ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পালমার কিউজাই ত্রিফলা, বাড়ির আঙিনায় আম চাষ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১ জুন ২০১৫

পালমার কিউজাই ত্রিফলা, বাড়ির আঙিনায় আম চাষ

মোঃ খলিলুর রহমান ॥ পালমার, কিউজাই, ত্রিফলা ও বারোমাসিসহ বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছের বাগান করে সফল হয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জের আহসান উল্লাহ সবুজ ও মোঃ আমির হোসেন। তারা শখের বশেই বাড়ির আঙিনায় লাগিয়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছ। তাতে তারা ভাল সুফলও পেয়েছেন। তাদের গাছে থোকায় থোকায় ঝুলতে দেখা গেছে লাল, বেগুনি ও সবুজ রঙের আম। তাতে বাড়ির সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই তাদের চাষ করা আম দেখতেও ছুটে আসছেন। তাদের দেখে অনেকেই আমগাছ লাগানোর উৎসাহ নিয়ে বাড়িতে ফিরে নতুন করে গড়ে তুলছেন আমগাছের বাগানও। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়ার বাসিন্দা আহসান উল্লাহ সবুজ ও মোঃ আমির হোসেন। আহসান উল্লাহ সবুজ (৪৫) একজন ব্যবসায়ী। ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৃক্ষমেলা থেকে চারা কিনে এনে তিনি তাদের বাড়ির আঙিনায় শুরু করেন আম চাষ। তার বাড়িতে এখন পালমার, কিউজাই, ত্রিফলা, বারোমাসি ও পুনাইসহ বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছ রয়েছে। বারো মাসেই তাদের বাড়িতে আম চাষ হয়। এ বছর সবুজের বাড়িতে পালমার ও কিউজাই প্রজাতির আমগাছে ফলন হয়েছে। তার গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লাল, বেগুনী ও সবুজ রঙের আম। সবুজ জানান, পালমার ও কিউজাই আমের চারা গত বছর ঢাকার বৃক্ষমেলা থেকে মাত্র ৬০০ টাকায় কিনে এনেছেন। তাতে এবার ভাল ফলন হয়েছে। পালমার প্রজাতির একটি আমের ওজন এক কেজিও হয়েছে। আমটি দেখতে গোলাকৃতি। উপরের অংশ লাল, বেগুনি। নিচের অংশ সবুজ। অন্যদিকে কিউজাই প্রজাতির আমটি লম্বাটে। খেতে কাঁচা মিষ্টি। ওজনে এক কেজির উপরেও হচ্ছে। আমগুলো খেতে খুব মিষ্টি। সবুজ জানান, মাটিসহ ড্রামে করে একটি পালমার কিংবা কিউজাই আমগাছের বড় আকৃতির চারা ৩০ হাজার টাকাও বিক্রি করা হচ্ছে। বাড়ির ছাদেও এ ধরনের আম গাছের বাগান করা যায় বলে তিনি জানান। সবুজ জানান, নিজের হাতে ফলানো আম নিরাপদ। ফরমালিনমুক্ত। তাই মনের তৃপ্তি নিয়ে আমগুলো খেতে ভালই লাগে। অপরদিকে একই এলাকার বাসিন্দা মরহুম বাদশা মিয়ার পুত্র মোঃ আমির হোসেন (৪৪) একজন ব্যবসায়ী। আমির হোসেন জানান, তিনিই সর্বপ্রথম এ গ্রামে নতুন প্রজাতির আমগাছের চারা এনে বাড়ির আঙিনায় লাগিয়েছেন। তিনি তাতে ভাল সুফলও পেয়েছেন। তার বাড়িতে বিভিন্ন উন্নত প্রজাতির আম চারার কলমও (অঙ্কুর) সৃষ্টি করেছেন। তার বাড়িতেও পালমার, কিউজাই, ত্রিফলা, বারোমাসিসহ নানা প্রজাতির আমগাছ রয়েছে। তিনি জানান, বারো মাসেই তার বাড়িতে আমের ফলন হয়। আমির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একই গাছের ডালের এক পাশে পূর্ণাঙ্গ আম, অন্য পাশে আমের মুকুল ঝুলছে। তিনি বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছ লাগিয়ে চারদিকে বেশ সুনামও কুড়িয়েছেন। পেয়েছেন পুরস্কারও। আমির হোসেন জানান, তিনি ২০১১ সালে বারোমাসি আম ফলানোর জন্য নারায়ণগঞ্জের কৃষি বিভাগ থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জের জিয়া হলে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বারো মাসে আম ফলনের জন্য তাকে দেয়া হয় সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট। এতে তার আরও উৎসাহ বেড়ে যায়। এখন তিনি অন্যকেও আমগাছ লাগানোর জন্য উৎসাহিত করছেন। তিনি মিজমিজিসহ আশপাশের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়েও বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছ লাগানোর সহায়তা করছেন। তিনি জানান, কাছ থেকে লোকজন বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছের অঙ্কুর করা চারাও নিয়ে যাচ্ছেন। আমির হোসেন তার বাড়িতে আমের চারার অঙ্কুর সৃষ্টি করে বিনা পয়সায় তাদের আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতেও পাঠাচ্ছেন। এভাবে তিনি পালমার, কিউজাই, ত্রিফলা ও বারোমাসিসহ বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছের চারা ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
×