ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতিসংঘে ’১৮ সালেই আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়ার সিদ্ধান্ত

মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেতে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১২ জুন ২০১৫

মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেতে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ

এম শাহজাহান ॥ জাতিসংঘ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি দেবে। এই স্বীকৃতি অর্জনে যে তিনটি সূচক বিবেচনায় নেয়া হয় তা অর্জনে যথেষ্ট এগিয়েছে বাংলাদেশ। এই বিবেচনায় আগামী ২০১৮ সালে জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের এ প্রস্তাব গ্রহণ করে রূপকল্প-২০২১ সালেই বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি দেবে জাতিসংঘ। এ সংক্রান্ত অন্যান্য যেসব বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয় তাও সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। জানা গেছে, রূপকল্প-২১ সামনে রেখে ২০০৯ সালে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বতর্মান সরকারের যাত্রা শুরু হয়। টানা দ্বিতীয় বারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে রূপকল্প বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ওই সময়ে বিশ্বে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি পাবে। শুধু তাই নয় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসবে বাংলাদেশ। সূত্র মতে, মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেতে হলে প্রথমেই স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আর এক্ষেত্রে জাতিসংঘ তিনটি সূচক বিবেচনা করে থাকে। এগুলো হচ্ছেÑ মাথাপিছু জাতীয় আয়, মানবসম্পদের অবস্থান এবং অর্থনীতির ঝুঁকি। ইতোমধ্যে অর্থনীতির ঝুঁকি সূচকে বাংলাদেশ নির্ধারিত মাপকাঠি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। অন্য দুটো সূচকে খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে। এ কারণে ২০১৮ সালের মধ্যে তিনটি সূচকে নির্ধারিত প্রমাণ অর্জন করা সম্ভব হবে। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জনকণ্ঠকে বলেন, ২০২১সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে নিয়ে যাওয়া বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আশার কথা হলো, আগামী ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে কাতারে শামিল হবে। এ বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই স্বীকৃতি আসবে জাতিসংঘ থেকে। এ লক্ষ্যে আগামী ২০১৮ সালে জাতিসংঘের কাছে সরকার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব প্রেরণ করবে। মাথাপিছু জাতীয় আয়, মানবসম্পদের অবস্থান এবং অর্থনীতির ঝুঁকিগ্রস্ততা বিবেচনায় নিয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি দেয়। অর্থনীতির ঝুঁকিগ্রস্ততা সূচকে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। বাকি দুটোতেও অর্জন কাছাকাছি। এ কারণে ২০১৮ সালে তিনটি সূচকে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এদিকে রূপকল্প-২১ বাস্তবায়নের সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে এখন উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশের কাতারে শামিল হওয়ার নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমাদের স্বপ্নের দিগন্ত আরও প্রসারিত করেছি। ছয় শতাংশের বৃত্ত ভেঙ্গে উচ্চ প্রবৃদ্ধির সোপানে আরোহণ এবং মাথাপিছু আয়ের ধারাবাহিক উত্তরণ ঘটিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশের কাতারে শামিল হওয়া সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য। জানা গেছে, অর্থনৈতিক সাফল্যে আন্তর্জাতিক মূল্যায়নে সিটি গ্রুপের বিবেচনায় ২০১০ হতে ’৫০ কালপর্বে বিশ্বের ১১ দেশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে শীর্ষ পর্যায়ে থাকবে, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম। বিনিয়োগের আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে জেপি মরগানের ফ্রন্টিয়ার ফাইভ তালিকাতেও স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া প্রাইসওয়াটার হাউস কোপারস সাম্প্রতিক তাদের প্রতিবেদনে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি অর্জন করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
×