ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হ্রাসে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৯ মে ২০১৫

মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হ্রাসে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রসবজনিত কারণে মাতৃ মৃত্যুহার শূন্যের কোঠায় আনতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হ্রাসে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এখনও রেকর্ড সংখ্যক নারী গর্ভধারণ ও প্রসবজনিত জটিলতায় মারা যায়। সচেতনতার অভাব ও বাল্যবিবাহ এর পেছনে ভূমিকা রাখছে। বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে মা ও শিশু স্বাস্থসেবার সুব্যবস্থা করেছে সরকার। ওই সকল সেবাকেন্দ্রে প্রসূতি মায়ের সেবা গ্রহণ করা দরকার। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ নিতে হবে। সর্বোপরি বাসাবাড়িতে নয়, নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে প্রশিক্ষিত ধাত্রী দ্বারা সন্তান প্রসব করালে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঝুঁকি বহুলাংশে হ্রাস পায়। প্রতিটি জন্ম হোক পরিকল্পিত, প্রতিটি প্রসব হোক নিশ্চিত। বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ‘গর্ভধারণের সময় একটি মাও মৃত্যুবরণ করবে না, এমন বিষয়কে সামনে রেখে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে আয়োজিত ‘মায়ের কথা’ শীর্ষক মেলার উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা প্রত্যকের কণ্ঠস্বর থেকে বের হয়ে আসে একটি কিশোরীর বিয়ে ১৮ বছরের আগে দেয়া হবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সব মায়ের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে নীল আকাশে নীল বেলুন উড়িয়ে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সমাজকল্যাণমন্ত্রী মহসীন আলী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল হাসান, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম চ্যানেল আই ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নুর-উন- নবী, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ নূর হোসেন তালুকদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক দীন মোঃ নূরুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ‘কিশোরীর সুস্থ বার্তা’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। নিরাপদ মা এবং নিরাপদ শিশুর জীবন নিশ্চিত করার সব দরকারী তথ্য আছে বইটিতে। অনুষ্ঠানে বইটিকে পাঠ্য কারিকুলামে যুক্ত করার আহ্বান জানান স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী প্রধান এবং উপস্থাপক ফারজানা ব্রাউনিয়া। এ আয়োজনের সহযোগিতায় ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পরিবার ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, ইনসেপ্টা, ওয়েল ফুড, ওয়াটার এইড, পিপিডি, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মা ও শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এ জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য খাতে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। শুধু আমাদের একার পক্ষে শত ভাগ সফল হওয়া সম্ভব নয়। সমন্বিতভাবে কাজ করলে এ ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। ২০১৫ সাল নাগাদ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কার্যক্রমে মাতৃমৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ এ কমিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সভ্যতার অগ্রদূত নারী। সভ্যতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে মায়েরা। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট সকলের মহান দায়িত্ব, যা কোন অবস্থাতেই অবহেলা বা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার রোধে ইতোমধ্যে অনেক সফলতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। সরকারী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সু-ব্যবস্থা রয়েছে। অন্য বক্তারা বলেন, মায়ের বয়স, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং গর্ভকালীন খাবারের সঙ্গে মা ও শিশুমৃত্যুর হারের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। সমাজে গর্ভবতী মায়ের অপরিমিত খাবার একটা সাধারণ ব্যাপার। খাদ্যের বেলায় আর্থিক সঙ্গতি যতটা দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী কুসংস্কার অর্থাৎ শিক্ষার অভাব।
×