ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দাদনের টাকা দিয়ে মুক্ত হতে চাওয়ায় ॥ বেঁধে চুল কেটে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ৫ জুন ২০১৫

দাদনের টাকা দিয়ে মুক্ত হতে চাওয়ায় ॥ বেঁধে চুল কেটে নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ৪ জুন ॥ দাদনের টাকা পরিশোধ করে মুক্ত হতে চাওয়ায় প্রভাবশালী মৎস্য আড়ৎদার কবির (৪০) নামে এক জেলেকে রশি দিয়ে বেঁধে প্রকাশ্যে মাথার চুল কেটে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে। ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাত নয়টায় ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার সদর রোডের উত্তর বাজার মসজিদের সামনে । পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতিত জেলেকে উদ্ধার করে অভিযুক্তকে আটক করে পরে ছেড়ে দিয়েছে। তজুমদ্দিনের মাওলানা কান্দি গ্রামের মোঃ খবিরের নির্যাতিত ছেলে জেলে কবির জানান, সে ৬৫ হাজার টাকা দাদনের বিনিময়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া নয়ার আড়তে মাছ বিক্রি করে আসছে। ওই ব্যবসায়ীর গদিতে আর মাছ বিক্রি করতে চায় না কবির। তাই সম্প্রতি কবির দাদনের টাকা ফেরত দিতে চাইলে ব্যবসায়ী টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে সে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজ উদ্দিনের আড়তে মাছ বিক্রির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। ওই সংবাদ পেয়ে কিবরিয়া নয়া দলবলসহ তাকে বুধবার রাতে কামারপট্টি রাস্তা হয়ে বাড়ি ফেরার সময় ধরে নিয়ে যায়। রাত নয়টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা তাকে উত্তর বাজারে নয়া ও তার ক্যাডার নুরুল হক মালসহ রাস্তার পাশের খুঁটির সাথে হাত-পা বেঁধে প্রকাশ্যে নির্যাতন করতে থাকে। এ পর্যায়ে নয়ার ক্যাডাররা কেচি এনে তার মাথার চুল কেটে নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করে উল্লাস করতে থাকে। এ সময় নয়া ও তার ক্যাডারদের ভয়ে কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। রাত ১১ টায় পুলিশ হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে ওই জেলেকে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় মৎস্য আড়ৎদার গোলাম কিবরিয়া নয়াকে পুলিশ আটক করলেও নুরুল হক মাল পালিয়ে যায়। পরে নির্যাতিত ওই জেলে এজাহারের জন্য থানায় লিখিত আবেদন করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে সে অভিযোগ করে। পরে স্থানীয় বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার মধ্যস্থতায় গভীর রাতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সমঝোতার পর পুলিশ আসামিকে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে গোলাম কিবরিয়ার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে তজুমদ্দিন থানার ওসি হুমায়ুন কবির নিরীহ ওই জেলেকে প্রকাশ্যে চুল কেটে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি মীমাংসা করে দেবে বলে জেলে কবির থানায় লিখিত দিয়েছে। তাই আটক মৎস্য ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া নয়াকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
×