ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লভ্যাংশ হাতে পাবে না মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীরা

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১০ জুন ২০১৫

লভ্যাংশ হাতে পাবে না মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্রোকারেজ হাউসের মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত কোম্পানি বা মিউচুয়াল ফান্ড ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ আর কখনই সরাসরি পাবেন না। এ লভ্যাংশ জমা হবে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ বিষয়ে গত ১২ মে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি সেদিন থেকেই কার্যকর হয়েছে। এর আগে বিএসইসি জানিয়েছিল, তাদের সিদ্ধান্তের আগে যেসব কোম্পানির রেকর্ড তারিখ পার হয়েছে, সেগুলোর লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীই পাবেন। সিদ্ধান্তের পর থেকে যেসব কোম্পানি বা ফান্ডের রেকর্ড তারিখ পড়বে, সেগুলোর অর্থ যাবে ঋণদাতা ব্রোকারের হিসাবে। এদিকে ওই সিদ্ধান্ত বিষয়ে বিএসইসির ব্যাখ্যায় অনেক বিনিয়োগকারী আশায় বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু পুরনো রেকর্ড তারিখ বিবেচনায় না নেয়ার খবরে তাদের অনেকের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীদের বক্তব্য, পুঁজিবাজার ধসে এমনিতেই তারা প্রায় সর্বস্বান্ত। তাই লভ্যাংশের অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার সিদ্ধান্তটি তাদের জন্য ছিল বড় আঘাত। এর মধ্যেই কিছু খড়কুটো ধরে তারা অথৈ সাগরে ভেসে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু বিএসইসির সিদ্ধান্তের আগে পার হয়ে যাওয়া রেকর্ড তারিখের লভ্যাংশ থেকেও বঞ্চিত হওয়ার খবরে সেটিও সরে গেছে। তারা এটিকে চরম অমানবিক বলে মনে করছেন। উল্লেখ, গত ১২ মে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৫৪৩তম কমিশন সভায় মার্জিনধারীদের লভ্যাংশ ব্রোকার হাউসে পাঠানোর সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুসারে, ডিপি তথা ব্রোকার হাউস তার প্রতিষ্ঠানের মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীদের নাম ও বিও হিসাবের তালিকা সংশ্লিষ্ট কোম্পানিতে পাঠাবে। কোম্পানি সংশ্লিষ্ট এসব বিনিয়োগকারীর প্রাপ্য লভ্যাংশের অর্থ সরাসরি ব্রোকার হাউসের ব্যাংক হিসাবে জমা দেবে; অথবা ওই পরিমাণ অর্থের চেক (ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট) দেবে। পরে সেখান থেকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তাদের প্রাপ্য লভ্যাংশ বিতরণ করবে সংশ্লিষ্ট ব্রোকার হাউস। বিনিয়োগকারীর ইক্যুইটি ঋণাত্মক হলে লভ্যাংশের অর্থে ঋণের কিছুটা সমন্বয় করা হবে। এছাড়া মার্জিনধারী বিনিয়োগকারীরা কোন কোম্পানি ঘোষিত রাইট শেয়ার রিনানসিয়েশন বা অন্য কারো নামে স্থানান্তর করতে পারবেন না। তবে নিজে ওই রাইট শেয়ার কিনতে পারবেন। স্টক ব্রোকাররা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্রোকারদের বক্তব্য অনেক বিনিয়োগকারীর ইক্যুইটি (নিজস্ব অর্থ) ঋণাত্মক হয়ে পড়লেও তারা নতুন করে মার্জিন বা টাকা জমা দিচ্ছে না। তাদের হিসাব থেকে কোন সুদও পাচ্ছে না ঋণদাতা ব্রোকার হাউস। কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড ঘোষিত লভ্যাংশের অর্থ সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়ায় তারা ঠিকই লাভবান হচ্ছে। তাই এ লভ্যাংশের উপর তাদের (ব্রোকার হাউস) অধিকার দেয়া উচিত। মূলত ব্রোকারদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই বিএসইসি মার্জিনধারীদের প্রাপ্য লভ্যাংশ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এখন প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই সেটি কার্যকর হয়ে গেছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। তবে আগে বলা হয়েছিল, যেসব কোম্পানির রেকর্ড ডেট আগে শেষ হয়েছে গেছে সেটি আর কার্যকর হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি আর টিকলো না। উল্লেখ, গত ৭ জুন তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি শাশা ডেনিমস এবং এ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস লিমিটেড ব্রোকার হাউসগুলোর কাছে মার্জিনধারী বিনিয়োগকারীদের তালিকা চায় ব্রোকার হাউসগুলোর কাছে। বার্ষিক সাধারণ সভা ও লভ্যাংশের জন্য ঘোষিত রেকর্ড তারিখই বিএসইসির প্রজ্ঞাপন জারি আগে পার হয়েছে। এর মধ্যে শাশা ডেনিমসের রেকর্ড তারিখ ছিল ১২ মে, আর এ্যাক্টিভ ফাইনের ২৩ এপ্রিল।
×