ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অবশেষে শিউলী ও আছমা পেল বাবার স্বীকৃতি ॥ সুফিয়া স্বামীর

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ৯ জুন ২০১৫

অবশেষে শিউলী ও আছমা পেল বাবার স্বীকৃতি ॥ সুফিয়া স্বামীর

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ দীর্ঘ ১৬ বছর পর জন্মদাতা পিতার পরিচয় ফিরে পেয়েছে হতভাগ্য দুই কন্যা শিউলী ও আছমা। একই সঙ্গে একযুগ পর সুফিয়া বেগম ফিরে পেয়েছে তার স্বামীকে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলাল বাকাল গ্রামে। জানা গেছে, ওই গ্রামের আফজাল খানের পুত্র সেকেন্দার খান ২৮ বছর পূর্বে স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণ-পোষণের জন্য জীবিকার প্রয়োজনে খুলনায় অবস্থান করেন। খুলনার খালিশপুরে অবস্থানকালে বাড়িতে স্ত্রী সন্তানদের কথা গোপন রেখে সেখানে সুফিয়া বেগম নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। ওই সময় সেকেন্দার শুধু জানিয়েছিল তার বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়ায়। সুফিয়া ও সেকেন্দারের দাম্পত্য জীবনে শিউলী ও আসমা নামের দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। খুলনায় একযুগ সংসার করে স্ত্রী সুফিয়া, কন্যা শিউলী ও আসমাকে ফেলে রেখে ১৬ বছর পূর্বে সেকেন্দার পালিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন। স্বামী ফেলে রেখে আসার পর স্ত্রী সুফিয়া বেগম তার দু’কন্যাকে নিয়ে অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজসহ শ্রমিকের কাজ করে মানবেতর জীবনযাপন করেন। অর্থাভাবে মেয়েদের পড়াশুনাও করাতে পারেনি সুফিয়া। কাজের ফাঁকে বিভিন্ন মাধ্যমে খুঁজতে থাকে হারিয়ে যাওয়া স্বামীকে। এরই মধ্যে শত কষ্টে শিউলীকে পাত্রস্থ করা হয়। এদিকে দুই বছর আগে সুফিয়া তার হারিয়ে যাওয়া স্বামী সেকেন্দারের খোঁজ পায়। সেকেন্দারের খোঁজ পেলেও জানতে পারেন তার আগের বিয়ে ও সন্তানদের কথা। স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুফিয়া ও দুই কন্যাকে অস্বীকার করে সেকেন্দার। স্ত্রী ও সন্তানদের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য হতভাগী সুফিয়া দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে গত ২২ এপ্রিল সুফিয়া বেগম মাদারীপুর লিগ্যাল এইডের আগৈলঝাড়াস্থ কার্যালয়ের দ্বারস্থ হন। লিগ্যাল এইডের ম্যানেজার নাজমা আক্তার জানান, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠক চলাকালীন সময় সেকেন্দার তার স্ত্রী হিসেবে সুফিয়া বেগম ও দুই কন্যাকে স্বীকৃতি দেয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছোট মেয়ে আসমা আক্তারের বিয়ের সকল খরচ সেকেন্দার বহন করবে বলে ঘোষণা করে। পরবর্তীতে স্ত্রীর অধিকার দিয়ে সুফিয়া বেগমকে ও পিতৃ পরিচয় দিয়ে শিউলী ও আসমাকে নিজ ঘরে নিয়ে যায় সেকেন্দার খান।
×