ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোদির সফরে ৩ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি হবে ॥ গওহর রিজভী

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৬ জুন ২০১৫

মোদির সফরে ৩ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি হবে ॥ গওহর রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরে তিনটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি হবে। এ সব বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ভারতীয় সীমান্তের ওপারে শহীদ হয়েছেন। তাদের কবর ও দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার জন্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হবে। জাতীয় মর্যাদায় তাদের কবর এদেশে নিয়ে আসা হবে। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে সব সদস্য শহীদ হয়েছিলেন তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্মানিত করা হবে বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশ-ভারতের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সীমান্তের ওপারে ক্ষমতার রদবদলের ওপর নির্ভর করে না বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা। শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে ‘ঐতিহাসিক স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন বাংলাদেশ ভারত বন্ধুত্বের যুগান্তকারী সাফল্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব তথ্য জানান। বাংলাদেশ ইন্ডিয়া সিটিজেন সোসাইটি (বিআইসিএস) ও ন্যাশনাল ফ্রিডম ফাইটার্স ফাউন্ডেশন (এনএফএফএফ) যৌথভাবে ওই সভার আয়োজন করে। এ সময় ড. গওহর রিজভী বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ১৫শ’ থেকে ১৮শ’ ভারতীয় সেনা জীবন দিয়েছেন। দীর্ঘসময় নিয়ে আমরা তাদের পূর্ণাঙ্গ একটি তালিকা তৈরি করেছি। এবার তাদের সকলকে সম্মান জানাব। তাদের পরিবারের কাছে আমাদের সম্মানের বার্তাটি পৌঁছে দেয়া হবে। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ভারতীয় সীমান্তের ওপারে শহীদ হয়েছেন। তাদের কবর ও দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার জন্য একটি চুক্তি সম্পাদিত হবে। তাদের কবর জাতীয় মর্যাদায় এদেশে স্থানান্তর করা হবে। এ সময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নিয়ে আমাদের দেশে এখনও প্রোপাগা-া চলছে। কখনও জেনে, কখনও না জেনে অনেকেই ভুল তথ্য দিয়ে থাকেন। বিজেপি জয়লাভের পর বলা হয়েছিল তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হবে। কিন্তু না, তাদের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। তার প্রমাণ দুই দলের নেতৃত্বের সময়েই আওয়ামী লীগ সরকার গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পাদন করেছে। দু’দেশের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ এ সম্পর্ক সীমান্তের ওপারে ক্ষমতার রদবদলের ওপর নির্ভর করে না। সমাজ-সংস্কৃতি ও কৃষ্টির কারণেই আমাদের এ সম্পর্ক। ভারত আমাদের সবচেয়ে বড় মার্কেট। বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পকের কারণে নানাক্ষেত্রে উভয় দেশই লাভবান হচ্ছে। দু’দেশের বাণিজ্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে গওহর রিজভী বলেন, রফতানির বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের কোন বাধা নেই। আমরা যত ইচ্ছে রফতানি করতে পারি। তবে সেগুলো হতে হবে বৈধ পণ্য। রফতানি বৃদ্ধিতে পুরনো প্রথা ও জায়গায় জায়গায় বাধা রয়েছে, বিষয়গুলোতে সংস্কারের কাজ চলছে। আমরা ইন্ট্রিগ্রেটেড বর্ডার কোস্ট করার জন্য চুক্তি করতে যাচ্ছি। ফলে আমাদের লোকগুলো আটক হবে না। তিনি আরও বলেন, ভারতে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রেও সিঙ্গাপুর হয়ে কলকাতায় প্রবেশ করে। কিন্তু এবার এ বিষয়েও একটি চুক্তি হবে। চুক্তির ফলে মালপত্র সরাসরি কলকাতায় প্রবেশ করবে। ভারতীয় ভিসা জটিলতার অবসান হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে স্মার্ট ভিসা কার্ড করা হয়েছে। আরও উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। ভারতীয় হাইকমিশন প্রতি সপ্তাহে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার ভিসা দেয়। এটা খুবই ইতিবাচক। তবে তাদের লোকবলের বিষয়টিও আমাদের চিন্তা করতে হবে। সভায় আলোচনায় অংশ নেয়া বক্তারা তিস্তা চুক্তি, অভিন্ন নদীগুলোর পানি সমস্যার সমাধান, অসম্পূর্ণ চুক্তি সম্পাদন, দুই দেশের মধ্য সম্পর্ক উন্নয়নের দাবি তুলে ধরেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সফরকে ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী বলেও আখ্যা দেয়া হয়। বিআইসিএসের মহাসচিব মনোরঞ্জন ঘোষালের সঞ্চলনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন ওই সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি জাফর ইকবাল সিদ্দিকী। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ অধ্যাপক ড. চন্দন সরকার, এনএফএফএফের চেয়ারম্যান ড. এসএম জাহাঙ্গীর আলম, বিআইসিএসের সহ-সভাপতি মিঞা মুজিবুর রহমান ও অর্থসচিব লায়ন আবু বকর সিদ্দিক।
×