ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে দুই মানব পাচারকারীর কবলে তিন যুবক নিঃস্ব

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ৯ জুন ২০১৫

যশোরে দুই মানব  পাচারকারীর কবলে তিন যুবক নিঃস্ব

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের মনিরামপুরে মানবপাচারকারীর খপ্পরে পড়ে রাজগঞ্জের তিন যুবক ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেও মিলছে না কোন প্রতিকার। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে রয়েছে তারা। জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার মহনপুর গ্রামের শফিউদ্দিন মোল্লার ছেলে পৌরসভার ম্যারেজ রেজিস্টার কাজী মাহবুর রহমান ও টুনিয়াঘরা গ্রামের মৃত শাহদাত হোসেনের ছেলে ভোজগাতি ইউনিয়নের ম্যারেজ রেজিস্টার কাজী মহসিন উদ্দিন অস্ট্রেলিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মশ্মিমনগর ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের শামছুর গাজীর ছেলে রফিকুল ইসলাম, মজিবর রহমানের ছেলে নূরনবী ও খেদাপাড়া ইউনিয়নের গালদা গ্রামের মৃত কোমর আলী সরদারের ছেলে মোশারফ হোসেনকে। অষ্ট্রেলিয়া পাঠাতে পৃথকভাবে ৩৫ লাখ টাকার চুক্তি করে। সে অনুযায়ী ওই তিন যুবক টাকা পরিশোধ করে। এরপর তাদের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের নেপালে নেয়া হয়। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে হাত-পা বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে ওই তিন যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে তাদের পরিবারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। প্রায় ১১ দিন নির্যাতন ভোগের পর ওই তিন যুবক কৌশলে নেপাল থেকে পালিয়ে আসে। দেশে ফিরে তারা মানবপাচারকারীদের কাছে টাকা ফেরত চায়। কিন্তু টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে ক্ষতিগ্রস্ত ওই তিন যুবক যশোর আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত মানবাধিকার সংগঠন ‘রাইটস যশোর’-এর নির্বাহী পরিচালককে তদন্তের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে রাইটসের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা পেয়ে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। আদালত তদন্ত রিপোর্ট পেয়েই আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করে। এরপর আসামিরা আদালতে থেকে জামিন নিয়ে মামলার বাদীকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য অব্যাহতভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। ভয়ে বাদী আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডাইরিও করেন। তবে দীর্ঘ এ সময়ে মামলার অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে তারা মোটা অংকের টাকা খরচ করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে রয়েছে।
×