ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৫০ লাখ জাল টাকা ও সরঞ্জামসহ ৬ জন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১০ জুন ২০১৫

৫০ লাখ জাল টাকা ও সরঞ্জামসহ ৬ জন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী থেকে পঞ্চাশ লাখ জালটাকা ও প্রায় পাঁচ কোটি জালটাকা তৈরির সরঞ্জামসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আসন্ন রমজানে গ্রেফতারকৃতদের সারাদেশে পাঁচ কোটি জালটাকা ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল। জালটাকা ছাড়াও ভারতীয় রুপী, মার্কিন ডলার ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মুদ্রা তৈরিতে দক্ষ গ্রেফতারকৃতরা। গত সোমবার রাত নয়টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম ও আবু নাসের জনির সরাসরি নেতৃত্বে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন মধ্যমনিপুর আদর্শ রোডের একটি বাড়িতে অভিযান শুরু হয়। মধ্যরাত পর্যন্ত চলা সেই অভিযানে গ্রেফতার হয় জালমুদ্রা তৈরি চক্রের মূলহোতা মোঃ শফিকুল ইসলাম ওরফে শামীম ও তার সহযোগী মোঃ সোহাগ অধিকারী, মোঃ সুমন আহমেদ, মোঃ বায়েজীদ উদ্দিন, মোঃ সিদ্দিকুর রহমান এবং মোছাঃ জেসমিন আক্তার। গ্রেফতারকৃতদের বয়স ২৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পুরোপুরি ছাপা ও অর্ধছাপা এক হাজার ও পাঁচশ’ টাকার নোটের ৫০ লাখ জালটাকা, জালটাকা তৈরির কাগজ, ১২টি ফ্রেম, রং, নিরাপত্তা সুতো, তিনটি ল্যাপটপ, একটি ডেক্সটপ, তিনটি প্রিন্টার, এক হাজার ও পাঁচশ’ টাকা লেখা জলছাপ দেয়া বারো বান্ডিল কাগজসহ অন্যান্য সরঞ্জাম। মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির উত্তর বিভাগের উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম জানান, গ্রেফতারকৃত শফিকুল প্রায় সাত বছর যাবত জালটাকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ঢাকায় স্বল্প সময়ের জন্য বাসা ভাড়া নিয়ে জালটাকা তৈরির কারখানা স্থাপন করে। তারা ভারতীয় রুপি, ডলার, ইউরোসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মুদ্রা তৈরিতেও পারদর্শী। এসব জালটাকা নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারজাত করা হয়ে থাকে। চক্রের সদস্যরা তিন ধাপে কাজ করে। প্রথম ধাপের সদস্যরা জালটাকা ও নিরাপত্তা সুতো তৈরি করে। দ্বিতীয় ধাপের সদস্যরা জালটাকা সংগ্রহ করে। আর তৃতীয় ধাপের সদস্যরা সারাদেশে নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জালটাকা ছড়িয়ে দেয়। জালটাকা উৎপাদনকারীরা প্রতিলাখ জালটাকা ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। দ্বিতীয় ধাপে প্রতিলাখ জালটাকা ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। চলতি বছর গ্রেফতারকৃত চক্রটি জালটাকা বাজারে ছাড়তে পারেনি। ছাড়ার জন্য জালটাকা তৈরি করছিল। মূলত ঈদ, পুজোসহ বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে তারা জালটাকার ব্যবসা করে। জব্দকৃত জালটাকা আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। সে অনুযায়ী জালটাকা তৈরি হচ্ছিল। ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, গত এক বছরে জালটাকা তৈরি চক্রের ৪৭ জন গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও কারাগারে। বাকিরা জামিনে মুক্ত। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার মাশরুক খালেদ, পশ্চিম বিভাগের উপকমিশনার সাজ্জাদুল ইসলাম, মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত উপকমিশনার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার উপস্থিত ছিলেন।
×