ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

গারো তরুণী ধর্ষণ

কিছু দৃশ্য দুই লম্পট ভিডিও করার পরিকল্পনা করেছিল

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৩১ মে ২০১৫

কিছু দৃশ্য দুই লম্পট ভিডিও করার পরিকল্পনা করেছিল

স্টাফ রিপোর্টার। মাইক্রোবাসে গারো তরুণীকে ধর্ষণ করার কিছু দৃশ্য দুই লম্পট ভিডিও করার পরিকল্পনা করেছিল। যাতে ওই ভিডিও দেখিয়ে পরবর্তীতে মেয়েটিকে তাদের কব্জায় জিম্মি রেখে বার বার ভোগ করতে পারে তারা। ব্ল্যাকমেইল করার স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে তুষার তার বন্ধুদের সঙ্গে এমন পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছিল দুদিন আগে। কিন্তু ঘটনার সময় তারা এতটাই ভীত সন্ত্রস্ত ও অস্থির ছিল- যে সেটা তারা ভুলে যায়। দশদিন রিমান্ডে থাকা দুই ধর্ষক তুষার ও লাভলুর কাছ থেকে এ ধরনের তথ্যই জানতে পারে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখন রাজধানীর ভাটারা থানায় রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, গারো মেয়েটিকে ধর্ষণ করার পরিকল্পনা ছিল প্রথম দেখার পর দিন থেকেই। একটি ভাল চাকরির প্রলোভনে মেয়েটি প্রলুব্ধ হবার পর মুহূর্ত থেকেই তুষার তার বন্ধু ফিরোজ ও লাভলুর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় তাদের মাথায় বিভিন্ন চিন্তার উদ্রেক হয়। তুষার এ সময় তার মনের খায়েশ স্থায়ীভাবে পূরণ করার জন্য মেয়েটিকে ধর্ষণের চিত্র মোবাইল ফোনে ভিডিও করার ইচ্ছে প্রকাশ করে। এ ভিডিও ফাঁস করে দেবার হুমকিতে মেয়েটিকে বার বার ব্যবহার করার মতো পরিকল্পনাকে গুড আইডিয়া হিসেবে মতামত প্রকাশ করে বাকি বন্ধুরা। কারণ অবাধ তথ্য প্রযুক্তির যুগে এ ধরনের ব্ল্যাকমেইলই এখন সব চেয়ে কার্যকর ও মোক্ষম বলেও তাদের কাছে বিবেচিত হয়। জানা যায়, ঘটনার রাতে মেয়েটিকে মাইক্রোবাসে তোলার সময়ও তার মাথায় এমন চিন্তা ছিল। কিন্তু তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তোলার পর সব এলোমেলো হয়ে যায়। চরম ভয়ভীতি ও অস্থিরতায় পড়ে তারা সেই পরিকল্পার কথা ভুলে যায়। এ দিকে দশদিন রিমান্ডের প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাটারা থানার পরিদর্শক মোঃ সাজ্জাদ হোসেন। তিনি জানান, সবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। এতে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে কতজন সেই রাতে মাইক্রোবাসে ছিলেন সেটা তিনি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ না করা পর্যন্ত এ বিষয়ে এখনও সুনিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না বলে জানান। উল্লেখ্য যমুনা ফিউচার পার্কের স্মার্টেক্স নামের একটি ফ্যাশন শপে কর্মরত ছিলেন ওই তরুণী। গত ২১ মে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার জন্য কুড়িল বিশ্বরোডের পশ্চিম পাশে সিনহা সিএনজি পাম্পের পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এ সময় তার পূর্ব পরিচিত যুবক তুষার তাকে উত্তরায় লিফট দেবার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে জোর করেই মাইক্রোতে তুলে নেয় ওরা। তারপর চলন্ত গাড়িতেই তারা তুষার ও লাভলু দুজনেই পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটি বাসায় গিয়ে তাকে ৫ যুবক ধর্ষণ করে বলে জানায়। এ ঘটনায় পর পরই কয়েকটি থানায় গিয়ে মামলা করার জন্য ধর্না দেন। কিন্তু পুলিশ তার মামলা নেয়নি। পরে যখন মাইক্রোবাসে পাঁচ যুবক থাকার কথা বলেন তখন ভাটারা থানা মামলা নেয়। এ ঘটনায় তোলপাড় চলায় হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেন। রুলে পুলিশের অবহেলার কৈফিয়ত চাওয়ার পাশাপাশি মেয়েটিকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়। এর পরদিনই র‌্যাব তুষার ও লাভলুকে আটক করে ভাটারা থানায় হস্তান্তর করে। গারো মেয়েটি এখনও তেজগাঁওয়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের হেফাজতে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা এখন ভাল।
×