ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৭ জুন ২০১৫

একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর এবার দেশব্যাপী নতুন নীতিমালার আলোকে শুরু হয়েছে একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম। তবে বেড়েছে অনলাইনে ভর্তির জন্য নির্বাচিত কলেজের আওতাও। এবার টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন ছাড়াও শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন অনলাইনে ভর্তির আবেদনের বিড়ম্বনাহীন সুযোগ। বিড়ম্বনাহীন এ প্রক্রিয়ায় আগামী ১৮ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন/এসএমএস করা যাবে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শনিবার রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। অনলাইনের জন্য ww(w.xiclassadmission.gov.bd) এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। তবে অনলাইন ও এসএমএসের বাইরে থাকা বাকি কলেজ ও ইনস্টিটিউটটে সাধারণ নিয়মেই ভর্তির আবেদন করার সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। ভর্তি নীতিমালা, অনলাইনের ভর্তির জন্য নির্বাচিত কলেজের তালিকাসহ এ সংক্রান্ত সকল তথ্য শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ভর্তির তথ্য সংশ্লিষ্ট কলেজ ও স্ব স্ব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকেও সংগ্রহ করতে পারছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোন রকম বিড়ম্বনা ছাড়াই অনলাইন ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। টেলিটকের আবেদন সকল বোর্ডের অনুকূলেই হবে। সাধারণ ভর্তি প্রক্রিয়া বোর্ডগুলো আলাদা আলাদা করে নেবে। আগামী ১৮ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন/এসএমএস করা যাবে। এবারই প্রথম এসএমএসের পাশাপাশি দেশের বড় বড় কলেজগুলোতে অনলাইনেও আবেদন করা যাচ্ছে। প্রতিবারের মতো শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই ভর্তি করা হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে। আর বিলম্ব ফি দিয়ে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি চলবে। অনলাইনে ভর্তি আবেদনে পছন্দের ৫টি কলেজকে নির্বাচন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। আবেদনের জন্য খরচ হবে ১৫০ টাকা। একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থীরা কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবে তা তার ফলের ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে শিক্ষা বোর্ড। পছন্দের ৫ কলেজের মধ্য থেকে একটি কলেজকে ভর্তির জন্য চূড়ান্ত করবে বোর্ড। যদি কোন শিক্ষার্থী আবেদনে উল্লেখ করা ৫টি কলেজের কোনটিতেই ভর্তির যোগ্য হলো না, সে ক্ষেত্রে আসন শূন্য থাকা কলেজে ভর্তি হতে পারবে। আগের মতো টেলিটক থেকে এসএমএস পাঠিয়েও আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এ জন্য প্রতি আবেদনের (প্রতি কলেজের জন্য এক আবেদন) জন্য ১২০ টাকা দিতে হবে। কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবার জন্যই একই নিয়মে আবেদন করতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীরা ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করছে, তারা ২১ জুন পর্যন্ত ভর্তি আবেদনের সুযোগ পাবে। পুনঃনিরীক্ষণের ফল আগামী ২০ জুন প্রকাশিত হবে। আগামী ২৫ জুন ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা এসএমএস, স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট ও িি.িীরপষধংংধফসরংংরড়হ.মড়া.নফ এ প্রকাশ করা হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে। আর বিলম্ব ফি দিয়ে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি চলবে। এবারের ভর্তি নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোন কলেজ চাইলে তাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করতে পারবে। প্রত্যন্ত/অনগ্রসর অঞ্চলের সহশিক্ষার কলেজে ছাত্রীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। আর কারিগরি শিক্ষায় ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তিতে ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং জিপিএর ভিত্তিতে বাকি ৫০ নম্বরের আলোকে মেধাক্রম নির্ধারণ করতে হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সাতটি বিভাগীয় সদরের কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজের ৯০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অবশিষ্ট ১০ শতাংশ আসনের মধ্যে ৩ শতাংশ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সদরের বাইরের এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্ত দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সব বিষয়ের উপর সর্বোচ্চ ৪৮ গ্রেড পয়েন্ট ধরে জিপিএ’র ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের মেধাক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত, উচ্চতর গণিত অথবা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত জিপিএ বিবেচনায় আনা হবে। আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ভর্তির ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ইংরেজী, গণিত ও বাংলায় অর্জিত গ্রেড পয়েন্ট বিবেচনা করা হবে। বলা হয়েছে, মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ সর্বসাকুল্যে এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি ফি নেয়া যাবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তিতে পাঁচ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিওবর্হিভূত শিক্ষকদের বেতনভাতা দেয়ার জন্য ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি বাবদ বাংলা মাধ্যমে নয় হাজার টাকা এবং ইংরেজী মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। উন্নয়ন খাতে কোন প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা খাতের জন্য ঘোষিত বাজেট পর্যাপ্ত নয়-শিক্ষামন্ত্রী ॥ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষার জন্য ঘোষিত বাজেট পর্যাপ্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শনিবার সকালে একাদশ শ্রেণীর অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রমের উদ্বোধন কালে শিক্ষামন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, শিক্ষা খাতের জন্য ঘোষিত বাজেট পর্যাপ্ত নয়। এ বাজেটে লক্ষ্য পূরণ হবে না, বরাদ্দ আরও বাড়ানো দরকার। বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নততর শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য আমরা সংসদে বিল উত্থাপন করব। বাজেটে শিক্ষা বাজেটের বরাদ্দ যথেষ্ট হয়নি। বরাদ্দ আরও বাড়ানো উচিত। অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আগামী বছর থেকে একাদশ শ্রেণীর ভর্তি কার্যক্রম শুধু অনলাইনে হবে। এ সময় মন্ত্রী প্রয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আরও বাড়ানো হবে বলে জানান। তবে একই সঙ্গে, বিভিন্ন ধরনের অসঙ্গতিমূলক কাজ থেকে বিরত থাকতে শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দেন শিক্ষামন্ত্রী।
×