ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাইবার অপরাধ নির্মূলে নতুন আইন হবে ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১০ জুন ২০১৫

সাইবার অপরাধ নির্মূলে নতুন আইন হবে ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডিজিটাল অপরাধ নির্মূলে সরকার নতুন আইন করার চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক। এছাড়া ব্লগার হত্যাকারীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আইনমন্ত্রী বলেন, ব্লগাররা স্বাধীনভাবে নিজেদের মনোভাব প্রকাশ করবেন। লেখালেখি করবেন। তবে যারা ব্লগারদের টার্গেট করে হামলা ও হত্যার ষড়যন্ত্র করছে তাদের নির্মূলে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে আয়োজিত স্বাধীন গণমাধ্যমের অবস্থান ও তাৎপর্যবিষয়ক ‘কনসালটেশন উইথ পার্লামেন্টারিয়ান্স দ্যা আইসিটি এ্যাক্ট ২০০৬’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা নতুন আইন করার চাইতে যেসব আইন আছে তা পরিস্থিতি ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রয়োজনে সংশোধনী এনে যুগোপযোগী করতে চাই। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছে। সম্প্রতি ডিজিটাল অপরাধও বেড়েছে। ডিজিটাল অপরাধ নির্মূলে নতুন আইন করার চিন্তা করছে সরকার। আনিসুল হক আরও বলেন, ব্লগারদের অবস্থান ও আইডেন্টিফিকেশন নিয়ে অনেকে কথা বলছেন। ব্লগাররা স্বাধীনভাবে নিজেদের মনোভাব প্রকাশ করবেন। লেখালেখি করবেন। তবে যারা ব্লগারদের টার্গেট করে হামলা ও হত্যার ষড়যন্ত্র করছে তাদের নির্মূলে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমাদের চলতে হবে। আইসিটি এ্যাক্ট ২০০৬-এর পরিবর্তন, সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিশেষ অতিথি তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, প্রতি ১২ সেকেন্ডে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী বাড়ছে, যা আমাদের জন্মহারের চেয়ে বেশি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২০০৮ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল মাত্র ১০ লাখ। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটির ওপর। তাতে দেখা যাচ্ছে ফেসবুক ইউজার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার বাড়ছে। তিনি বলেন, এখন কম্পিউটার শুধু টাইপরাইটারের কাজই করছে না, বহু হিসাব-নিকাশে ব্যবহার করা হচ্ছে। জনাব পলক বলেন, আইনের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য আইন। তিনি আরও বলেন, অনলাইনে কোন কিছু প্রকাশ করলে তা দ্রুত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু অফলাইনে তার প্রভাব তেমন একটা পড়ে না। তাই বিশাল এই অনলাইনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে অনলাইন আইন প্রয়োগ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া ২শ’ বছর আগের আইনেও সংশোধন প্রয়োজন। পলক আরও বলেন, সাইবার অপরাধ যত দ্রুত প্রসার ঘটছে তত দ্রুত আইন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। তাই আইসিটি এ্যাক্ট নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনার জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছি। এই সাইটে সকলেই মতামত দিতে পারবে। আর সকলের মতামতের ভিত্তিতেই আইন সংশোধন করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের সমগ্র আইন ব্যবস্থায় ত্রুটি রয়েছে। কোন কোন আইন আছে, যা শত বছর আগের। কিন্তু এই ২ শ’ বছর আগের আইন এই ডিজিটাল যুগে প্রয়োগযোগ্য নয়। তাই আমাদের কমপক্ষে শতাধিক আইন পরিবর্তন করতে হবে। তিনি বলেন, ব্লগারদের একটা ক্যাটাগরিতে রাখতে হবে। ব্লগাররা আসলে কী: তারা কি সাংবাদিক, নাকি অন্য কিছু; কোন্ ক্যাটাগরিতে পড়ে তা স্পষ্ট করতে হবে। অনুষ্ঠানে মূল প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন আর্টিক্যাল ১৯-এর নির্বাহী পরিচালক থমাস হিউজ। তাহমিনা রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের পলিটিক্যাল শাখার প্রধান এ্যাড্রিয়ান জনস, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি, সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার, কাজী ফিরোজ রশিদ, হোসনে আরা বেগম ডালিয়া। আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ঢাবি শিক্ষক ড. মাহমুদুর রহমান খান। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য রস্তম আলী, বিটিআরসির কমিশনার সালেহ আহমেদ হাকিম, ল্য কমিশনের সদস্য ড. শাহ আলম, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ইরিন সুলতানা ও মাইনুদ্দিন মাইনুল, গাজী টিভির নিউজ এডিটর অঞ্জন রায়।
×