ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফতুল্লা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে খেলল বৃষ্টি

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ১২ জুন ২০১৫

ফতুল্লা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে খেলল বৃষ্টি

মিথুন আশরাফ ॥ খেলা প্রথমদিন যেখানে শেষ হয়েছে, দ্বিতীয় দিন সেখানেই আছে। ফতুল্লা টেস্টে খেলছে বৃষ্টি। আর সেই খেলায় দ্বিতীয় দিন একটি বলও গড়ায়নি। সকাল থেকে এমনই অবস্থা হয়েছে, বৃষ্টি পড়ছে তো পড়ছেই। বাংলাদেশ কিংবা ভারত, কোন দলের ক্রিকেটাররাই হোটেল ছেড়ে স্টেডিয়ামমুখী হননি! খেলা হবে, সেই সম্ভাবনাই যে দেখা যায়নি। শেষে দুপুর পৌনে দুইটায় দ্বিতীয় দিন পরিত্যক্ত ঘোষণাই দিয়ে দেয়া হলো। প্রথমদিন এক সেশনের মতো খেলা হয়নি। দ্বিতীয় দিন পুরো দিনটিই কাটল খেলাহীন। তাতে শিখর ধাওয়ানের অপরাজিত ১৫০ ও মুরলি বিজয়ের অপরাজিত ৮৯ রানে যে ভারত প্রথমদিনে বিনা উইকেটে ২৩৯ রান করেছিল, সেই স্থানেই খেলা আটকে আছে। আজ যে ম্যাচের তৃতীয় দিনে ধাওয়ান ও বিজয় ব্যাট করতে নামতে পারবেন তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। আবহাওয়ার পূর্বাভাস যে বৃষ্টি হওয়ার কথাই বলছে। বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের একমাত্র টেস্টে খেলা করছে বৃষ্টি। তাতে অবশ্য বাংলাদেশেরই লাভ হচ্ছে। হাতে যে ম্যাচের আছে তিনদিন, সে দিনগুলোতে খেলা হলেও ম্যাচ যে ড্র’ই হবে তা ধরেই নেয়া হচ্ছে। কোন ইনিংসই যে এখনও শেষ হয়নি। অন্তত সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারত হচ্ছে না। হার হলে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে। তাতে ১৮, ২১ ও ২৪ জুন যে তিন ওয়ানডে আছে, তা খেলতে নামার আগে বিশ্বাসে ঘাটতি নিয়েই নামত বাংলাদেশ। ফতুল্লা টেস্ট ড্র হলে, আত্মবিশ্বাসে কোন সমস্যাই হবে না। তাতে সিরিজ জয় অথবা অন্তত একটি ওয়ানডে জেতার যে স্বপ্ন বুনা আছে, তাতে সাফল্যও মিলে যেতে পারে। বাংলাদেশের জন্য যেখানে লাভের অঙ্কের হিসেব হচ্ছে, ভারতের জন্য সেখানে আফসোসের অঙ্কই মিলছে। ম্যাচটি হলে প্রথমদিনের হিসেবে ‘ওয়ানডে স্টাইলে’ খেলে যে ৫৬ ওভারেই ২৩৯ রান করে ফেলেছিল ভারত, তাতে ম্যাচ ভারতের দিকেই হেলে ছিল। বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা যদি বিশেষ কোন ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখাতে পারত তাহলে পাকিস্তানের বিপক্ষে যে খুলনা টেস্টে ড্র করা গেছে, সেই রকম কিছুই ঘটতে পারত। কিন্তু প্রথমদিনের আলামত বাংলাদেশের বিপদের কথাই বলেছে। তবে প্রথমদিনের ৩৪ ও দ্বিতীয়দিনের ৯০ ওভার যে খেলা হলো না, চার সেশনে একটি বলও গড়াল না, তাতে ভারতের আফসোস করার যথেষ্ট কারণই আছে। সেই আফসোস কী ভারতের হচ্ছে না? হওয়ারই কথা। ভারতের আফসোস হলেও বাংলাদেশের লাভই হচ্ছে প্রধান ভাবনা। তাতে লাভ হচ্ছে বাংলাদেশেরই। এ ম্যাচে যদি বাংলাদেশের হার হয়, তাহলে শুধু হার নিয়ে আলোচনা হতো না, একাদশে যে মাত্র এক পেসার নিয়ে খেলা হচ্ছে, সেই সমালোচনায় জর্জরিত হতেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে। তা থেকে হয়ত বেঁচে যাচ্ছেন। অবশ্য খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের দিকে নজর দিলে যে কোন কিছুই ঘটতে পারত। ভারতকে হারিয়ে দেবে বাংলাদেশ। এমন ভাবনা কাররই হচ্ছে না। তবে ভারতকে জিততে না দেয়ার স্বপ্ন পূরণ হতেই পারত। ভারতের মূল শক্তি ব্যাটিং। প্রথমদিনে সেই শক্তি ভারত দেখিয়েছেও। তবে বাংলাদেশ যে একাদশ সাজিয়েছে, ঠিক পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টের মতো ৭ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলছে, তাতে এবারও যে বাংলাদেশ ব্যাটিং নৈপুণ্যেই ম্যাচ ড্র করে ফেলত না তা বলা মুশকিল। এখনও ম্যাচের তিনদিন বাকি আছে। এ তিনদিনে কি হবে, তাই এখন সবার ভাবনায় কাজ করছে। ম্যাচ যে ড্র’র দিকেই এগিয়ে চলছে, তাও বোঝা যাচ্ছে। তবে চারদিনে বাংলাদেশ হেরেছে, এমন ম্যাচও খোঁজা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, সর্বশেষ যে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে, মিরপুর টেস্টই চারদিনে শেষ হয়েছে। হেরেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে গতবছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ টেস্টে হেরেছে, সেই টেস্টও শেষ হয়েছে চারদিনে। গত বছর মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দিয়েই যে বাংলাদেশ বছরটি শুরু করেছিল, সেই টেস্টেও চারদিনে হেরেছে বাংলাদেশ। গত বছর ও এ বছর ফতুল্লা টেস্টের আগ পর্যন্ত ৯ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, তাতে চার টেস্ট হেরেছে। এর মধ্যে তিন টেস্টেই চারদিনে হেরেছে বাংলাদেশ। এ হিসেব ধরা হলে, এখনও বাংলাদেশ হারতেও পারে। যদি হাতে থাকা তিনদিন পুরো খেলা হয়, ভারত যে অবস্থায় আছে সেখান থেকেই ইনিংস ঘোষণা করে দেয়া হয়, বাংলাদেশ ব্যাটিং শক্তির ব্যবহার করতে না পারে; তাহলে ভাগ্যে হারের দুর্ভাগ্যও যোগ হয়ে যেতে পারে। তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা এখনও আছে। বাংলাদেশও শক্তিশালী দল। উইকেটও ব্যাটিং নির্ভর। তাতে ম্যাচ ড্র’র দিকেই যে হেলে পড়েছে, আপাতত সেই ভাবনাই সবার মধ্যে কাজ করছে। দিন শেষে অবশ্য অন্য কোন দিক নিয়ে নয়, মুশফিক কিংবা কোহলিবাহিনী নয়, ফতুল্লা টেস্টে যে খেলছে বৃষ্টিই, সেই ভাবনাতেই পড়ে থাকতে হচ্ছে।
×