ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এসএসসি ॥ শত বাধা পেরিয়ে

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৯ জুন ২০১৫

এসএসসি ॥ শত বাধা পেরিয়ে

মৌসুমী স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ ভূমিহীনের মেয়ে মৌসুমী বেগম। বাবা মারা যাওয়ার পর মা মল্লিকা বেগম মানুষের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে সংসার চালায়। মৌসুমীর বাড়ি আটোয়ারী উপজেলার সাতখামার গ্রামে। এবারের এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় পবাদা পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মৌসুমি গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেন মৌসুমীর মা। মানুষের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। হ্যারিকেনের কেরোসিন কেনার সামর্থ্য না থাকায় দিনের আলো থাকতেই লেখাপড়া শেষ করেছে। এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সারাক্ষণ ভয় আর সংশয়ের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে মৌসুমীকে। এইচএসসিতে পড়তে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। রাসেল হোসেন স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ পরীক্ষার রেজাল্ট নিতে অন্যরা যখন উদগ্রীব তখনও রাসেল বাবার সঙ্গে তরকারির ক্ষেতে কাজে ব্যস্ত। রাসেল হোসেন এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীন মনিরামপুরের নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। মনিরামপুর উপজেলার মুজগুন্নী গ্রামের হত-দরিদ্র বাবা সদর উদ্দীন ও মা রাশেদা বেগমের ছেলে রাসেল। শত দুঃখ-কষ্ট, বাধা-বিপত্তি তাকে বিচ্যুত করতে পারেনি পড়ালেখা থেকে। জমি-জমা বলতে ভিটে-বাড়ি ছাড়া আর কিছু নেই রাসেলের। পড়ালেখার পাশাপাশি বাবার সঙ্গে প্রায়ই তাকে সহযোগিতা করতে হয়। আবেগ-আপ্লুত হয়ে রাসেল বলেন, ভাল ফলাফলের জন্য আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে বাবা-মা ও শিক্ষকদের প্রতি। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে অসহায় বাবা-মার দুঃখ কষ্ট ঘুচাতে চাই। কিন্তু আর্থিক দৈনতার কারণে সে পথ পাড়ি দিতে পারব কি-না সংশয় হয়। কামরুজ্জামান নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ৮ জুন ॥ এবারের এসএসসিতে অদম্য জয়ীদের অন্যতম শেরপুরের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান মোঃ কামরুজ্জামান। কষ্টের সংসারের চাকা ঠেলতে বাবার সঙ্গে কাঠমিস্ত্রির যোগালীর কাজ করে পড়াশোনা চালিয়েও সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এখন সে এইচএসসিতে ভর্তিসহ ভবিষ্যত পড়াশোনার চিন্তায় দিশেহারা। কামরুজ্জামান শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের কাঠমিস্ত্রি রফিকুল ইসলামের পুত্র। পাঁচ সদস্যের সংসারের চাকা ঘোরাতে প্রায়ই তাকে বাবার সঙ্গে স্থানীয় ব্রিজপাড় এলাকায় ফার্নিচারের দোকানে মাত্র ১২০-১৫০ টাকায় যোগালীর কাজ করতে হয়েছে। ওই কাজের ফাঁকেই কষ্টের সংসারে আলো জ্বালানোর লক্ষ্য নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে কামরুজ্জামান। স্থানীয় আহম্মদনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু এখন সে শংকিত ভবিষ্যত নিয়ে। কারণ কলেজে ভর্তি এবং পরবর্তীতে পড়াশোনার খরচ জোগাতে ইতোমধ্যে তার বাবা অপারগতা প্রকাশ করেছে। উজ্জ্বল নিজস্ব সংবাদ-দদাতা, ঝিনাইদহ, ৮ জুন ॥ অভাবের সংসার, বাবা মাছ বিক্রির পাশাপাশি ফেরি করে আইস্ক্রীম বিক্রি করেন। আর মা মুড়ি ভেজে এবং ঝিয়ের কাজ করে লেখাপড়ার খরচ যোগান ছেলের। অভাব দমাতে পারেনি মেধাবী উজ্জ্বলকে। সে এ বছর এসএসসির ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামের তপন হালদার ও নয়ন রানীর ছেলে উজ্জ্বল কুমার। সে এবার মহেশপুরের ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। উজ্জ্বল জানায়, তারা ৪ ভাই বোন। সে মেঝো।
×