ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় শিক্ষিকাসহ দুই বোনকে ধর্ষণ, স্বামীসহ তিনজন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৮ জুন ২০১৫

নওগাঁয় শিক্ষিকাসহ  দুই বোনকে ধর্ষণ,  স্বামীসহ তিনজন  গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ৭ জুন ॥ নওগাঁর মহাদেবপুরে বন্ধুদের নিয়ে স্ত্রী ও স্ত্রীর বড় বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে স্বামীসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আসামি ধরতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ায় পুলিশের বেধড়ক লাঠি চার্জে অন্তত ৫ নারীসহ ১৫ জন আহত হয়েছে। আসামি গ্রেফতারে বাধা দেয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নারীসহ ৪০-৫০ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেলে উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের কাঞ্চন গ্রামে। গ্রেফতারকৃতদের সন্ধ্যায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত ১টার দিকে কাঞ্চন গ্রামের কাঞ্চন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লেলিনা পারভীন (৩০) ও বেড়াতে আসা তার বড় বোন নাসরিন পারভীন শিল্পী (৩৫) নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় লেলিনা পারভীনের স্বামী জাহাঙ্গীর আলম জুয়েলসহ তার অপর দুই বন্ধু রনি ম-ল এবং ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ময়নুল ইসলামকে নিয়ে তার বাড়িতে যায়। বাড়িতে গিয়ে জুয়েল ও তার অপর দুই বন্ধু রনি ও ময়নুল ঘুমিয়ে থাকা লেলিনা এবং নাসরিনকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বাড়ির দুই রুমে পৃথকভাবে আটকে রেখে পালাক্রমে তাদের ধর্ষণ করে। পরদিন শনিবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রামের লোকজন ধর্ষণের ফলে গুরুতর আহত শিক্ষিকা লেলিনাকে মহাদেবপুর হাসপাতালে এবং তার বড় বোন নাসরিনকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। ওইদিন ধর্ষিতা শিক্ষিকা লেলিনা বাদী হয়ে মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ধর্ষণ মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ কাঞ্চন গ্রামে যায়। ওই গ্রামবাসীর অভিযোগ ওই ধর্ষণ মামলার আসামিদের গ্রেফতারের নামে ওই গ্রামের প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালায় এবং বাড়ির মালামাল ভাংচুরসহ লোকজনদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করে। পুলিশের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে কাঞ্চন গ্রামের নারী-পুরুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশদের ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানায়। এ সময় পুলিশ নারী ও পুরুষদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে। পুলিশের লাঠিপেটায় ওই গ্রামের আমজাদ আলীর স্ত্রী অজুফা (৫০), মৃত আইয়ুব আলীর স্ত্রী মিনা বেগম (৪৫), মতিউর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা (৫০), আজাদ হোসেনের স্ত্রী ময়না বেগম (৩৫) ও সিরাজ উদ্দীনের স্ত্রী রুবি আক্তার (৩৫) গুরুতর আহত হয়। পুলিশ ধর্ষক স্বামী জুয়েলকে ও পুলিশী কাজে বাধা প্রদানের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুল মতিন ও সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত এই ৩ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে থানার এসআই আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে কাঞ্চন গ্রামের ৪০-৫০ নারী-পুরুষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ধর্ষিতা দুই বোনের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
×