ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ

হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে চায় মস্কো

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১২ জুন ২০১৫

হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে চায় মস্কো

ইউক্রেনীয় প্রধানমন্ত্রী আর্সেনী ইয়াৎসেনিউক বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের লক্ষ্য হচ্ছে সমগ্র ইউক্রেনের ওপর মস্কোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং তাই, ১০ হাজার রুশ সৈন্যকে হটিয়ে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও সামরিক সহযোগিতা প্রয়োজন দেশটির। তিনি বলেন, পুতিনের উপলব্ধির জন্য এটাই আমাদের একমাত্র ভাষা। আমাদের অনড় থাকতে হবে, হটে যাওয়া চলবে না। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট অনলাইনের। ইয়াৎসেনিউক বুধবার ওয়াশিংটন পোস্ট এডিটোরিয়াল বোর্ড পরিদর্শনকালে ওই মন্তব্য করছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের অবরুদ্ধ জাতির জন্য সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রী নাতালি জারেস্কোকে সঙ্গে নিয়ে ওয়াশিংটনে যে সকল প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন ওয়াশিংটন পোস্ট এডিটোরিয়াল বোর্ড সেগুলোর অন্যতম। তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অফিস পরিদর্শন ও কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এ কংগ্রেস সদস্যরা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের জন্য আরও অস্ত্র সরবরাহের জন্য প্রেসিডেন্ট ওবামার কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। কিন্তু হোয়াইট হাউস মরণঘাতী অস্ত্র প্রদানে দ্বিধা করেছে পাছে রাশিয়াকে উস্কে দেয়া হয় এবং এ সংঘাত আরও বৃদ্ধি পায় এ আশঙ্কায়। ইয়াৎসেনিউক বলেন, তিনি আশা করেন, তার এ সফরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের এবং অন্যান্য দেশে আন্তর্জাতিক সঙ্কটের এ জরুরী মুহূর্তে আমেরিকান অনুভূতির পুরোভাগে নিয়ে যাবে ইউক্রেনকে। তিনি পুতিনের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করে কথা বলছিলেন। তিনি তেলের মূল্য পড়ে যাওয়া এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে উদ্ভূত রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ দুর্দশা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার জন্য এবং হারিয়ে যাওয়া সাম্রাজ্যের জন্য রুশদের শোক অনুভূতিতে নাড়া দেয়ার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশের প্রতি সমর্থন প্রকাশের জন্য রুশ নেতাকে অভিযুক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুতিন সুদূরপ্রসারী জাতীয়তাবাদী ভাবাবেঘ নিয়ে খেলছেন যার এখনও অস্তিত্ব রয়েছে রাশিয়ায়। তারা মনে করেন, ইউক্রেন ব্যতীত তাদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, পুতিন সমগ্র উইক্রেন দখলে নিতে চান, কোন সন্দেহের অবকাশ নেই এখানে। তার চরম লক্ষ্য হচ্ছে, পাশ্চাত্যের সঙ্গে লড়াই করা এবং পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে জয়ী হওয়া। আর এ যুদ্ধে রণাঙ্গনে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের সামরিক সমস্যার মতো রয়েছে বিস্তর অর্থনৈতিক সমস্যা। রাশিয়া ২০১৪-এর মার্চে ক্রিমিয়া সংযুক্ত করে নিলে দুর্বল হয়ে পড়ে ইউক্রেন। তারপর থেকেই কিয়েভ অভিযোগ করে আসছে, রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র ও সৈন্য সরবরাহ করে এ শিল্পাঞ্চলে গৃহযুদ্ধকে উস্কে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও উইক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থা এর পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করলেও মস্কো এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে তীব্রভাবে। ইউক্রেনে মুদ্রাস্ফীতি আজ নিয়ন্ত্রণহীন। সরকারকে সামাজিক কর্মসূচী এবং বেশকিছু ভর্তুকি বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। ইয়াৎসেনিউক বলেন, দেশে কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। মার্কিন বিনিয়োগ ছাড়া আমরা তা সম্ভব করে তুলতে পারছি না। তিনি বলেন, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য না হলেও তিনি প্রতিটি দেশের কাছে ইউক্রেনের অবস্থান তুলে ধরছেন। রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো উচিত ন্যাটো। আমরা ব্যর্থ হলে তা হবে সমগ্র পৃথিবীর ব্যর্থতা।
×