ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১ জুন ২০১৫

গাজীপুরে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর, ৩১ মে ॥ গাজীপুরের শ্রীপুরে রবিবার দুপুরে এক পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা চেষ্টার পরও রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে ঢাকা, জয়দেবপুর, শ্রীপুর এবং ময়মনসিংহের ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের ১৪ ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিল। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস সূত্র ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, রবিবার দুপুরে খাবারের বিরতির সময় শ্রীপুরের বেতজুরী এলাকার ডিগনিটি টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড কারখানায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় খাবারের বিরতি থাকায় প্রায় সকল শ্রমিক ও কর্মকর্তারা কারখানা ভবনের বাইরে ছিলেন। এ কারখানায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করে। কারখানায় বিভিন্ন ধাপে সুতা থেকে ‘টি শার্ট’ তৈরি করা হয়। দুপুর পৌনে দুইটার দিকে স্টিলের কাঠামোর ওপর নির্মিত বিশাল আকৃতির সাত তলা বিশিষ্ট ওই ভবনের তৃতীয় তলার গোডাউনে আগুনের সূত্রাপাত হয় এবং পুরো ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভবনের দক্ষিণ পাশের জানালা দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখে কারখানার কর্মচারীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা কারখানার সাত তলা ওই ভবনের পঞ্চম তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। খবর পেয়ে ঢাকা, জয়দেবপুর, শ্রীপুর, এবং ময়মনসিংহের ভালুকাসহ ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশনের ১৪ ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পরও সন্ধ্যা সোয়া সাতটা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় আগুন ভবনের ওপরের তলায়ও ছড়িয়ে পড়ে। স্টিলের ফ্রেমের ভবন হওয়ায় ওপরের তলাগুলোতে পানি আটকে রাখা যাচ্ছে না। কারখানা ভবনে পর্যাপ্ত দরজা জানালা না থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে ভবনের ভিতরে ঠিকমতো পানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হচ্ছে। আগুনের উত্তাপে ভবনের স্টিলের ফ্রেম দুর্বল হয়ে পড়ে। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে না এলে স্টিলের ফ্রেম দুর্বল হয়ে যে কোন সময় ভবনটি ধসে পড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আশঙ্কা করছেন। কারখানার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক নাজমুন্নাহার কেমু জানান, আগুন এখনও জ্বলছে। আগুনে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান লিটন জানান, স্টিলের ফ্রেমের ভবন হওয়ায় উপরের তলাগুলোতে যেখানে আগুন রয়েছে সেখানে পানি আটকে রাখা যাচ্ছে না। সরবরাহ করা পানি গড়িয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছে। আগুনের খবর পেয়ে প্রথমে শ্রীপুরের মাওনা ও গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। পরে গাজীপুর, টঙ্গী, ভালুকা ও সাভার ইপিজেডসহ মোট ১৪ ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একযোগে কাজ করছে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
×