ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২ জুন ২০১৫

ঢাকার দিনরাত

রাজধানী ঢাকায় বসবাস এক সময় এদেশে অনেকের কাছেই ছিল স্ট্যাটাস সিম্বল। ঢাকার বাইরের স্থায়ী অবস্থাসম্পন্ন মানুষ চাইতেন ঢাকায়ও তাঁর একটি বাড়ি থাক। দেশের সেরা শহর যে ছিল ঢাকা! এখনও বিলক্ষণ ঢাকা সেরা- তবে ইতিবাচক বিষয়গুলো পরিবর্তিত হয়ে গেছে নেতিবাচকতায়। এখন সে সেরা দূষণে, সর্বক্ষেত্রেরই দূষণে, সেরা সে বিবিধ বিড়ম্বনায়, বিচিত্র ভোগান্তিতে। শঙ্কা, সমস্যায় ভারাক্রান্ত ঢাকা ক্রমশ হয়ে উঠছে যেন এক অভিশপ্ত নগরী। বসবাসের অযোগ্য, চলাচলের অযোগ্য ঢাকা তবু নিত্যদিন স্বাগত জানিয়ে চলেছে নতুন আগন্তুকদের। গোটা দেশের অভাবতাড়িত মানুষের কাছে ঢাকা হলো জীবনধারণের শেষ আশ্রয়। এখানে এলে দু বেলা দু’মুঠো খাওয়ার কোনো না কোনো ব্যবস্থা হয়েই যাবে- এমনটাই পাকাপোক্ত ধারণা। প্রতিদিন জীবিকার প্রয়োজনে মানুষকে ঘর থেকে বেরুতেই হয়। মধ্যবিত্ত যে ভদ্রলোকটি অফিসে যাওয়ার জন্য রিক্সায় করে যান সিএনজি অটোরিক্সা বা বাস স্ট্যান্ডে, রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটাতে গিয়ে দেখেন দু’পাশে হাত পেতে আছে বৃদ্ধ কিংবা বৃদ্ধা। ওরা জীবিকার তাগিদে আগেই চলে এসেছেন তাদের ‘কর্মস্থলে’। মুখে কিছুই হয়তো উচ্চারণ করেন না তারা। শুধু ডান হাতখানি বাড়িয়ে রাখেন, আর চোখ তার ভদ্রলোকটির মানিব্যাগের দিকে। রিক্সাঅলাকে প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবার পর যদি খুচরো কিছু জোটে তাদের। যদি রিক্সারোহী তাদের উপেক্ষা করে চলে যান তবে তারাও এক মুহূর্ত নষ্ট না করে অন্য রিক্সার দিকে ছুটে যান। হাত পাতা এবং হাত বাড়িয়ে ছিনিয়ে নেয়া- দুটো ‘পেশা’ই চলছে এখন পেশাদারিত্বের সঙ্গে। যা হোক, ঢাকার আজকের বড় বড় দুটি সমস্যা কি- এমন প্রশ্ন করলে গতকাল এবং গত পরশুর উত্তরেরই পুনরাবৃত্তি করতে হবে। অবধারিকভাবে এ দুটো সমস্যা হলো যানজট ও গরম। যানজট, নাকি যানের আধিক্য? সঠিকভাবে বলতে গেলে কোনটার কথা আগে আসবে? আপনি বলবেন যানের আধিক্য বলেই যানজট। আরেকজন বলবেন সড়কের স্বল্পতা বলেই যানজট; আরেকজন নিশ্চয়ই বলতে বাধ্য হবেন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ত্রুটির কারণেই যানজট। প্রতিটিই সত্য। একটি একটি করে সমস্যা যোগ হয়ে মহাসমস্যায় পরিণত। সেদিন মতিঝিলে যেতে হয়েছিল বিশেষ কারণে। ফিরবার সময় বিআরটিসির এসি বাসে উঠেছিলাম। বিকেল চারটায় বাস ছাড়ে। বাংলামোটর মোড় পর্যন্ত আসতে পাক্কা দু’ঘণ্টা লেগে যায়। এই পথটুকু হেঁটে আসতে কতক্ষণ লাগত? কোনক্রমেই এক ঘণ্টার বেশি নয়। এসি বাস বলে কিছুটা অন্তত রক্ষা হয়েছে। চারদিকে তাকালে অবশ্য নন এসি বাসই বেশি চোখে পড়ে। তার ভেতরে গরমে ধস্ত নাকাল মানুষের সারি। প্রাইভেট গাড়িই বেশি রাস্তায়। আর তার বেশিরভাগই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। আপনাকে যদি কোন কারণে কোন এসি প্রাইভেট কারের ঠিক পাশ দিয়ে যেতে হয় তাহলে টের পাবেন ওই ঠা-া গাড়িটি কিভাবে উগরে দিচ্ছে তপ্ত বাতাস। হঠাৎ করেই আগুনের হল্কা এসে পড়বে আপনার শরীরে। ঢাকার গণপরিবহনের শতকরা এক ভাগও কিন্তু এসি নয়। মতিঝিল-উত্তরা রুটে গত দশকেও অন্তত তিনটি কোম্পানির এসি বাস চলত। এখন রয়েছে শুধু বিআরটিসি। তাও প্রতি ঘণ্টায় একটি করে চলে কিনা সন্দেহ। ঢাকাকে রাজধানী বলে ডেকে শুধু শুধু আত্মপ্রবঞ্চনা। দিন দিন নাগরিক সুবিধা এখানে কমেই চলেছে। আমি না হয় ভাগ্যগুণে সময়মতো এসি বাসে উঠতে পেরেছিলাম। যারা নন এসি বাসের ভেতর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘেমেনেয়ে একাকার হন, তাদের কষ্টের কথা শোনাতে গেলে হয়ত পাঠক বিরক্ত হবেন। বিব্রতও হতে পারেন। কোন কোন বাসের ভেতরে ছোট ছোট ফ্যান রয়েছে। চালককে সেগুলোর সুইচ অন করতে বলবেন, দেখবেন চালক নিরুত্তর। অভিজ্ঞ কোন সহযাত্রী জানিয়ে দেবেন যে, সব ফ্যানই নষ্ট, কেবল চালকের মাথার ওপরেরটা ছাড়া। এসব যখন ভাবছি অসহ্য ট্রাফিক জ্যামের ভেতর বসে দেখি একটি মাইক্রোবাসের আসনের প্রতিটি সারিতে বসা মহিলা যাত্রীরা হাত পাখা দোলাচ্ছেন। গাড়ি চললে প্রাকৃতিক বাতাসের ভাগ পাওয়া যায়। কিন্তু বেশিরভাগ সময় বন্ধ গাড়ির ভেতরেই নিষ্ক্রিয় স্থবির হয়ে থাকতে হয়। সাবধানীরা একটা করে হাতপাখা বহন করে অন্তত শরীরকে কিছুটা স্বস্তি দেয়ার কাজটি করে থাকেন। গরমের কথা যখন উঠলই তখন আরেকটু বলি। বাসের ভেতর বেশি গরম লাগে, বাস থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে পড়লেই আরাম, সেখানে দুঃসহ গরম নেই, বরং রয়েছে কিছুটা খোলা বাতাস। ঢাকার ফ্ল্যাট বাড়িগুলো সম্পর্কেও একই কথা বলা চলে। ঘরের ভেতর গরম যেন আটকে থাকে। বাইরে থেকে বাতাস আসার পথ সব রুদ্ধ। চারদিকে যে টপাটপ উঠে গেছে বহুতল ভবন। ঘর থেকে বেরিয়ে পথে নামলে খানিকটা স্বস্তি, অল্প অল্প হাওয়া। তবে সত্যি বলতে কি, এসবই সাময়িক। গ্রীষ্মের এই দিনে কিংবা রাতে ঘরের বাইরে কিছুক্ষণ অবস্থান করুন, বুঝে যাবেন গরম কত প্রকার। তাপমাপক যন্ত্রে ঢাকায় যে তাপমাত্রা নির্দেশিত হয়, তার চেয়ে অনেকটা বেশি গরম অনুভূত হয়ে থাকে। সংবাদপত্রে যদি দেখেন ৩৮ ডিগ্রী ছিল গতকালকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, তাহলে অবিশ্বাসে আপনার চোখ কপালে উঠতে পারে। আপনি ভাববেন কাগজঅলারা সব সরকারী প্রেসনোটের মতো হয়ে গেছে। কমপক্ষে পঁয়তাল্লিশ কি ছিল না গতকালকের তাপমাত্রা! ভবনের জন্মকাহিনী দুর্ঘটনাস্থলে বিনা কারণে ভিড় করা বাঙালী স্বভাবের অন্তর্গত। জটলার ভেতর রসিকজনরা দুর্যোগ উপভোগের পাশাপাশি অন্যদের আনন্দদানেরও চেষ্টা করে থাকেন। এও বাঙালী স্বভাব বটে। সরেজমিন ভূমিধস দেখতে গিয়ে দু’জনের কথোপকথন কানে এলো। : টুইন টাওয়ারের কথা স্মরণ আছে? - কেন থাকবে না, ওই যে ওয়ান ইলেভেন। : আরে ভাই ওয়ান না, নাইন ইলেভেন। প্লেনের আঘাতে জমজ বিল্ডিং ধসে পড়ল। আর আমাদের টুইন টাওয়ার খাড়াইতেই দিল না। - আমাদের টুইন টাওয়ার মানে? : আরে ভাই এই যে সামনে আলিশান গর্ত দেখতেছেন না। এখানেই তো ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের টুইন টাওয়ার ওঠার কথা ছিল। - কথা ছিল মানে, এখন আর উঠবে না! : আল্লা মালুম। দেখেন কী হয়। একের পর এক বিলবোর্ড টাশকি খাইতাছে।... গত সপ্তাহে ঢাকার সবচাইতে আলোচিত বিষয় যা যা ছিল তার ভেতর নিঃসন্দেহে সার্ক ফোয়ারার কাছে ন্যাশনাল ব্যাংক ভবন নির্মাণস্থলে বিপুল ভূমিধস। বুধবার সকালে প্রথম ঘটে ভূমিধসের ঘটনা, এরপর বিরতি দিয়ে আরও দু’দিন ওখানে প্রচুর মাটি ধসে পড়ে। রাস্তার অনেকখানি চলে যায় ভবন নির্মাণের গভীর গর্তে। উপড়ে যায় তিনটি বিলবোর্ড। তিন দিন এলাকার তিন পাশে বড় ধরনের ধসের ফলে সড়ক চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। পাশের সুন্দরবন হোটেলটি এখনও হেলে পড়ার ঝুঁকির ভেতর পড়ে। এই ঘটনার পর ঢাকা উত্তরের নতুন মেয়র অনেক প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে চলেছেন। সার্বিক তদারকির সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাউকে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত সড়কের পাশে বলেই ভূমিধসের কারণে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এখনও এলাকার মানুষ আরো বড় কিছু হয় কিনা এমন আতঙ্কে আছে। একটি ভবনের জন্মকাহিনী এখন মানুষের মুখে মুখে। ভবন জন্মের আগে তার মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেল কিনা এখন তারই আলোচনা। ফেসবুকে ঢাকার কড়চা অভিনব প্রতিবাদ বাংলাদেশের নারীরা আজকাল নিজে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর খোলামেলাভাবেই প্রতিবাদ করছেন। নিপীড়নকারীর ছবি জনসমক্ষে প্রকাশ করে জনমত গড়ে তুলছেন। যেমন কর্ম তেমন ফল। যেসব পুরুষ একাকী নারীকে হেনস্থা করে ভাবছেন যে পার পেয়ে যাবেন, এই ঘটনা তাদের জন্য মহাবিপদ সঙ্কেত। ‘আমার প্রাতঃভ্রমণ এবং যৌন হয়রানি’- এমন শিরোনাম দিয়ে দুটি ছবি সহযোগে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় কাকলী রানী দাসের লেখাটি রীতিমতো হিট হয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ১০৬৫ জন সেটি শেয়ার করেছেন, আর লাইক দিয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি ফেসবুক এ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তি। লেখাটি তুলে দিচ্ছি : আমি প্রতিদিন সকালে হাঁটতে হাতিরঝিল যাই। হাঁটতে গিয়ে প্রতিদিনই আমার সঙ্গে এতো এতো ঘটনা ঘটে যে শুধু এগুলো দিয়েই কয়েকটা সিনেমা করা সম্ভব- নারীর প্রতি যৌন হয়রানিমূলক সিনেমা। কখনও ৪০/৫০/৬০/৭০ বছর বয়সী পুরুষ মুখে নোংরা একটা হাসি দিয়ে অপলক দৃষ্টিতে বুকের দিকে তাকিয়ে থাকে, কেউ হাতের কনুই দিয়ে বুকে খোঁচা দেয়, কেউ হাঁটতে হাঁটতে আমাকে ক্রস করার সময় ইচ্ছে করেই হাতটা একটু ছুঁয়ে দেয়, নোংরা মন্তব্য করে ইত্যাদি ইত্যাদি। এই কর্মকা-ে প্রাতঃভ্রমণকারী থেকে শুরু করে হাতিরঝিলের গাছপালা পরিচর্যাকারী, টোকাই, হকার সবাই আছে- এনারা সবাই আমার চেয়ে অনেক বেশি যোগ্য কিনা(?) তাই একজন নারীকে তারা যা খুশী বলার বা করার অধিকার রাখেন। বলাই বাহুল্য যে এগুলো সহ্য করার মেয়ে আমি নই। তাই হাঁটার বেশিরভাগ সময়ই এই হায়নাগুলোর সঙ্গে আমি কোমরে ওড়না গুঁজে ঝগড়া করতে থাকি এবং সেটা একা একাই করি। দর্শকরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা নেন আর বিনোদিত হন। যেহেতু আমি প্রতিদিন একই এলাকায় হাঁটতে যাই তাই এদের সঙ্গে আমার প্রতিদিনই দেখা হয়। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার দিনকে দিন নিজের প্রতিভাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন, আগের দিন তিনি যা করেন আজ তার থেকে বেশিই করেন। নিচের ছবির এই হারামজাদা হাতিরঝিল প্রভাতী সংঘ নামের একটা দলে ব্যায়াম করেন। এই দলটি হাতিরঝিলের রামপুরা হয়ে মগবাজারের দিকে যেতে ব্রিজটার নিচের জায়গায় থাকে। এই লোক এমন একটা জায়গায় দাঁড়ায় যেখান থেকে অনেকটা সময় হাঁটতে থাকা আমাকে দেখা যায়। এই পুরোটা সময় অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে তার কর্মকা- চালায়। প্রথমেই এই লোক আমার দিকে ঘুরে যায়, মুখে কুৎসিত একটা হাসি (যাকে বলে পিত্তিজ্বলা নোংরা হাসি) ঝুলিয়ে রাখে, চোখে ইশারাপূর্ণ দৃষ্টি দিয়ে যতটা সময় আমাকে দেখা যায় দেখতে থাকে এবং ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে থাকে। প্রথম দু’দিন আমি এই লোককে মৌখিকভাবে বারণ করেছি, উনি যেন এমন না করেন কিন্তু এতে তার উৎসাহ আরও বেড়ে গেছে। এরপর থেকে এমন জায়গায় দাঁড়াতে শুরু করল যাতে আমাকে দেখার জন্য আর কষ্ট করে ঘুরতে না হয়। এর আশপাশে যারা দাঁড়ায় তারাও খেয়াল করেছে এই লোকের কা-। তবে কিছু তো বলেইনি বরং আমার দিকে শাসানীর দৃষ্টিতে তাকিয়েছে। এই লোক হয়ত কোন প্রতিষ্ঠানে কোন একটা পদে কর্মরত আছে, হয়ত কোন তরুণীর বাবা, কোন নারীর জীবনসঙ্গী- আমাদের সমাজ হয়ত তাকে সম্মানের চোখেই দেখে, যা মোটেই তার প্রাপ্য নয়। আমি চাই এই লোকের শাস্তি হোক। কিন্তু আমাদের দেশের প্রচলিত পুলিশ প্রশাসনে যেখানে ধর্ষণের মতো অপরাধকেও কয়েকটা ছেলের দুষ্টামি বলে গণ্য হয় সেখানে এত ছোট্ট ব্যাপারে তাদের বিরক্ত করার জন্য আমাকেই হয়ত উল্টো জেলে পুরে দেবে। কিন্তু আমার ঘুম কেড়ে নেয়া প্রতিদিনের এই ঘটন্-া আমি আমার সঙ্গে এবং আমার আশপাশের কারও সঙ্গেই ঘটতে দেব না। আমি জানি না এই ছবি ঐলোক পর্যন্ত পৌঁছাবে কিনা তারপরও কিছু না করার চেয়ে এই বদমাইশের ছবি সবার সঙ্গে শেয়ার করাই আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। উল্লেখ্য, আমাকে মোবাইলে ছবি তুলতে দেখেই এই লোক আর ভুলেও আমার দিকে তাকায়নি, একমনে ব্যায়াম করেছে... প্রাণের খেলা প্রাণের খেলা নামে গানের নিয়মিত আসরের সূচনা করেছিল বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আট বছর আগে। বেয়াল্লিশটি আসর বসেছিল পাঁচ বছরে। তারপর তিন বছর বিরতি। আবার গত সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে প্রাণের খেলা। কবি নজরুলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নিবেদিত হয়েছিল এ আসর। দুই প্রজন্মের দুই গুণী নজরুল সংগীতশিল্পী ইয়াকুব আলী খান ও শারমিন সাথী ইসলাম (ময়না) সঙ্গীত পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। সেদিন গান গাওয়ার মাঝে ইয়াকুব আলী খান সমঝদার দর্শকদের প্রশংসাও করলেন। যথেষ্ট জনপ্রিয় এ শিল্পীর কাছে গান শিখেছেন এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কম নয়। সেদিন শ্রোতারা তাঁকে ছাড়তেই চাইছিলেন না। টিভিতে রেকর্ডিং রয়েছে বলে শ্রোতাদের সব অনুরোধ রাখা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আর শারমিনের ভেতর কিছুটা অতৃপ্তি কাজ করছিল সেদিন কণ্ঠ সম্পূর্ণ সুস্থ না থাকায়। শিল্পী সম্পর্কে ওয়াহিদুল হক একবার মন্তব্য করেছিলেন- ‘এই শিল্পী আমার শোনা মতে বিরল শিল্পীর একজন যে স্বরের মধ্যবিন্দুকে সুরে বিদ্ধ করে গানের ভেলা ভাসায়।’ এখন থেকে প্রাণ-স্পর্শী প্রাণের খেলাটি নিয়মিত হোক, এই কামনা। ০১ জুন ২০১৫ [email protected]
×