ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়ার তিন গ্রামের মানুষের আতঙ্ক মিজান বাহিনী

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৮ জুন ২০১৫

বগুড়ার তিন গ্রামের  মানুষের আতঙ্ক মিজান বাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ নাশকতা মামলার আসামি সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে অসহায় হয়ে পড়ছে বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের পলাশবাড়িসহ তিনটি গ্রামের সাধারণ মানুষ। চিহ্নিত এই সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান টার্গেট আওয়ামী লীগ কর্মী সমর্থক ও তাদের বাড়িঘরসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া গ্রামের সাধারণ মানুষও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা সন্ত্রাসী বাহিনীর একের পর এক হামলায় বাড়ি-ঘর ভাংচুরসহ অনেকে অঙ্গ পর্যন্ত হারিয়েছেন। সন্ত্রাসী বাহিনীর আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে অন্তত ৪টি পরিবার। এলাকাবাসীর অভিযোগ সন্ত্রাসীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ তাদের ধরছে না। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় ১৪-১৫টি মামলা থাকলেও তারা রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে পলাশবাড়ি গ্রামের কয়েকশ’ মানুষ এলাকা থেকে বাইরে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে না। এ কারণে তারা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। সেখানে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসলেও গ্রামবাসীরা সন্ত্রাসের আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াওর সময় সন্ত্রাসী মিজান বাহিনীর উত্থান হয়। মহাসড়কে যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ আওয়ামী লীগ কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে হামলার প্রায় ১৫টি মামলা হয়েছে এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে নাশকতার মামলা রয়েছে আটটি। ৩০-৪০ জনের এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বেশিরভাগই বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে জড়িত। সন্ত্রাসীরা এতটাই বেপরোয়া যে, তাদের ভয়ে অনেকে পৈত্রিক বসতভিটা ছেড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র ভাড়া বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে গোকুল উত্তরপাড়ার বাসিন্দা আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদুল ৭-৮ মাস ধরে নিজের বাড়ি-ঘর ছেড়ে থাকেন বাঘোপাড়া এলাকায়, আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদুল চার মাস ধরে ভাড়া বাসায় রয়েছে মহাস্থান এলাকায়। এছাড়া কুদ্দুস ও আব্দুল মোমিনও সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভিটেমাটি ছেড়েছেন দীর্ঘদিন ধরে। এদের প্রত্যেকের বাড়িঘর বিভিন্ন সময় ভাংচুর হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার শিকার আওয়ামী লীগ কর্মী লুৎফর দুই মাস থেকে সজ্ঞাহীন অবস্থায় রয়েছেন। ১ জুন সন্ত্রাসীরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য তার বাড়িতে পুনরায় হামলা চালায় এবং এর তিনদিন পরে তার বাড়িতে সশস্ত্র অবস্থায় গিয়ে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে সই নিয়ে আসে। একই সন্ত্রাসী বাহিনী ২২ মে চাঁদা তোলা নিয়ে বিরোধে পলাশবাড়ি গ্রামে ব্যাপক ত্রাস, গুলি ও ককটেল হামলা চালায়। এ সময় একজনের হাতের আঙ্গুল ও অপর একজনের কান কেটে নেয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনার পর থেকে পলাশবাড়ি গ্রামে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন হলেও সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য থামেনি। এ ব্যাপারে বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সাইফুজ্জামান ফারুকী জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী মিজান বাহিনী এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বগুড়া সদর থানার ওসি জানিয়েছেন, মিজান বাহিনীর বিরুদ্ধে নাশকতা ও সন্ত্রাসের কয়েকটি মামলা রয়েছে।
×