ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতির অভিযোগে ফিফার শীর্ষ কর্মকর্তারা আটক হওয়ার পর মন্তব্য কিংবদন্তি ম্যারাডোনার

‘ফিফায় কোন স্বচ্ছতা নেই, আমার কথাই ঠিক’

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৯ মে ২০১৫

‘ফিফায় কোন স্বচ্ছতা নেই, আমার কথাই ঠিক’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিফার প্রকাশ্য সমালোচক হিসেবে দিয়াগো ম্যারাডোনার নাম চলে আসে সর্বাগ্রে। আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তি হরহামেশাই সমালোচনা করেন ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার। অনেক সময় তার কথাতে খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয় না! কিন্তু বুধবার ফিফায় দুর্নীতি কেলেঙ্কারির পর ম্যারাডোনা বলেছেন, আমার সব অভিযোগ সত্য। ফিফায় কোন স্বচ্ছতা নেই। তার মতে, এবার ফিফার মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। আজ সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার সদর দফতরে ৬৫তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যোগ দিতে যাওয়া নয় শীর্ষ কর্মকর্তাকে আটক করেছে সুইস পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রের বিচারকের রায়ে ১৪ অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়। প্রায় দুই যুগ ধরে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অনুরোধে জুরিখে অনুষ্ঠেয় ফিফার কংগ্রেসের আগে এই শীর্ষ কর্মকর্তাদের আটক করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। এরপরই ফের মুখ খোলেন ম্যারাডোনা। বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক বলেন, দুর্নীতির দায়ে ফিফা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে, ফুটবলের গবর্নিং বডির বিরুদ্ধে আমার অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ যৌক্তিক। অভিযুক্তরা ঘুষ হিসেবে যে অর্থ নিয়েছে তা আফ্রিকান শিশুদের জন্য অনুশীলন ক্যাম্প করার পেছনে বিনিয়োগ করা উচিত। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই তারকা আরও বলেন, মানুষ বলত আমি উন্মাদের মতো কথা বলছি। কিন্তু এফবিআই সত্য উদ্ঘাটন করেছে। এর মধ্য দিয়ে আমেরিকানরা অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে। ফিফার অভ্যন্তরে কি ঘটছে সবাই এখন তা টের পাচ্ছে। বর্তমানে ফুটবল বলতে কিছু নেই। কোন স্বচ্ছতা নেই। সবাইকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সেপ ব্লাটার ফিফার সর্বোচ্চ পদটি আঁকড়ে ধরে আছেন। এমন একজনকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত করতে হবে যিনি বিশ্ব ফুটবলকে দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে নিতে পারবেন। এসব কথা বলার দিনকয়েক আগেও ব্লাটারের সমালোচনা করেন ম্যারাডোনা। বর্তমান ফিফা প্রধানকে স্বৈরাচার হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। পঞ্চমবারের মতো ফিফা সভাপতির পদে তার লড়াই করাটাকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘হাস্যকর’ বলেও মন্তব্য করেন ম্যারাডোনা। ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো ফিফার শীর্ষপদে নির্বাচিত হন ব্লাটার। এরপর এককভাবেই রাজত্ব করছেন সুইজারল্যান্ডের এই ফুটবল সংগঠক। টানা পঞ্চমবারের মতো আবারও ফিফা সভাপতির পদে বসতে যাচ্ছেন তিনি। সভাপতি পদে থাকাকালে অনেকবারই সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্লাটার। আর সেই ব্লাটারই বিশ্বফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার পঞ্চমবারের মতো সভাপতি পদে বসতে যাচ্ছেনÑ এটা কিছুতেই মানতে পারছেন না আর্জেন্টাইন ফুটবলের সাবেক তারকা ম্যারাডোনা। তাই তো তিনি বলেছিলেন, আমাদের মতো যারা ফুটবল নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা করেন তারা জানেন, ব্লাটারের অধীনে থেকে ফিফা একটি দুর্নীতিগ্রস্ত, অমর্যাদাকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। যখন আমি দেখলাম কেউই তাকে প্রকাশ্য সমর্থন জানাচ্ছে না, অনেকেই বলছে যে তিনি পঞ্চমবারের মতো এই পদে বসতে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন? তার পুনর্নির্বাচিত হওয়াটা অযৌক্তিক এবং অদ্ভুত। কেউই মনে করছে না যে, সে এই পদের জন্য যোগ্য এবং জয়টা তার প্রাপ্য। আমরা দীর্ঘ সময়ের জন্য একজন একনায়ক ও স্বৈরাচারীকে পেয়েছি। আমি ব্লাটারকে বরফ আচ্ছাদিত মানুষ হিসেবে ডাকতে পারি। কেননা অনুপ্রেরণা যোগানো বা প্রচ- আবেগ তৈরি করার মতো সামর্থ্য তার নেই, অথচ এটিই ফুটবলের আসল প্রাণ। আন্তর্জাতিক ফুটবলের দশাই যদি এমন হয় তবে আমরা অনেক খারাপ অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি।
×