ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানবপাচারকারীদের অবৈধ সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করছে দুদক

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১ জুন ২০১৫

মানবপাচারকারীদের অবৈধ সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করছে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানবপাচারের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রে তথ্য সংগ্রহ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়াও মানবপাচারকারীরা অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখবে সংস্থাটি। শিগগিরই এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করবে। রবিবার দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ও গবেষণা) ড. মোঃ শামসুল আরেফিন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। মানবপাচারকারীদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দুদকের মহাপরিচালক বলেন, মানবপাচারকারীদের অবৈধ সম্পদের বিষয়টি কমিশনের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রসঙ্গত, অবৈধ সম্পদ ও অর্থপাচার দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ। মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে দুদকের তফসিলভুক্ত এ দুই অপরাধের অভিযোগই রয়েছে। বর্তমানে বড় দুর্নীতির অনুসন্ধান ও তদন্তে দুদকের ধীরগতির বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. শামসুল আরেফিন জানান, দুদক চাইলে যেকোনও বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে না। যেটা দুদকের তফসিলভুক্ত সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারে। প্রমাণের বাইরে দুদকের ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। হলমার্ক ও ডেসটিনির দুর্নীতির তদন্তের বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে দুদকের মহাপরিচালক বলেন, মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনির বিরুদ্ধে চার হাজার ১১৯ কোটি টাকা দুর্নীতির দুই মামলায় ইতোমধ্যে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এমডি রফিকুল আমীনসহ অনেকেই কারাগারে রয়েছেন। অন্যদিকে হলমার্কের ফান্ডেড অংশের বিষয়ে তিনি বলেন, এই দুর্নীতির ফান্ডেড এক হাজার ৯৪১ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ৩৮টি মামলা হয়েছে। অন্যদিকে নন-ফান্ডেড এক হাজার ৭১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অনুসন্ধান নথিভুক্ত হলেও এ সংক্রান্ত সোনালী ব্যাংকের ২৮ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদেনের ভিত্তিতে দুদক পুনরায় সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মুসা বিন শমসেরের সম্পদের অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক বলেন, মুসার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি করা হয়েছে। তিনি দুদকের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। তাকে আগামী ৭ জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। দুদকের মামলায় আসামি খালাসের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে মামলা আদালতে যায়। তবে মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণে দুর্বলতা থাকার কারণে অনেক সময় আসামি খালাস পায়। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তে কোন দুর্বলতা রয়েছে এমন পর্যবেক্ষণ আদালত থেকে পাওয়া যায়নি। এ সময় দুদকের পরিচালক নূর আহমেদ বলেন, গণমাধ্যম থেকে আমরা মানবপাচারকারীদের বিষয়ে তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশনের আইনী ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দুদকের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে জানানো হয়, এ সময়ের মধ্যে দুদকে অভিযোগ এসেছে দুই হাজার ৭৯৮টি। এসব অভিযোগ থেকে ২৩২টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দুদক ১২৬টি মামলার অনুমোদন দিয়েছে। আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে ২১৬টি মামলার। সম্মেলনে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্যও উপস্থিত ছিলেন।
×