ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘যুক্তরাজ্য ইইউ ত্যাগ করলে দাবি অপ্রতিরোধ্য হবে’

ফের গণভোট চাইবে স্কটল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ৪ জুন ২০১৫

ফের গণভোট চাইবে স্কটল্যান্ড

যদি স্কটল্যান্ডকে এর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়, তা হলে স্কটিশ জনগণ স্বাধীনতার দাবিতে দ্বিতীয়বারের মতো গণভোট দাবি করবে। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) নেত্রী নিকোলা স্টারজান মঙ্গলবার ব্রাসেলসে দেয়া এক ভাষণে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। খবর গার্ডিয়ান, টেলিগ্রাফ ও অনলাইনের। এসএনপি নেত্রী বলেন, যদি যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণভোটে স্কটল্যান্ডকে ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়, তা হলে স্কটল্যান্ডের অনেক সাধারণ ভোটারের মনে খুবই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। তিনি বলেন, ইইউ ত্যাগ প্রশ্নে অনুষ্ঠেয় গণভোটের ফলাফল কি হবে তা কেউই জানেন না। কিন্তু আমি আগেই বলেছি, ফলাফল পরিস্থিতিতে এমন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে, যা স্বাধীনতা প্রশ্নে দ্বিতীয়বারের মতো গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য জনগণের দাবি উত্থাপন ত্বরান্বিত করবে। তিনি বলেন, সরাসরি বলতে গেলে, আমি মনে করি, এসব পরিস্থিতিতে স্কটল্যান্ডের সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভ হঠাৎ এতই বেড়ে যাবে যে, তারা স্বাধীনতা প্রশ্নে আরেকটি গণভোট দাবি করবে, যা অপ্রতিরোধ্য হয়ে দাঁড়াতে পারে। স্টারজান ব্রাসেলসের ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টার দেয়া ঐ ভাষণকে ইইউ গণভোটে তথাকথিত ‘দ্বৈত সংখ্যাগরিষ্ঠতার’ দাবি পুনর্ব্যক্ত করতে কাজে লাগান। যদি যুক্তরাজ্যের প্রতিটি জাতিই ইইউ ত্যাগের পক্ষে ভোট দেয়, কেবল তা হলেই যুক্তরাজ্য ঐ ব্লক ত্যাগ করতে পারবে এমনটি নিশ্চিত করাই ঐ দাবির উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, স্কটল্যান্ডের নির্বাচনে বারবার ইইউ সদস্যপদের প্রতি জোর সমর্থন দেখা যায়। সেজন্য আমরা এক দ্বৈত রক্ষাকবচের প্রস্তাব করব। এর অর্থ হলো, যদি যুক্তরাজ্যের সব জাতিই সম্মত হয়, তা হলেই কেবল ইইউ থেকে বিদায় নেয়া সম্ভব হবে। অর্থাৎ স্কটল্যান্ডকে আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইইউ থেকে জোর করে বের করে আনা যায় না। তিনি বলেন, যদিও তিনি ইইউ গণভোটকে অবাঞ্ছনীয় বলে গণ্য করেন, তথাপি তিনি এটি এখন অনিবার্য বলে স্বীকার করেন। স্টারজান জোর দিয়ে বলেন যে, ইইউর বর্তমান চুক্তির ভেতর থেকেই ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যেতে পারে। স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার হওয়ার পর এটিই ছিল ব্রাসেলসে দেয়া তার প্রথম ভাষণ। তিনি ইউরোপ নিয়ে স্কটিশ সরকার ও য্ক্তুরাজ্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য স্পষ্ট করে তুলে ধরেন। যখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইইউ সদস্যপদ প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, তখন স্টারজান ঐ পার্থক্যের প্রসঙ্গটি তুললেন। ফার্স্ট মিনিস্টার ইইউ সদস্যপদ স্কটল্যান্ডের জন্য যে সুযোগ সুবিধা বয়ে আনছে, তা তুলে ধরেন। ইইউ অন্যত্র জন্মগ্রহণ করলেও বর্তমানে স্কটল্যান্ডে বসবাস ও কাজ করে ১ লাখ ৭১ হাজার লোক স্কটল্যান্ডের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করছে একথাও তিনি উল্লেখ করেন। এর আগে ক্যামেরন ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় গত সপ্তাহে ইউরোপীয় রাজধানীগুলো সফর করেন। তিনি প্রতিশ্রুতি মতো ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ গণভোট অনুষ্ঠানের আগেই স্ইে সমর্থন পাওয়ার আশা করছেন। স্টারজান বলেন যে, দ্বৈত সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়াও স্কটিশ সরকার ১৬ ও ১৭ বছর বয়স্ক কিশোরদের ক্ষেত্রে ভোটাধিকার সম্প্রসারিত করতে এবং যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে আসা ইইউ নাগরিকদের ভোট দেয়ার সুযোগ দিতে চান। সেজন্য তার সরকার যুক্তরাজ্য সরকারের গণভোট বিলে সংশোধন আনতে চাইবে।
×