ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

না’গঞ্জে ৭ খুন

অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদনের শুনানি ॥ আদেশ ৮ জুলাই

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৯ জুন ২০১৫

অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদনের শুনানি ॥ আদেশ ৮ জুলাই

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ৮ জুন ॥ নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার চার্জশীটের বিরুদ্ধে বাদী নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির নারাজি আবেদনের শুনানি সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচএম শফিকুল ইসলামের আদালতে শুনানি শেষে ৮ জুলাই পুনরায় শুনানি ও আদেশের দিন ধার্য করা হয়। এ সময় আদালতে র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (অব) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব) এমএম রানাসহ মামলার ৩২ আসামির উপস্থিতিতে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তবে সাত খুনের ব্যাপারে দায়ের করা অপর মামলার বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল পুলিশের দেয়া এ অভিযোগপত্রের ব্যাপারে তার কোন আপত্তি নেই বলে আদালতে জানিয়েছেন। জানা গেছে, গত ৯ এপ্রিল সাত খুনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ওসি মামুনুর রশিদ ম-ল নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে র‌্যাব-১১ এর সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (অব) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব) এসএম রানাসহ ১৭ র‌্যাব সদস্য ও কাউন্সিলর নূর হোসেনের সহযোগীসহ মোট ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ২২ জন কারাগারে আটক রয়েছে। অপরদিকে ভারতের কলকাতার জেলহাজতে নূর হোসেন আটক আছেন। এছাড়া আরও ১২ আসামি পলাতক রয়েছে। এদিকে অভিযোগপত্র থেকে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী বিউটির দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত ৬ আসামির মধ্যে পাঁচ আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, ঠিকাদার ও নিহত নজরুলের চাচাশ্বশুর হাসমত আলী হাসু, আমিনুল ইসলাম রাজু, ইকবাল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন আশিককে অব্যাহতি দেয়া হয়। ফলে গত ১১ মে আদালতে সেলিনা ইসলাম বিউটি চার্জশীটের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। নারাজি আবেদনে নয়টি কারণ উল্লেখ করা হয়। ফতুল্লা থানায় দায়ের করা একটি মামলার বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি জানান, এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র কোনমতেই সুষ্ঠু হতে পারে না। তিনি জানান, নারাজি আবেদন মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত আদালতে তার আবেদন অব্যাহত থাকবে। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মোঃ সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, অভিযোগপত্রে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে এবং হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত অনেককেই বাদ দেয়া হয়েছে। তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তর করার জন্য আদালতে আবেদন জানান। তিনি আরও জানান, অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন গ্রহণের বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। ৮ জুলাই আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি ফজলুর রহমান জানান, সাত খুনের ঘটনায় নিহত চন্দন সরকারের পরিবার চার্জশীটে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত হওয়ায় সেলিনা ইসলাম বিউটির নারাজি আবেদন বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আগামী ৮ জুলাই আদালত পরবর্তী শুনানি ও আদেশ প্রদানের দিন ধার্য করেছেন। উল্লেখ্য গত বছরের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার, নজরুলের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, যুবলীগ নেতা ও নজরুলের সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, স্বপনের প্রাইভেটকারচালক জাহাঙ্গীর ও চন্দন সরকারের প্রাইভেটকার চালক ইব্রাহিমকে অপহরণ করা হয়। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দর থানার কলাগাছিয়া থেকে নজরুল ও চন্দন সরকারসহ ছয়জন এবং পরদিন সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ফতুল্লায় থানায় নিহত নজরুলের স্ত্রী বিউটি ও নিহত চন্দন সরকারের জামাতা ডাঃ বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
×