসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে তাঁর যে ‘জিরো টলারেন্স’ শক্ত অবস্থানের কথা সারাবিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন, এজন্য তাঁকে আমরা অভিনন্দন জানাই।
×