ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফের লাঠিপেটা কালচারে ফিরছে চাঁপাইয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২৯ মে ২০১৫

ফের লাঠিপেটা কালচারে ফিরছে চাঁপাইয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে আবার ফিরে আসছে লাঠি পেটা। শিক্ষার্থীদের চাবকে শিক্ষা দানের পুরান কালচার আবার ফিরে এসেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। যদিও বর্তমান সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ শিক্ষা অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসন এই ব্যবস্থাকে অনুৎসাহিত ও বিধিনিষেধ আরোপ করে নির্দেশাবলী পাঠিয়ে রেখেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে। কিন্তু শিক্ষকরা এই বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে অফিস থেকে ক্লাসে যাবার সময় চক ডাস্টারের সঙ্গে একখানা পাকা শক্ত লাঠি নিয়ে যেতে ভুলছে না। শিক্ষার্থীদের লাঠি পেটানোর কালচার চালু হয়েছে প্রাথমিক থেকে শুরু করে মাধ্যমিক হয়ে কলেজ পর্যন্ত। এর মধ্যে বাদ পড়েনি আলিয়া মাদ্রাসা, কওমী মাদ্রাসা ও এবতেদিয়াও। জেলার প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পেটানো সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাঠি পেটানোর মাত্রা অনেক বেশি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সব মিলিয়ে আট শ’ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে সরাসরি সরকার নিয়ন্ত্রিত ৬৯৭টি স্কুল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভাসহ গ্রামগঞ্জের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখার সময় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পেটানোর দৃশ্য নজরে এসেছে। অভিযোগ, পড়া করে না আনা কিংবা ক্লাসে দুষ্টমির অজুহাত দেখিয়ে বেধড়ক পেটানোর নজির প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এই নিয়ে একাধিক অভিভাবক প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে শিক্ষকদের ভৎর্সনা ও শিষ্টাচার বহির্ভূত লাঞ্ছিত করার মতো কাজও করেছে। জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তাদের গোচরীভূত হলেও নানা কারণে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক স্থানীয় ও এলাকার মাতব্বর হওয়ার কারণে তারা প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে শিক্ষার্থী পেটানোর মতো গর্হিত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও লাঠিপেটার শিকার হয়ে থাকে শিক্ষকদের কাছে কোচিং না করলে। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি সরকারী বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস করছে কিনা এ ব্যাপারে শিক্ষকদের তাগিদ বা মাথা ব্যথা নেই। শিক্ষার্থীরা তার কাছে নিয়মিত কোচিং করছে কিনা সেটার প্রতি বিশেষ নজরদারি এসব শিক্ষকদের। এর পাশাপাশি জেলার ৩২টি কওমী, ১৪৬টি আলিয়া ও ৩২টি এবতেদিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনা বা ক্লাসের বাইরে লাঠিপেটা করে শারীরিক নির্যাতন চালানো সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। একই কায়দায় ক্লাসে লাঠিপেটা করে অসুস্থ করার নজির ভূরিভূরি।
×