ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাউফলে আবাসন প্রকল্পের ১৮০ ঘরে গরু-ছাগল

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ১০ জুন ২০১৫

বাউফলে আবাসন প্রকল্পের ১৮০ ঘরে গরু-ছাগল

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ৯ জুন ॥ বাউফলের দক্ষিণ-কর্পুরকাঠী ও বটকাজল দুইটি আবাসন প্রকল্পে এখন আর ভূমিহীনদের বসবাস নেই। ১৮০টি পরিবারের জন্য নির্মিত এই দুই আবাসন প্রকল্পে এখন মাত্র ২৭টি ভুমিহীন পরিবার বসবাস করছে। পরিত্যক্ত ঘরগুলো ব্যবহার হচ্ছে প্রভাবশালীদের গোয়ালঘর আর মাদকসেবীদের নেশার আড্ডায়। জানা গেছে, জাপান সরকারের অর্থায়নে ২০০৮ সালে কর্পুরকাঠী আবাসন প্রকল্পটির উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই সমস্যার অন্ত নেই এখানে। নেই স্কুল, মসজিদ, কবরস্থান ও যাতায়াতের রাস্তা। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্যানেটারি লেট্রিন ও গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলে সেগুলো ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে আছে। নলকূপে উঠছে না পানি। নির্মাণের পর অকেজো হয়ে পড়লে সংস্কার না হওয়ায় দক্ষিণ কর্পুরকাঠী আবাসনের ১০০টি ঘরের অধিকাংশই এখন বসবাসের অনুপযোগী। বাসযোগ্য পরিবেশ না থাকায় অনেকে আবাসন ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। মাত্র ১৫টি পরিবার বসবাস করছেন প্রকল্প এলাকায়। পরিত্যক্ত ওই ঘরগুলো গোয়ালঘর হিসেবে ব্যবহার করছে স্থানীয় কয়েক প্রভাবশালী। আবাসন প্রকল্পের ওই পরিত্যক্ত ঘরে গরু-ছাগলের বাস। সন্ধ্যার পরে কোন কোন ঘরে বসে মাদকসেবীদের নেশার আসর। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে এই আবাসন প্রকল্পের কোন তথ্য নেই। প্রকল্পের ফাইল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সহকারী মোঃ ইউনুস মিয়া। একই অবস্থা নওমালা ইউপির বটকাজল আবাসন প্রকল্পের (ফেইজ-২)। সরেজমিনে দেখা যায়, ৮০টি পরিবারের জন্য নির্মিত ঘরগুলোর মধ্যে সেখানে বাস করছে ১২টি পরিবার। ঘরের চালার টিন মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে চালার টিনের ছিদ্র দিয়ে। চুরি হয়ে যাচ্ছে পরিত্যক্ত ঘরের টিন। ১০টি গভীর নলকূপের মধ্যে ৭টিই বিকল। টয়লেটগুলো চাওনি ও টিনের বেড়া ভেঙ্গে গেছে। পানি সরবরাহ করার জন্য নেই কোন পুকুরের ব্যবস্থা। যেন অসহায় হতদরিদ্রদের এক দুর্বিষহ জীবন-যাপন। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে বটকাজল অবাসন প্রকল্পের প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারের জন্য ০.০৪৪ একর করে ৮০টি পরিবারের জন্য মোট ৩.৫৫ একর জমি বরাদ্দের দলিল হস্তান্তর করা হয়েছ্।ে এছাড়া ভূমিহীন পরিবারদের জন্য ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা ঋণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু আবাসন প্রকল্পের কোন পরিবার সে ঋণ নেয়নি। ওই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা দুই সন্তানের জননী জোসনা বেগম জানান, স্বামী আবুল সরদারের নিজস্ব কোন জায়গা জমি না থাকায় নিরুপায় হয়ে ছেলে-সন্তান নিয়ে ওঠেন তিনি আবাসন প্রকল্পে। জবনযাপনের ন্যূনতম কোন সুযোগ-সুবিধা এখানে নেই। বহু কষ্ট করে দিন মজুরের কাজ করে দিন যাপন করছেন তিনি। নাগরিক সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন আবাসনের শতাধিক নারী-পুরুষ।
×