ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চমকহীন বাংলাদেশ টেস্ট দল

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ৪ জুন ২০১৫

চমকহীন বাংলাদেশ টেস্ট দল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতের বিপক্ষে ১০ জুন ফতুল্লায় একমাত্র টেস্টটি খেলতে নামবে মুশফিকুর রহীমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ভারতের দলটি আগেই ঘোষণা করেছে। সেখানে যেমন ছিল না কোন চমক। বাংলাদেশের টেস্ট দল ঘোষণাতেও নেই কোন চমক। পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে যে ক্রিকেটাররা ছিলেন, তারাই টেস্ট দলে স্থান করে নিয়েছেন। শুধু ইনজুরিতে থাকা শাহাদাত হোসেন রাজিব থাকছেন না। বুধবার চমকহীন একটি টেস্ট দলই ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে পেসার আবুল হাসান রাজু ছিলেন না। প্রথম টেস্ট শেষে ইনজুরির জন্য দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পারেননি রুবেল হোসেন। তাই রাজুকে দলে ভেড়ানো হয়েছিল। কিন্তু খেলা আর হয়নি। এবার রাজু সরাসরিই দলে আছেন। এখানেও কারণ সেই এক পেসারের ইনজুরি। শাহাদাত হোসেন রাজিব যে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট খেলার সময় ইনজুরিতে পড়েছেন। এখনও ইনজুরিতেই পড়ে আছেন। তাই রাজুকে এবার ১৪ সদস্যের টেস্ট দলে রাখা হয়েছে। এক শাহাদাত হোসেন রাজিব ছাড়া আর সবাই পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দলে থাকা ক্রিকেটাররাই আছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট শেষে যে ইনজুরির জন্য দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পারেননি রুবেল, অনুমিতভাবেই আবার দলে ফিরেছেন। টেস্ট দল ঘোষণায় চমক না থাকলেও মাঠের খেলায় এবার চমক দেখা যেতে পারে। সেটি একাদশ গঠনে। যে একাদশে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে লিটন কুমার দাস দলে থাকলেও একাদশে খেলতে পারেননি। এবার তার একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক জোরালো। বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম যে উইকেটরক্ষকের ভূমিকা নাও পালন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে একজন ব্যাটসম্যান বেশি খেলাবে বাংলাদেশ। সেই ব্যাটসম্যানটি হতে পারেন লিটন কুমার দাস। তিনি মুশফিকের স্থানে উইকেটরক্ষকের ভূমিকাতেও থাকবেন। সেই ইঙ্গিত বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই সম্প্রতি দিয়েছেন। বলেছেন, ‘মুশফিককেই ঠিক করতে হবে সে কোনটি রাখবে। এখানে আমার ধারণা উইকেট কিপিংটিই প্রথমে আসবে যে সে রাখতে চায়, কি চায় না। আমি যতটুকু জানি, সে উইকেট কিপিং করতে ইচ্ছুক, তবে তার ইনজুরি যেহেতু সারেনি সেহেতু এই সিরিজে তার কিপিং করার বিষয়ে একটু সন্দেহ আছে।’ পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে হাতে আঘাত পেলেও, শেষ টেস্টে উইকেট কিপিং করেছিলেন মুশফিক। যাতে তার ব্যাটিংয়েও প্রভাব পড়েছিল। এখনও পুরোপুরি না সেরে ওঠায়, পাপন জানিয়েছিলেন ভারতের বিপক্ষে সিরিজে হয় তো উইকেটের পেছনে দেখা যাবে না মুশফিককে। ভারত দলটি খুবই শক্তিশালী। শুরুতে ‘দুর্বল’ দল পাঠানোর ইঙ্গিত মিললেও পরে পূর্ণ শক্তির দল পাঠানোর সিদ্ধান্তই নিয়েছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড। এ দলটির বিপক্ষে কেমন করতে পারে বাংলাদেশ? এ প্রশ্নের জবাবে ভারত শক্তিশালী দল হলেও, বিশ্বকাপ ও পাকিস্তান সিরিজের পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখলে, যে কোন দলকেই হারানো সম্ভব বলে মন্তব্য করেছিলেন পাপন। বলেছিলেন, ‘আমাদের ব্যাটিংও ভাল। ইন্ডিয়া অবশ্যই আমাদের চেয়ে শক্তিশালী দল। কিন্তু পাকিস্তানের চেয়ে ইন্ডিয়ার বোলিং আহামরি শক্তিশালী না। আমরা যদি বিশ্বকাপ এবং লাস্ট সিরিজের পারফর্মেন্স ধরে রাখতে পারি, তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে কোন দলকেই আমরা হারাতে পারি।’ বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে কোহলির নেতৃত্বাধীন দলটি ৮ জুন বাংলাদেশে পা রাখবে। ৯ জুন একদিন অনুশীলন করেই টেস্ট খেলতে নামবে ভারত দল। টেস্টটি শুরু হবে সকাল ১০টায়। আর ১৮, ২১ ও ২৪ জুন যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডের সিরিজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। খেলাগুলো শুরু হবে দুপুর ৩টায়। শুরুতে যেহেতু টেস্ট ম্যাচ, তাই টেস্টের দলই ঘোষণা করে বিসিবি। যেখানে লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন ও ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দলে থাকলেও খেলার সুযোগ পাননি। দল ঘোষণার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘কোচ, অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়েই আমরা দল নির্বাচন করেছি। লিখনকে নিয়ে কোচ ও অধিনায়কের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। তাই ওকে (জুবায়ের হোসেন) দলে রাখা হয়েছে।‘ ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ স্কোয়াডে ৯ জনই স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান। এ প্রসঙ্গে ফারুক বলেন, ‘একাদশে ৯ জন (ব্যাটসম্যান) তো আর থাকবে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ৭ ব্যাটসম্যান আর ৪ বোলার নিয়ে খেললে ভাল হবে।’ বাংলাদেশের মূল শক্তি ভারতের মতোই ব্যাটিংয়ে, এমনই মনে করছেন প্রধান নির্বাচক। বলেছেন, ‘দলের কাছে ভাল ক্রিকেট আশা করছি। ভারতের মূল স্ট্রেন্থ ব্যাটিং, আমাদেরও তাই। পাঁচদিন খেলে টেস্ট ম্যাচটা ‘ড্র’ করতে পারলেই আমরা সন্তুষ্ট হব।’ বাংলাদেশের টেস্ট দল ॥ মুশফিকুর রহীম (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল (সহ অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, শুভগত হোম চৌধুরী, সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম, জুবায়ের হোসেন, রুবেল হোসেন, আবুল হাসান রাজু ও মোহাম্মদ শহীদ।
×