ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৫ জুন ২০১৫

একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি

বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও মাধ্যমিকের ফলের ভিত্তিতেই একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির বিধান রেখে ভর্তি নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার জারি করা নীতিমালায় ভাল ভাল কথাই রয়েছে। কিন্তু দেশের বহু ভাল ছাত্র উৎকণ্ঠায় আছে ভর্তি নিয়ে। নামী-দামী কলেজের আসনসংখ্যা ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সংখ্যার বিস্তর ব্যবধানই এর কারণ। ভর্তি ফি সম্পর্কে নীতিমালায় অভিভাবকদের জন্য কিছু সুসংবাদ রয়েছে। বলা হয়েছে, মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ সর্বসাকল্যে এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি ফি নেয়া যাবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তিতে পাঁচ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিওবহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেয়ার জন্য ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি বাবদ বাংলা মাধ্যমে নয় হাজার টাকা এবং ইংরেজী মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, উন্নয়ন খাতে কোন প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসএসসিতে উত্তীর্ণ বেশিরভাগ মেধাবীরই প্রথম পছন্দ সরকারী কলেজ হলেও আসন সঙ্কটের কারণে অনেককেই ভর্তি হতে হবে বেসরকারী কলেজে, এটাই বাস্তব পরিস্থিতি। সরকারী কলেজগুলো সীমিত আকারে কিছু আসন বাড়ালেও এতে সঙ্কটের সমাধান হবে না। আসনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে শিক্ষকের সংখ্যা এবং অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি যুক্ত। রাজধানী ও বিভাগীয় শহরসহ সারাদেশে জেলা পর্যায়ে ভাল কলেজের সংখ্যা বেশ কম। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য ও কলেজগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে বলা যায়, রাজধানীতে ভাল মানের কলেজ আছে ২০টির মতো। এগুলোতে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিযোগ্য আসন আছে প্রায় ১৬ হাজার। তবে এসব কলেজের বেশিরভাগের আবার স্কুল শাখাও রয়েছে। তাই বাইরের শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ সীমিত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ঢাকাসহ সারাদেশে সব মিলিয়ে মোটামুটি ভালমানের কলেজ আছে প্রায় ১৬০টি। এতে সব মিলিয়ে ৬০ থেকে ৬৫ হাজারের মতো আসন আছে। অথচ এবার ১০ বোর্ডে শুধু জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ৯০১ জন। সুতরাং, স্বীকৃত ভাল কলেজের বাইরে অন্য কলেজে ভর্তি হতে হবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থীকে। তাই দেশের কলেজগুলোর শিক্ষাদানের মান উন্নত করার কথাই ভাবতে হবে। শুধু রাজধানীর গুটিকতক নামকরা কলেজের দিকে তাকিয়ে থাকলে আগামীতে ভর্তিচ্ছু মেধাবী বহু শিক্ষার্থীর হতাশা আরও বাড়বে। তাই এমন একটি সুষ্ঠু পরিচালনা ব্যবস্থা গড়ে তোলা চাই যাতে আগামী দশ বছরে দেশের অন্তত শতকরা ৫০ ভাগ কলেজের মান নিয়ে গর্ব করা যায়। সেজন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে কালবিলম্ব না করে।
×