ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্মপাশায় নীলকণ্ঠ হাজংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৮ জুন ২০১৫

ধর্মপাশায় নীলকণ্ঠ হাজংয়ের  শেষকৃত্য সম্পন্ন

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ, ৭ জুন ॥ ধর্মপাশা উপজেলার ঘিলাগড়া গ্রামে সামরিক মর্যাদায় মালিতে নিহত সেনা সদস্য নীলকণ্ঠ হাজংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মালির বাংলাদেশ ট্রান্সপোর্ট কনটিনজেন্ট কোম্পানীর সেনা কর্মকর্তা মেজর হুমায়ুন ও নীলকণ্ঠের ভাই সমর সিংহ হাজং ঢাকা সেনানিবাস থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে ধর্মপাশার উদ্দেশে রওনা দেন। মরদেহবাহী এয়ারফোর্সের হেলিকপ্টার ঘিলাগড়ায় এসে পৌঁছায় বেলা ২টায়। ধর্মীয় আচার শেষে বেলা ২টা ৪০ মিনিটে বাড়ির সামনের মাঠে সামরিক মর্যাদা প্রদান শেষে শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় এই সেনা সদস্যের। এর আগে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের সদস্যরা জাতীয় পতাকা ও সেনাবাহিনীর পতাকায় মুড়িয়ে মরদেহটি নিয়ে যান নীলকণ্ঠের বাড়িতে। সেখানে তাঁকে একনজর দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলেন নীলকণ্ঠের বাবা রিজেন্দ্র হাজং ও স্ত্রী সঞ্চিতা হাজংসহ আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীসহ নিজ গ্রাম ও আশপাশের গ্রামের লোকজন। মরদেহ বাড়িতে যাওয়ার পর গগনবিদারী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা। বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তাঁর ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সঞ্চিতা। শেষবারের মতো নীলকণ্ঠের মরদেহ দেখতে আসেন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা। তাঁদের মাঝেও ছিল শোকের ছায়া। শেষকৃত্য শেষে মালি থেকে মরদেহের সঙ্গে আসা মেজর হুমায়ুন শান্তিরক্ষী মিশনের ব্যাটেলিয়ান কমান্ডার লে. কর্নেল মাহমুদের সঙ্গে নীলকণ্ঠের বাবা রিজেন্দ্র হাজং ও স্ত্রী সঞ্চিতা হাজংয়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। এ সময় মালিতে দায়িত্ব পালনরত সেনা সদস্যদের ব্যাটেলিয়ানের সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের পক্ষ থেকে স্ত্রী সঞ্চিতা হাজংকে ৬১ হাজার ৫০০ টাকা এবং বাবা রিজেন্দ্র হাজংকে ৪১ হাজার ৫১৫ টাকা এবং শান্তিরক্ষী মিশনের বীরত্ব খেতাব, মেডেল ও সনদ তুলে দেয়া হয়। উল্লেখ্য, গত ২৫ মে মালির বাকামোতে শান্তিরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত একটি জীপের ওপর সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলি চালায়। এতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক নীলকণ্ঠ হাজং নিহত হন। সামরিক মর্যাদায় সম্মান ॥ আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভুঁইয়া রবিবার ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সে সামরিক মর্যাদায় অনুষ্ঠিত মালিতে নিহত বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী সৈনিক নীলকণ্ঠ হাজংয়ের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল পদবীর সদস্যবৃন্দ জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পতাকায় আবৃত মরহুমের কফিনের উদ্দেশে সালাম প্রদর্শন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরে দুইজন সেনা সদস্য কর্তৃক পরিবেশিত বিউগলের অন্তিম সুর প্রতিধ্বনিত হয়। সেনাপ্রধান নীলকণ্ঠ হাজংয়ের বড় ভাইয়ের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তা, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার এবং বিপুলসংখ্যক সৈনিক মরহুমের কফিনের প্রতি সম্মান স্যালুট প্রদর্শন করেন।
×