ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয় দালালের দখলে

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ১০ জুন ২০১৫

ময়মনসিংহ বিআরটিএ  কার্যালয় দালালের  দখলে

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ সংঘবদ্ধ দালালদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয়। জেলা প্রশাসনের কালেক্টরেট ভবনের নিচের এই কার্যালয়টিতে তদবির ছাড়া মিলছে না কোন লাইসেন্স। অভিযোগ, কার্যালয়ের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজশে দালাল চক্র লাইসেন্স প্রত্যাশীদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ। এর ভাগ যাচ্ছে ওপর মহলেও! স্থানীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীন নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলা। যানবাহনের ড্রাইভিং লাইসেন্স, লাইসেন্স নবায়ন, রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, মালিকানার পরিবর্তন, রুট পারমিট ও ট্যাক্স টোকেনসহ যানবাহনের বৈধতার জন্য যাবতীয় কাজের সরকারী স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হচ্ছে এই বিআরটিএ। এসব কাজের জন্য যানবাহন মালিক ও চালকদের এই কার্যালয়ে ধরনা দিতে হয়। এই সুযোগে বিআরটিএ ময়মনসিংহ কার্যালয়ে সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের উদ্ভব। চক্রটি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে ঘুষ দুর্নীতি আর হয়রানির আখড়ায় পরিণত করেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নানা কাগজপত্রের ঘাটতির কথা বলে যানবাহন মালিক ও চালকদের হয়রানি করছে অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে বাধ্য হয়েই যানবাহন মালিক ও চালকরা দালালদের শরণাপন্ন হচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, দালালদের মাধ্যমে অফিসে কাগজপত্র জমা দিলে দ্রুত কাজ হয়। অন্যথায় পদে পদে হয়রানি। সোমবার সকালে ময়মনসিংহ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, মুক্তাগাছার সুভ্রত নামে এক দালাল অফিসের কর্মচারীদের সামনেই ফাইলপত্র ঘাটাঘাটি করছে। অফিসের করণিক মতিউর রহমানের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে এর কোন সদুত্তর মেলেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একাধিক দালাল নিয়মিত অফিসের চেয়ার-টেবিলে বসেই লোকজনদের সঙ্গে টাকা লেনদেন করছে। দালালদের একটি সূত্র জানায়, অফিসের করণিক হারুন অর রশিদের মাধ্যমে কাজ করতে তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। টাঙ্গাইলের কোঠায় রেজিস্ট্রেশন নম্বর না থাকায় ময়মনসিংহের শোরুম দেখিয়ে সিএনজি অটোরিক্সার রেজিস্ট্রেশন নম্বর পেতে মধ্যস্থতা করছে এই হারুন। জানা যায়, সিএনজি রেজিস্ট্রেশন নগদ ৫ হাজার টাকা, মালিকানা বদল ১৫০০-২০০০ টাকা, রুট পারমিট ১ হাজার টাকা ও হোন্ডা রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে অফিস খরচের নামে। প্রচার রয়েছে, বিআরটিএ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর থেকে এটিএম জালাল উদ্দিন উর্ধতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ফাইল গুনে অফিস খরচ আদায় করছেন। তবে অফিস খরচ আদায়ের কথা অস্বীকার করলেও লোকবল সঙ্কটের অজুহাতে অফিসে সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের কথা অকপটে স্বীকার করেন এই কর্মকর্তা।
×