ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিপন্ন হতে পারে গণতন্ত্রের পথ

মিয়ানমারের সমৃদ্ধির নেপথ্যে মাদক বাণিজ্য

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৭ জুন ২০১৫

মিয়ানমারের সমৃদ্ধির নেপথ্যে মাদক বাণিজ্য

দর্শনার্থীরা তাদের বিমানযাত্রায় প্রাণবন্ত গ্রীষ্মম-লীয় মহানগর ইয়াঙ্গুনে পৌঁছে এক আধুনিক কাঁচ ও ইস্পাতনির্মিত বিমানবন্দরে পা রাখেন- যা বহু বছরের বিচ্ছিন্নতা এবং অশান্ত অতীত কাটিয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হওয়া মিয়ানমার নামক দেশটির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। বিমানবন্দরের টার্মিনালটি যে কোম্পানি নির্মাণ করেছে সেই এশিয়া ওয়ার্ল্ড শুরু করেছিল দেশের অন্যতম প্রধান মাদকসর্দার ও যুদ্ধবাজ- যার মিলিশিয়া বাহিনী দেশের দূরবর্তী পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষেতে উৎপন্ন আফিম থেকে আহরিত হেরোইন ফেরি করত। এখন আজকের মিয়ানমারে প্রবেশ করে কোম্পানির অন্যান্য প্রকল্পের মুখোমুখি না হওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। প্রকল্পগুলোর মধ্যে আছে : সড়ক, পানিবিদ্যুত বাঁধ, দেশের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরসমূহ এবং সবচেয়ে বিলাসবহুল হোটেলের একটি ইয়াঙ্গুনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সুলে সাংগ্রি-লা। কোম্পানিটি এখনও মাদক পাচারের সঙ্গে কোন সংযোগ রক্ষা করছে কিনা তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে মিয়ানমার যখন কয়েক দশকের স্বৈরশাসনের পর আধুনিকতার দিকে অগ্রসর হয়েছে সে সময় ওই প্রচেষ্টায় এশিয়া ওয়ার্ল্ডের ভূমিকা একটা সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত সামনে এনেছে যে, মাদকবাণিজ্য কিভাবে দেশটির নতুন অর্থনীতির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে এবং তার গুণ গঠন অনেক প্রচেষ্টার মূলের সঙ্গে সেটা সংযুক্ত। ঔপনিবেশিক বার্মায় জন্মগ্রহণকারী কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অর্থনীতিবিদ রোনাল্ড ফিন্ডলে বলেন, ‘বার্মিজ অর্থনীতির উৎসমূল হলো হেরোইন। এটা যদি অতিরঞ্জন হয়ও তবে তা কিছু নয়। ছাড় জড়িত কোম্পানিগুলো নতুন নতুন সড়ক ও সেতু নির্মাণ করছে এবং দেশের বৃহত্তম নগরী ইয়াঙ্গুনের আকাশসীমার নবরূপায়ণে ভূমিকা রাখছে। দেশটির নতুন অবকাঠামোকে সাদরে গ্রহণ করা হলেও মাদক অর্থনীতি গণতন্ত্রে দেশটির উত্তরণকে বিপন্ন করে তুলছে। দেশটির গণতন্ত্রের পথে পা রাখাই ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির একটি বড় সাফল্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদকবাণিজ্য নতুন করে দুর্নীতি প্রসার ঘটাবে, সামরিক বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং ওবামা প্রশাসনের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশটিকে একটি গণতান্ত্রিক মিত্রে পরিণত করার পরিবর্তে আবার একটি বিশ্বসমাজচ্যুত দেশে ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি করবে। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×