বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ফলপ্রসূ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মোশাররফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি ৬ ও ৭ জুন বাংলাদেশ সফর করেন। তার সফরে বাণিজ্য ও যোগাযোগ প্রসারে ১৯টি চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এছাড়া বিনিময় হয় স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের দলিল। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নরেন্দ্র মোদির সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তি ও প্রটোকল স্বাক্ষর হয়েছে, যা ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে খুবই ‘ঘটনাবহুল ও কর্মবহুল’ উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, এর পেছনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বিশাল অবদান রয়েছে। তার দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা, আগ্রহ, নেতৃত্ব, ইতিবাচক মনোভাব, দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্ক, আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতি তার যে দৃঢ় অঙ্গীকারÑ এর ফলেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে একটি সফল সফর সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
সফরে শেষে ফিরে যাওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদি আঞ্চলিক উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়েই চলার অঙ্গীকার করে গেছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিশ্বাসের যে বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে তাতে, তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যারও সমাধান হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার (০৮ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার সময় তিস্তা চুক্তি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্ব মন্ত্রিসভার বৈঠকে থাকা একজন মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভার সব সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যারও সমাধান হবে। যেহেতু দু’দেশের মধ্যে একটি বিশ্বাসের বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে, আমি আশাবাদী, এই সমস্যারও সমাধান হবে।
বৈঠকে স্থল সীমানা চুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়েও আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী এটিকে অনেক বড় বিষয় বলে উল্লেখ করেন।
সীমান্ত চুক্তি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্য বক্তব্যে বলেন, যে চুক্তি অনুমোদন হলো, এটা অনেক অর্জন, অনেক বড় ঘটনা। এটা যদি কোন ধনী দেশে হতো, তাহলে এর জন্য নোবেল পুরস্কার নিয়ে আলোচনা হতো। কিন্তু আমরা গরীব দেশ, এটা নিয়ে আলোচনা হবে না।
মোদির প্রসঙ্গ নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, উনি ঠিকই বলেছেন। ধনী দেশ হলে নোবেল পুরস্কার নিয়ে আলোচনা হতো।
বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্যরা।
বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে মোদি যে প্রশংসা করেছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশের মানুষের উন্নয়ন চাই, সেবা করতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। এ কারণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে।
এ সময় কথা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১/১১’র হোতারা আমাকে বলেছিলেন, তারা আমাকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেবেন। আমার তো কোন সুযোগ-সুবিধার দরকার নাই। আমার এমনিতেই সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। দেশের মানুষের সেবা করতে চাই, আমি নির্বাচন চাই। এটাই বলেছিলাম।